গাজা উপত্যকায় পৃথক ইসরায়েলি হামলায় দুই গণমাধ্যম কর্মী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন আলজাজিরার সাংবাদিক হোসাম শাবাত এবং অপরজন প্যালেস্টাইন টুডের সাংবাদিক মোহাম্মদ মনসুর। প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রতিনিধিদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
সোমবার (২৫ মার্চ) উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ার পূর্ব অংশে আলজাজিরার সাংবাদিক হোসাম শাবাতকে লক্ষ্য করে ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তার গাড়িকে লক্ষ্যবস্তু করে এই হামলা চালানো হয়। আলজাজিরার আরেক সাংবাদিক তারেক আবু আযজুম জানিয়েছেন, ২৩ বছর বয়সী শাবাত এর আগেও ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছিলেন। কিন্তু আহত অবস্থাতেও তিনি গাজায় সংবাদ সংগ্রহ অব্যাহত রেখেছিলেন।
অপরদিকে, একই দিনে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় প্যালেস্টাইন টুডের সাংবাদিক মোহাম্মদ মনসুর নিহত হন। হামলার সময় তিনি তার বাড়িতে স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছিলেন। কোনো পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই চালানো এই হামলায় তিনি নিহত হন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, এই দুই সাংবাদিকের হত্যার ফলে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত গণমাধ্যম কর্মীর সংখ্যা ২০৮ জনে দাঁড়িয়েছে। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি দখলদার বাহিনী ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করে হত্যা অব্যাহত রেখেছে। সাংবাদিক হত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রেস অ্যাডভোকেসি গোষ্ঠীগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে গাজার মিডিয়া অফিস।
এছাড়া, গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েল এবং তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র সাংবাদিক হত্যার প্রধান দায়ী। সেইসাথে যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সের মতো দেশগুলোও এই জঘন্য অপরাধে জড়িত।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় কাজ করা সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) শাবাত ও মনসুর হত্যার নিন্দা জানিয়েছে। তারা এ ঘটনায় স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে। সিপিজের প্রধান নির্বাহী জোডি গিন্সবার্গ বলেন, “একজন সাংবাদিক ও বেসামরিক নাগরিককে ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করা যুদ্ধাপরাধ। ইসরায়েল সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করেছে বলে মনে হচ্ছে, যা যুদ্ধাপরাধের শামিল। সাংবাদিক ও বেসামরিক নাগরিকদের কখনোই হামলার লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।”