কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের যানজট কমানো এবং শহীদ সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও হাওর অঞ্চলে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের লক্ষ্য নিয়ে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে প্রায় ৮ কিলোমিটার বাইপাস সড়কসহ অন্য আরো উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়, কিন্তু মূল কাজ শুরুর আগেই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। আবারো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়ছে।
জমি অধিগ্রহণের বিলম্ব হওয়ার কারণেই এমনটি হয়েছে বলে দাবি করেন সড়ক বিভাগ। অপরদিকে প্রতিদিনই বেড়ে চলা যানজটে নাকাল পৌর শহরের মানুষ।
হাওর অঞ্চলে অবস্থিত বিভিন্ন উপজেলায় যাতায়াতের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের মধ্য দিয়ে রাস্তা অতিক্রমের বিকল্প নেই। একইভাবে বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত মানুষকেও শহরের ভিতর দিয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাতায়াত করতে হয়। এর ফলে এমনিতেই সরু ও অতিরিক্ত যানবাহনে বিপর্যস্ত জেলা শহরের সড়কগুলোতে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্ট হয়। হাওরে পর্যটন মৌসুমে বাড়তি যানবাহনের চাপে আরো নাজুক হয়ে পড়ে। এ নিয়ে দীর্ঘদিনের ক্ষোভ রয়েছে জেলা সদরের মানুষের। বাইপাস না হওয়ায় ক্ষুদ্ধ জেলা শহরের বাসিন্দারা।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা জানিয়েছেন, নিত্যদিনের চলাফেরাসহ জরুরী প্রয়োজনে দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারায় সমস্যার কথা। শহরবাসীর দাবী, বাইপাস সড়কটি নির্মিত হলে শহরের যানজট কিছুটা হলেও কমে যেতো।
জেলা শহরে যানজট নিরসনে এবং হাওর অঞ্চল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নির্বিঘ্নে যাতায়াতের সুবিধার্থে ২০১৯ নভেম্বর মাসে ৭৩১ কোটি ৩১ লাখ টাকা ব্যায়ে একটি প্রকল্প একনেক বৈঠকে অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের আওতায় শহরের বাইরে দিয়ে সদর উপজেলার চৌদ্দশত এলাকা থেকে ছয়না এলাকা পর্যন্ত ৭.৮ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মাণ এবং হাওরের প্রবেশদ্বার চামড়া বন্দর পর্যন্ত আরো ২০ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়ন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু বাইপাস সড়ক নির্মাণের জন্য জমি অধিগ্রহণ ও মাটি ভরাটের কাজ করতেই ২০২৪ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের সময় পাড় হয়ে গেছে। এছাড়া খরচ হয়ে গেছে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকারও বেশি। এ বছর আবারো প্রকল্পর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বলে জানায় সড়ক বিভাগ।
বর্তমানে বাইপাস সড়কের কাজে ধীর গতি থাকায় এখান দিয়ে চলাচলকারীরা ক্ষুদ্ধ। সড়কটি চালু হলে তাদের দুর্ভোগ কমে আসতো। তেমনি ক্ষুদ্ধ বাইপাস নির্মাণে যাদের জমি অধিগ্রহণ হয়েছে সেই ভূমি মালিকরা। তাদের বক্তব্য, জমি অধিগ্রহণের কারণে ফসলাদি চাষের সুযোগ হারিয়ে আয় কমে গেছে। এছাড়া সড়কে সৃষ্ট ধূলার কারণে আশপাশের জমির ফসল ও মৎস্য খামারের ক্ষতি হচ্ছে।
স ও জ এর নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকে। আবারো এই বছরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ বিলম্বিত হওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। আশা করি দ্বিতীয় মেয়াদের (২০২৬ সালের জুন ৩০) নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্প কাজটি শেষ হয়ে যাবে।
বাইপাস সড়কটি নির্মাণ হলে কিশোরগঞ্জের হাওরের তিনটি উপজেলার সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার সুফল ভোগ করবে জনগণ।