সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পতনের পর দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি একেবারে বদলে গেছে। বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল এবং সিরিয়া এখন এক ধরনের অস্থিতিশীলতায় ভুগছে।
এর মধ্যে, রোববার (৮ ডিসেম্বর) সকালে, ইসরায়েলি সেনারা সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশ করেছে। তারা ট্যাঙ্ক নিয়ে গোলান মালভূমি (মাউন্ট হারমন) এলাকায় প্রবেশ করে, যা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল এবং মেহের নিউজসহ একাধিক সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, সিরিয়ায় ইসরায়েলি সেনাদের এ ধরনের প্রবেশ গত ৫০ বছরে প্রথম। সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে সীমান্ত বেড়া অতিক্রম করে ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক প্রবেশ করেছে বলে জানানো হয়েছে। তবে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো দাবি করেছে, এটি একটি বাফার জোন এবং সেখানে নতুন প্রতিরক্ষা রেখা স্থাপনের অংশ হিসেবে এই সেনা প্রবেশ করেছে।
১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতি চুক্তির পর ইসরায়েল একটি নতুন প্রতিরক্ষা রেখা প্রতিষ্ঠা করতে বাধ্য হয়, যা সিরিয়ার গোলান মালভূমি (মাউন্ট হারমন) এলাকায় অবস্থিত। ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল সিরিয়ার গোলান মালভূমির অধিকাংশ অংশ দখল করে এবং ১৯৮১ সালে পুরো অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে কিছু বাফার জোন ছিল, যেখানে সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য সীমান্ত নিরাপদ রাখা হয়েছিল।
এদিকে, সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল–শাম গত ২৬ নভেম্বর থেকে আসাদ বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে। প্রথমে আলেপ্পো শহর দখলের পর বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্কের দিকে দ্রুত এগোতে থাকে। মাত্র ১১ দিনের মধ্যে আজ রোববার তারা দামেস্ক ‘মুক্ত’ করার ঘোষণা দেয়, যার মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় দীর্ঘ ৫৪ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে।
বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দাবি, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ একটি ব্যক্তিগত হেলিকপ্টারে দামেস্ক ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলিও এই খবর নিশ্চিত করেছে। এর পরই হোয়াইট হাউস সিরিয়া নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে, যেখানে তারা সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।