মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং নৃশংস অত্যাচারের অভিযোগে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম অবিলম্বে নিষিদ্ধ করার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখেছেন ৩০০ জন প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, গবেষক ও পেশাজীবী।
বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের মাধ্যমে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “বিগত ১৬ বছরের জুলুম, নির্যাতন-নিপীড়ন ও দুঃশাসন থেকে মুক্তির জন্য ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থান ঘটেছে। কিন্তু এখনো সেই ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।”
অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে প্রমাণ পাওয়া গেছে যে, আওয়ামী লীগ সরকার রাজনৈতিক আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে কমপক্ষে ৮৩৪ জনকে হত্যা এবং ২০ হাজারের বেশি মানুষকে আহত করেছে। বিশেষত শিশুদের লক্ষ্য করে হত্যাকাণ্ড ও গ্রেপ্তার নিয়ে প্রতিবেদনে বিস্তারিত উঠে এসেছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বেআইনিভাবে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে নির্যাতন চালানো হয়েছে। এটি বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে যে, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের সময় ১ হাজার ৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের মধ্যে শিশুরাও রয়েছে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানায় যে, ২০১৩ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ২,০০০-এর বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
বিশ্বের অন্যান্য দেশ যেমন সিরিয়া ও ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দলের নিষিদ্ধ হওয়ার উদাহরণ তুলে ধরে প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়েছেন যে, শীঘ্রই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে গণ-অভ্যুত্থানের আশা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
চিঠির মাধ্যমে তাদের দাবির মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা। তারা এই হত্যাযজ্ঞ, গুম ও নিপীড়ন বন্ধ করতে সুস্পষ্ট পদক্ষেপ আশা করছেন।