২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা জানালো জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং দল।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের (ওএইচসিএইচআর) ১১৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনটি জেনেভা থেকে প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘হেভি ইউনিট’ মোতায়েনের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের দমন করতে চেয়েছিলেন। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিয়মিতভাবে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন এবং আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে কার্যক্রম তদারকি করতেন।
একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে জাতিসংঘ জানায়, শেখ হাসিনা প্রতিদিন বিক্ষোভ সম্পর্কে প্রতিবেদন পেতেন এবং ডিজিএফআই, এনএসআই ও পুলিশের বিশেষ শাখা সরাসরি তাকে রিপোর্ট দিত। ৪ আগস্ট জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা প্রধান ও সরকারের মন্ত্রীরা অংশ নেন। বৈঠকে ঢাকায় পদযাত্রা ঠেকাতে পুনরায় কারফিউ জারি এবং তা কার্যকর করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৫ আগস্ট সকালে ও রাতে বিজিবির মহাপরিচালককে পাঠানো দুটি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার তথ্যে আন্দোলনকারীদের ঢাকায় প্রবেশ ঠেকানোর জন্য বিজিবি, সেনাবাহিনী ও পুলিশকে যৌথভাবে মোতায়েন করার পরিকল্পনার কথা জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে, জাতিসংঘের তদন্ত দলের সঙ্গে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাকে জানানো হয় যে, সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী হচ্ছে না।
এ প্রতিবেদনটি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে সরকারের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করেছে।