ফিলিস্তিনের গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, গাজায় ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)-এর সামরিক তৎপরতা পুনরায় চালু করার বিষয়টিকে সম্পূর্ণ সমর্থন করেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের বাইরে সাংবাদিকদের লিভিট বলেন, “প্রেসিডেন্ট হামাসকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন- যদি তারা সমস্ত জিম্মিকে মুক্তি না দেয়, তাহলে তাদের নারকীয় মূল্য দিতে হবে। দুর্ভাগ্যবশত, হামাস জীবন নিয়ে খেলা খেলতে বেছে নিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “এই পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণরূপে হামাস দায়ী। যখন তারা ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর নৃশংস আক্রমণ চালায়, তখনই এ পরিস্থিতি নির্ধারিত হয়ে যায়। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করেছেন যে তিনি চান সমস্ত জিম্মি নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসুক। তাই ইসরায়েল ও আইডিএফ সাম্প্রতিক দিনগুলোতে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা ট্রাম্পের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।”
এদিকে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ ও উত্তরের বেইত লাহিয়ায় স্থল অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। মঙ্গলবার অস্ত্রবিরতি ভঙ্গের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৯০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ক্রমাগত বিমান হামলা ও স্থল অভিযানের কারণে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সেখানে ৪৯ হাজার ৬১৭ ফিলিস্তিনি নিহত ও ১ লাখ ১২ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছে। তবে গাজার সরকারি গণমাধ্যম অফিস জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো হাজারো মানুষ আটকা পড়ে আছে, যাদের বেশিরভাগেরই বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ১৩৯ ইসরায়েলি নিহত হয়েছিল এবং ২০০-এর বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়েছিল। বর্তমানে বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি এখনো হামাসের বন্দিদশায় রয়েছে। প্রথম দফায় যুদ্ধবিরতিতে গোষ্ঠীটি বেশ কয়েকবার জিম্মি মুক্তি স্থগিত করলে উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন নির্ধারিত সময়ে সব জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিশ্ব তাগিদ উপেক্ষা করে হামাস। ফলে দ্বিতীয় দফায় যুদ্ধবিরতির আলোচনায় ভাটা পড়ে এবং ইসরায়েল ফের অভিযানের নামে গাজায় নারকীয় তাণ্ডব শুরু করেছে।