ঢাকা ০৯:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
বাজার মনিটরিং এর কারণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে, আগামী কোরবানির ঈদেও বাজার মূল্য স্থিতি থাকবে: মাহবুবুর রহমান, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া ডিএসসিসি’র ব্যাটারির দরপত্রে অনিয়ম  :  কর্পোরেশনের ২০ লাখ টাকা গচ্চা এলজিইডির সদর দপ্তরসহ একযোগে ৩৬ অফিসে দুদকের অভিযান মৌলভীবাজারে ডাকাতির ঘটনায় ৫ডাকাতসহ গ্রেফতার-৭: অস্ত্র, গুলি, লুণ্ঠিত টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার রেললাইনের পাশে পড়েছিল ব্যবসায়ীর গলাকাটা মরদেহ নাগরপুরে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিরছা ব্রিকসের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ইউএসটিসিতে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার ও ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত কমলগঞ্জে ইকবাল হত্যার বিচার ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন মৌলভীবাজার পৈলভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে দুর্নীতি: ঠিকাদারের সাথে এলজিইডি কর্মকর্তারা জড়িত জাতীয় আইন সহায়তা দিবস উপলক্ষে সুনামগঞ্জে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা নদী ভাঙনে ১৫টি ঘর বিলীন, দেড়শ পরিবার নিঃস্ব

ফেলানী হত্যার ১৪ বছরেও বিচার হয়নি, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিচার চায় পরিবার

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) ভোরে ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে ভারতীয় বিএসএফ এর গুলিতে নির্মমভাবে মৃত্যু হয় কিশোরী ফেলানীর। সকাল পৌনে ৭টা থেকে নিথর দেহ কাঁটাতাঁরের উপর ঝুলে থাকে দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘন্টা। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফ এর এ কোর্টে স্বাক্ষী দেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফ এর বিশেষ কোর্ট। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় বিচারের দাবী জানায় ফেলানীর বাবা।

২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে স্বাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত পুনরায় আত্মস্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ ‘মাসুম’ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রীম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও হয়নি শুনানি। পরবর্তীতে আরও কয়েক দফা শুনানির দিন ধার্য থাকলেও বিভিন্ন কারণে তা আজও সম্পন্ন হয়নি। মেয়ের হত্যাকারীর বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফেলানীর পরিবার। অভিযোগ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অবহেলায় মেয়ে হত্যার বিচার থেকে বঞ্চিত তারা।

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম জানান, ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত আমরা সঠিক বিচার পেলাম না, শেখ হাসিনা সরকার বারবার আমাদের সঠিক বিচার দিতে চেয়েও দিতে পারেনি, নতুন সরকার এসেছে আমরা নতুন সরকারের কাছে ফেলানী হত্যার বিচার চাই। অমিয় ঘোষের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

এলাকাবাসী জহির উদ্দিন ও আলতাফ আলী জানান, দীর্ঘদিন হয়ে গেল আজ পর্যন্ত ফেলানী হত্যার বিচার হলো না, আমরা চাই নতুন সরকার দ্রুত এর বিচার করুক।

ফেলানি হত্যা বিচারের আইনজীবী কুড়িগ্রামের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট এস. এম. আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতের সুপ্রিমকোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার রীট তালিকাভূক্ত রয়েছে। সেটি যত দ্রুত শুনানি হবে ততোই মামলাটির অগ্রগতি হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও ফেলানী হত্যার বিচার হলে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকরাও সুরক্ষিত থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের নুরুল ইসলাম নুরু পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতে বঙ্গাইগাঁও গ্রামে। মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। তাই ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হয় দেশের উদ্দেশ্যে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাজার মনিটরিং এর কারণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে, আগামী কোরবানির ঈদেও বাজার মূল্য স্থিতি থাকবে: মাহবুবুর রহমান, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

Verified by MonsterInsights

ফেলানী হত্যার ১৪ বছরেও বিচার হয়নি, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিচার চায় পরিবার

আপডেট সময় ০৬:৩০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি (শুক্রবার) ভোরে ফুলবাড়ির অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে ভারতীয় বিএসএফ এর গুলিতে নির্মমভাবে মৃত্যু হয় কিশোরী ফেলানীর। সকাল পৌনে ৭টা থেকে নিথর দেহ কাঁটাতাঁরের উপর ঝুলে থাকে দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘন্টা। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের কোচবিহারে জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়। বিএসএফ এর এ কোর্টে স্বাক্ষী দেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম ও মামা হানিফ। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয় বিএসএফ এর বিশেষ কোর্ট। পরে রায় প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় বিচারের দাবী জানায় ফেলানীর বাবা।

২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনরায় বিচার শুরু হলে ১৭ নভেম্বর আবারও আদালতে স্বাক্ষ্য দেন ফেলানীর বাবা। ২০১৫ সালের ২ জুলাই এ আদালত পুনরায় আত্মস্বীকৃত আসামি অমিয় ঘোষকে খালাস দেয়। রায়ের পরে একই বছর ১৪ জুলাই ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ ‘মাসুম’ ফেলানীর বাবার পক্ষে দেশটির সুপ্রীম কোর্টে রিট পিটিশন করে। ওই বছর ৬ অক্টোবর রিট শুনানি শুরু হয়। ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও হয়নি শুনানি। পরবর্তীতে আরও কয়েক দফা শুনানির দিন ধার্য থাকলেও বিভিন্ন কারণে তা আজও সম্পন্ন হয়নি। মেয়ের হত্যাকারীর বিচার না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ফেলানীর পরিবার। অভিযোগ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অবহেলায় মেয়ে হত্যার বিচার থেকে বঞ্চিত তারা।

ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম জানান, ফেলানী হত্যার ১৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজ পর্যন্ত আমরা সঠিক বিচার পেলাম না, শেখ হাসিনা সরকার বারবার আমাদের সঠিক বিচার দিতে চেয়েও দিতে পারেনি, নতুন সরকার এসেছে আমরা নতুন সরকারের কাছে ফেলানী হত্যার বিচার চাই। অমিয় ঘোষের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।

এলাকাবাসী জহির উদ্দিন ও আলতাফ আলী জানান, দীর্ঘদিন হয়ে গেল আজ পর্যন্ত ফেলানী হত্যার বিচার হলো না, আমরা চাই নতুন সরকার দ্রুত এর বিচার করুক।

ফেলানি হত্যা বিচারের আইনজীবী কুড়িগ্রামের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট এস. এম. আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতের সুপ্রিমকোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার রীট তালিকাভূক্ত রয়েছে। সেটি যত দ্রুত শুনানি হবে ততোই মামলাটির অগ্রগতি হবে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও ফেলানী হত্যার বিচার হলে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাশাপাশি ভারতীয় নাগরিকরাও সুরক্ষিত থাকবে বলে মনে করেন তিনি।

উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নের কলোনীটারী গ্রামের নুরুল ইসলাম নুরু পরিবার নিয়ে থাকতেন ভারতে বঙ্গাইগাঁও গ্রামে। মেয়ে ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয় বাংলাদেশে। তাই ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি মেয়েকে নিয়ে রওনা হয় দেশের উদ্দেশ্যে।