সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধারা একের পর এক শহর দখল করার পর রাজধানী দামেস্কে প্রবেশ করেছেন। এ পরিস্থিতিতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ দামেস্ক ছেড়ে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার জ্যেষ্ঠ দুজন সরকারি কর্মকর্তার বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি জানিয়েছে, বাশার আল আসাদ একটি উড়োজাহাজে চড়ে দামেস্ক ছেড়ে গেছেন। তবে তার গন্তব্যস্থল সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের পালিয়ে যাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে একটি ব্যক্তিগত উড়োজাহাজ ছেড়ে গেছে, যা থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে, এতে বাশার আল আসাদ থাকতে পারেন। উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের পর বিমানবন্দর থেকে সরকারি সেনাদের সরিয়ে নেয়া হয় এবং শহর থেকেও সেনা প্রত্যাহার করা হয়। এর কিছু সময় পরেই দামেস্কের রাস্তায় হাজার হাজার বাসিন্দা নেমে আসেন এবং তারা স্লোগান দেন, ‘আসাদ পালিয়ে গেছেন, হোমস মুক্ত’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক’।
এদিকে, সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী জানায়, তারা দামেস্কে প্রবেশ করেছে এবং শহরের কোনো স্থানে সেনা মোতায়েন নেই। তারা উদযাপন করে বলেছে, “আমরা বিদ্রোহীদের মুক্তি দেয়ার খবর উদযাপন করছি।”
বাশার আল আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন, এবং তার আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর ধরে দেশটি শাসন করেছিলেন। ২০১১ সালে বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে শুরু হয় ব্যাপক বিক্ষোভ, যা পর্যায়ক্রমে সশস্ত্র বিদ্রোহে রূপ নেয় এবং সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের সূচনা হয়। ২০১৫ সালে রাশিয়া সিরিয়ার পক্ষ নিয়ে আসেন, তখন থেকে বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হলেও সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্রোহীরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠে।
এছাড়া, সিরিয়ার বিদ্রোহীরা সম্প্রতি ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো আলেপ্পোতে প্রবেশ করে এবং এর পরই তারা দ্রুত দামেস্কের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ইসলামপন্থি গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা সিরিয়ার দারা শহরের নিয়ন্ত্রণও নেন। এর আগে আলেপ্পো, হামা ও হোমস শহরও তাদের দখলে আসে।