মাধবদীর বাবুরহাটে বাসায় ঢুকে কিশোরীকে হত্যার বিষয়ে নরসিংদী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপার মো. এনায়েত হোসেন মান্নান আজ সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পিবিআই কার্যালয়ের হল রুমে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, ঘটনার দিন রাত অনুমান সাড়ে ১১টায় মোফাজ্জল হোসেন বাসায় ফিরে রুমের দরজা খুলা এবং ফ্লোরে তার মেয়ে সুমনা আক্তার তিথি (১৩) ও স্ত্রী আসমা আক্তারকে (৪৫) গুরুত্বর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখতে পায়।
মোফাজ্জল হোসেন ডাক-চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসে এবং লোকজনের সহায়তায় মেয়ে ও স্ত্রীকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। নরসিংদী সদর হাসপাতালের ডাক্তার মেয়েকে মৃত ঘোষণা করে এবং স্ত্রীকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাৎক্ষণিক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে।
মোফাজ্জল হোসেন এর ধারণা গত ২৭ জানুয়ারি রাত অনুমান ০৭টা থেকে রাত ১১টার মধ্যে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতিকারীরা তার বসত ঘরের ২য় তলায় থাকার রুমের ভিতরে প্রবেশ করে তার মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দ্বারা আঘাত করে হত্যা করে এবং স্ত্রী আসমাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। উক্ত ঘটনার বিষয়ে মোফাজ্জল হোসেন এর এজাহারের ভিত্তিতে নরসিংদী সদর থানায় মামলাটি রুজু হয়। নরসিংদী মডেল থানার মামলা নং-৪২।
এরই সূত্র ধরে নরসিংদী পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ তদন্ত শুরু করে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে কিশোরগঞ্জ জেলার তাড়াইল, নেত্রকোণা জেলার কেন্দুয়া, ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন থানা এলাকা, মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন থানা এলাকাসহ নরসিংদী ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে মামলার মূল মাস্টারমাইন্ড ফরিদপুরের মধুখালীর মো. ফরিদ হোসেন এর ছেলে মো. রমজান শেখ লিমন (২২) এবং তার আপন বড় ভাই হাসিবুর রহমান শান্তকে (৩১) ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারি থানাধীন দত্তেরকাঠি সাকিনস্থ জনৈক হাকিম মিয়া হাকিম মেলিটারির বাড়ী হতে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের তথ্যমতে নেত্রকোনার কেন্দুয়ার মো. ইনসান মিয়ার ছেলে মো. কাউছার মিয়া( ২০), নাটোরের বাগাতিপাড়ার মো. আব্দুল খালেক বাবলুর ছেলে মো. ইমন আলীকে (২১) মোবারক স্পিনিং মিল এর স্টাফ কোয়ার্টার্স হতে গ্রেফতার করা হয়।
উক্ত গ্রেফতারকৃত আসামীদেরকে মামলার ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করে।
ঘটনার দিন মোফাজ্জল হোসেন এর বসত ঘর হতে লুন্ঠিত নগদ ১০,০১,১০০/- (দশ লক্ষ এক হাজার একশত) টাকা, ৩টি এন্ড্রোয়েট মোবাইল সেট ও ২টি বাটন মোবাইল সেট, ১টি হাতুরি সহ হহত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করে পিবিআই পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামীরা মাধবদী ও আশপাশ এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতো।