প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের ২৪ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ এখন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে চলে গেছে। এইচটিএসের প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি, যিনি আসাদ সরকারের পতনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে পরিচিত, তিনি সিরিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা করেছেন।
রোববার (৮ ডিসেম্বর), বিদ্রোহী গোষ্ঠী দামেস্কে প্রবেশ করার পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ অজানা গন্তব্যে রাজধানী ত্যাগ করেন।
২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ শুরু হলেও গত কয়েক বছরে রাশিয়া ও ইরানের সমর্থনে আসাদ সরকার পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছিল। তবে গত ১০ দিনের মধ্যে বাশারের ক্ষমতা একেবারে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি, যিনি আসলে আহমেদ হুসাইন আল-শারা নামে পরিচিত, ১৯৮২ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার ১৯৮৯ সালে সিরিয়ায় ফিরে দামেস্কের কাছাকাছি এলাকায় বসতি স্থাপন করে। ২০০৩ সালে তিনি ইরাকে পাড়ি দেন এবং আল-কায়েদায় যোগ দেন। ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাকে গ্রেপ্তার করে, কিন্তু ২০১১ সালের সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় তিনি মুক্তি পান। এরপর সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম ছিল আল-নুসরা ফ্রন্ট।
২০১৩ সালে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আবু বকর আল-বাগদাদির সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেন জোলানি, এবং তার প্রতিষ্ঠিত গোষ্ঠীটি ইদলিবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে। ২০১৭ সালে তিনি এইচটিএস গঠন করেন এবং সিরিয়ার ইদলিবে একটি প্রশাসন গড়ে তোলেন। এরপর থেকে সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির শীর্ষ নেতা হিসেবে তার অবস্থান আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে।
এইচটিএসের নিয়ন্ত্রণে আসার পর সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশে প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করেছে তারা, এবং বাশার আল আসাদ সরকার পতন হতে যাচ্ছে এমন পরিস্থিতিতে তাদের শক্তি আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।