স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি ও অকৃষি খাতে উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যবস্থা উন্নীতকরণ এবং স্থানীয় পর্যায়ে দারিদ্র্য বিমোচনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করা। বাংলাদেশ সময়ের বিশেষ প্রতিনিধির সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে স্হানীয় সরকার সচিব মোঃ রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন,স্হানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় হলো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ৪৩টি মন্ত্রণালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হলো শহর ও নগরসমূহের ব্যবস্থাপনা, গ্রামীণ অঞ্চলের উন্নয়নে পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, সামাজিক ও সমবায় কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা প্রদান প্রভৃতি। মন্ত্রণালয়টি দুটি বিভাগ নিয়ে গঠিত।
স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, দপ্তর ও সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রকল্পসমূহের পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শনের নিমিত্তে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/দপ্তর/সংস্থা (জেলা পরিষদ, পৌরসভা , উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উন্নয়নমূলক প্রকল্পসমূহ প্রমাপ অনুযায়ী সরেজমিনে পরিদর্শন করে দ্রত সময়ে প্রতিবেদন প্রেরণ করার উদ্যোগ নিয়েছি। সিটি কর্পোরেশন, জেলা পরিষদ,উপজেলা পরিষদ,পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সাধারন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে দ্রুত দুর্নীতিমুক্ত সেবা পৌ্ছে দেয়ার লক্ষে স্হানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্ট আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার চৌকস নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় আমরা কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজকে আরও বেশি দ্রুততা এবং দক্ষতার সাথে সম্পন্ন করার উদ্যোগ নিয়েছি বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহারের মাধ্যমে। আমরা সকল ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে বর্তমান সরকারের নেয়া সকল প্রকল্প দূর্নীতিমুক্ত উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালন করার আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল কো-অপারেশন শাখা ডোমেস্টিক নেটওয়ার্ক কো-অর্ডিনেশন কমিটি (DNCC) এর সাচিবিক দায়িত্বসহ যাবতীয় কার্যাবলী সম্পাদন।
তথ্যপ্রযুক্তি (সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার) গবেষণা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বাস্তবায়ন এবং পর্যবেক্ষণ নিশ্চিতকরণে সহায়তা প্রদান।সিস্টেম ডিজাইন, উন্নয়ন এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে পরামর্শ প্রদান/সমন্বয় সাধন,অনলাইন প্ল্যাটফর্ম সম্পর্কিত কার্যাবলী,বিভাগের এপিএ/জিআরএস/এনআইএস/সিটিজেন চার্টার সংক্রান্ত অনলাইন কার্যক্রম এবং তথ্যের হালনাগাদকরণ।অ্যাপ্লিকেশন হোস্টিং সংক্রান্ত কার্যক্রম বাস্তবায়নে জাতীয় ডাটাসেন্টার/টায়ার ফোর ডাটা সেন্টারের সাথে সমন্বয় সাধন,ডিজিটাল এসিআর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কার্যক্রম,আইসিটি সম্পর্কিত অংশীজন/বেসরকারি সংস্থা (স্টেক হোল্ডার)-কে সহযোগিতা প্রদান।কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রদত্ত অন্যান্য কার্যাবলীর মধ্যে ডিজিটাল কো-অর্ডিনেশন শাখার মাধ্যমে আমাদের মন্ত্রনালয়,বিভাগ, বিভিন্ন অধিদপ্তর ও দপ্তরের ওয়েবসাইট উন্নয়ন, নিয়মিত আপডেট, ডেভেলপমেন্ট তথ্য,ই-নথি/ডিজিটাল নথি সিস্টেম বাস্তবায়ন এবং দাপ্তরিক অ্যাডমিন এর দায়িত্ব পালন,সফটওয়্যার সিস্টেমের ক্ষেত্রে ইন্টারঅপারেবিলিটি সংশ্লিষ্ট সমস্যা চিহ্নিত করা এবং তা সমাধান করা,ইন্টারঅপারেবিলিটি ফ্রেমওয়ার্ক ও মানউন্নয়ন এবং বাস্তবায়ন,ই-সেবার ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ এবং বাস্তবায়ন পদ্ধতি উদ্ভাবন,যুগোপযোগী প্রযুক্তি প্রয়োগ ও পরিচিতিসহ এ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম নিশ্চতকরণ এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশে প্রদত্ত অন্যান্য কার্যাবলী পরিচালনা করার লক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।
স্হানীয় সরকার সচিব আরো বলেন,পল্লী অঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ এবং হাট-বাজার ও গ্রোথ সেন্টার উন্নয়নের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতিকে গতিশীল করতে এলজিইডি যে অবদান রেখেছে তা আজ দৃশ্যমান।
দেশের ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধি অর্জনে এসব অবকাঠামোর অবদান অপরিসীম। প্রত্যন্ত পল্লীর মানুষ আজ সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটারের মধ্যে পাকা সড়ক ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে। মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে পল্লীর এসব অবকাঠামো ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি এলজিইডি শহর ও নগর অঞ্চলেও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। নগর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহকে (পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন) বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের কারিগরি সহায়তা প্রদান ও এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালন ব্যবস্থা ও দক্ষতা উন্নয়নেও এলজিইডি সম্পৃক্ত।দেশের কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতেও এলজিইডি বিশেষ ভূমিকা পালন করছে সারাদেশে ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে। এসব প্রকল্পে স্থানীয় অংশীজনদের অংশগ্রহণে প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন এবং পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণের ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
এলজিইডিতে জনমুখী অর্থাৎ বাস্তবসম্মত ও সময়োপযোগী প্রকল্প প্রণয়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন স্হানীয় সরকার সচিব। প্রকল্প প্রণয়নে জনসম্পৃক্ততা ও টেকসই উন্নয়নের প্রতি দৃষ্টি রাখতে হবে। নতুন আঙ্গিকে বিচক্ষণতার সাথে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে হবে, যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রকল্পকাজ সম্পাদন করা যায়।
আর এর জন্য প্রকল্প সঠিক সময়ে শেষ করতে হলে ২টি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে হবেঃ
১। সঠিকভাবে প্রকল্প প্রণয়ন ও ড্রইং-ডিজাইন প্রস্তুত করা
২। প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে মানি ডিভ্যালুয়েশন ও ঐ সময়কালীন বাজার মুল্য বিবেচনায় রেখে প্রকল্প বাজেট তৈরি করা।
কাজের গুণগত মান ঠিক রাখা। যে প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে, সেগুলোর গুণগত মান ঠিক রেখে নির্ধারিত সময়ে শেষ করা। তাহলে প্রকল্পগুলোর সুফল জনগণ পাবে।
এই জন্য এলজিইডির মনিটরিং সিস্টেম,কোয়ালিটি কন্ট্রোল, সার্বিক সাপোর্ট তথ্য প্রযুক্তি মনিটরিং অগ্রগতি ডিজিটাল পদ্ধতিতে হবে।সকল প্রকল্প ও প্রশাসনিক তথ্য আধুনিক করা হাল নাগাদ করা,সাম্প্রতিকতম তথ্য ইঃ সংযোজন করা আধুনিক রূপ দেওয়ার বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।সচিবালয়ে বসেই যেন আমরা ডিজিটাল পদ্ধতিতে সমগ্র বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকান্ড দেখতে পারি এবং কোথাও সমস্যা হলে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারি সেই লক্ষে দ্রুত দুর্নীতি মুক্ত উন্নয়ন পরিচালনা করার জন্য বর্তমান সরকার কাজ করে যাচ্ছে
hedsvg