অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, অধ্যাপক ইউনূস ইতোমধ্যে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ সেল এবং র্যাব-২ এর সিপিসি-৩ এর ভেতরের সেলগুলো পরিদর্শন করেছেন। তিনি এখন র্যাব সদর দপ্তরের টাস্কফোর্স ইন্টেলিজেন্স সেন্টারে যাচ্ছেন।
এর আগে, গত ৬ ফেব্রুয়ারি উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার আয়নাঘর পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। ১৯ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে একটি বৈঠক করেছে, যেখানে গুমের ঘটনায় তদন্তের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়। সেই বৈঠকের পরই, গুমের ঘটনায় জড়িত বিভিন্ন সেল পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
আয়নাঘরের বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনকালে ২০০৯ সাল থেকে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৬০৫ জনকে গোপনে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। অন্য একটি তথ্যে বলা হয়েছে, ২০১৪ থেকে ২০১৯ সালের জুলাই পর্যন্ত ৩৪৪ জন ব্যক্তি গুমের শিকার হয়েছেন, তাদের মধ্যে ৪০ জনকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে এবং ৬৬ জনকে সরকারি হেফাজতে গ্রেপ্তার অবস্থায় পাওয়া গেছে।
গুম হওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশই দীর্ঘদিন গুম থাকার পর ফিরে এসে তাদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাননি। ধারণা করা হয়, এসব মানুষদের গুম করে রাখা হয়েছে আয়নাঘরে, যেখানে অনেককে নির্যাতন ও অমানবিক অবস্থায় রাখা হতো। গুম হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে অধ্যাপক মোবাশার হাসান, সাবেক রাষ্ট্রদূত মারুফ জামান, ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ কুমার রায়, মাইকেল চাকমা এবং মীর আহমদ বিন কাসেমসহ অনেকেই ছিলেন।
এই গুমের অভিযোগ প্রথম প্রকাশ্যে আসে সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজের একটি প্রতিবেদন থেকে, যেখানে আয়নাঘর নামের বিশেষ স্থানের অস্তিত্ব উঠে আসে। পরে এসব গুম হওয়া ব্যক্তিরা ফিরে এসে তাদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন, যা থেকে বেরিয়ে আসে আয়নাঘরের ভয়াবহতা।