গাজার ধ্বংসস্তূপের মধ্যে এবার নতুন স্লোগান শোনা যাচ্ছে—‘হামাস বের হও!’। ইসরায়েলের আগ্রাসনের পাশাপাশি এখন নিজেদের শাসকদের বিরুদ্ধেও ফিলিস্তিনিরা সরব হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ ১৭ মাসের যুদ্ধে ক্লান্ত ও বিপর্যস্ত মানুষজন হামাসের শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। গাজার উত্তরাঞ্চলে বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধের অবসান এবং হামাসের বিদায়ের দাবি তুলেছে।
হামাস ২০০৭ সাল থেকে গাজা শাসন করছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর তারা ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায়, যা এই যুদ্ধের সূত্রপাত করে। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল ব্যাপক হামলা চালায়, যেখানে ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে এবং গাজার প্রায় পুরো এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। একদিকে ইসরায়েলের সামরিক অভিযান, অন্যদিকে হামাসের শাসনে অতিষ্ঠ হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে সাধারণ মানুষ।
গত মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে, যা দ্রুত হাজারো মানুষের সমাগমে পরিণত হয়। বিক্ষোভকারীরা যুদ্ধবিরোধী স্লোগানের পাশাপাশি হামাসের শাসনের অবসানের দাবি জানায়। পরদিন গাজার শুজাইয়া এবং জাবালিয়াতেও একই ধরনের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
একজন বিক্ষোভকারী আবেদ রাদওয়ান বলেন, ‘আমাদের সন্তানরা মরছে, আমাদের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। আমরা এই যুদ্ধ চাই না, আমরা শান্তি চাই।’ আরেকজন বিক্ষোভকারী হামদান হাসান বলেন, ‘এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল যুদ্ধের বিরুদ্ধে, কিন্তু দ্রুত তা হামাসবিরোধী হয়ে ওঠে। কারণ ইসরায়েলকে আমরা সরাসরি কিছু করতে পারব না, কিন্তু হামাসের বিরুদ্ধে আমরা কথা বলতে পারি।’
হামাসের শীর্ষ নেতা বাসেম নাইম স্বীকার করেছেন, জনগণের যুদ্ধবিরোধী মনোভাব স্বাভাবিক। তবে তিনি এটিকে ‘সন্দেহজনক রাজনৈতিক চক্রান্ত’ বলে উল্লেখ করেছেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধের আগে হামাস গাজায় বিরোধীদের কঠোরভাবে দমন করত। কিন্তু এখন যুদ্ধের ধ্বংসযজ্ঞে তারা নিজেরাই দুর্বল হয়ে পড়েছে, তাই জনগণের ক্ষোভ দমন করাও তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।