বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংস্কার কার্যক্রমে জাতিসংঘের সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।
শুক্রবার (১৪ মার্চ) এক এক্স বার্তায় তিনি এ কথা জানান।
এক্স বার্তায় জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, “আমি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বাংলাদেশের জনগণকে তাদের উষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সংস্কার ও রূপান্তরের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একটি টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে জাতিসংঘ সর্বদা আপনাদের পাশে থাকবে।”
এর আগে, শুক্রবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন জাতিসংঘ মহাসচিব। বৈঠক শেষে তারা বাংলাদেশ বিমানের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইটে কক্সবাজার যান। সেখানে তারা সারাদিন উখিয়ার রোহিঙ্গা লার্নিং সেন্টার, রোহিঙ্গাদের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ও পাটজাত পণ্যের উৎপাদন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টা, জাতিসংঘ মহাসচিব এবং প্রায় এক লক্ষ রোহিঙ্গা শরণার্থী একসঙ্গে ইফতার করেন।
শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকায় জাতিসংঘের কার্যালয়ে জাতিসংঘের সব কর্মীর সঙ্গে মতবিনিময় করবেন গুতেরেস। এরপর তিনি হোটেলে ফিরে একটি গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেবেন এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। সেখানে বাংলাদেশের যুবসমাজ ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। এদিন বিকেলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে তার যৌথ প্রেস ব্রিফিং হওয়ার কথা রয়েছে। পরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সৌজন্যে এক ইফতার ও নৈশভোজে অংশ নেবেন জাতিসংঘ মহাসচিব।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সফর। প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে তিনি রমজানে সংহতি জানাতে বাংলাদেশে এসেছেন। প্রতি বছর তিনি মুসলিম দেশগুলোতে সফর করে থাকেন। এছাড়া, সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু ও আন্তর্জাতিক সহায়তার বিষয়টি আলোচনায় আসবে।”
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সহায়তা কমানোর ঘোষণার পর রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। জাতিসংঘের এই সফরে রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো ও রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
প্রসঙ্গত, চার দিনের সফরে বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে ঢাকায় আসেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। প্রায় সাত বছরের ব্যবধানে এটি তার দ্বিতীয় বাংলাদেশ সফর।