দেশ যখন তারুণ্যের উৎসবে মেতে উঠেছে তখন পাবনার ভাঙ্গুড়ায় এক প্রতিবন্ধী যুবকের দিন কাটছে ছাগলের সাথে। বড়ই নিদারুণ দৃশ্য!
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এই যুবকের নাম চাঁদ মোল্লা। বয়স ২৫ বছর। তিনি ভাঙ্গুড়া পৌরসভার সাহেবপাড়া মহল্লার মৃত মতি মোল্লার ছেলে। তার জন্মের পর মা-বাবা আদর করে নাম রেখেছিলেন চাঁদ। অথচ পঙ্গুত্ব তার জীবন-যৌবনের সব আলো নিভিয়ে দিয়েছে।
ভাই-ভাবীর দয়ায় কষ্টের জীবন পাড় করছেন তিনি। পশুর যে দাম সেটাও তার নেই। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বাড়ির ছাগলের সাথে তাকেও পায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় গাছের সাথে। রাতে ছাগলের ঘরেই ঘুমায় চাঁদ মোল্লা। অযত্নে অবহেলায় সে এখন কথাও বলতে পারে না।
সরজমিনে দেখা যায়, শীতের সকালে চাঁদের একটি পায়ে দড়ি লাগিয়ে তাদের বাড়ির সামনের একটি মেহগুনি গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। পাশের গাছের সাথে একটি ছাগলও বেঁধে রাখা হয়েছে। ঠান্ডা নিবারণের জন্য ছাগলকে বিছানা দেওয়া হলেও চাঁদের ভাগ্যে জোটেনি তাও। তার সারাদিনের সঙ্গী কেবল ঐ ছাগল। তার সামনে খাবারও নেই। ফলে গবরের একটা টুকরো খেতে দেখা যায় তাকে। এভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন চাঁদ মোল্লা।
সাহেব পাড়ার সোহেল আহমেদ বলেন, ‘এমন জীবন কারো কাম্য নয়। মানুষ তো বটে সে!’ তাই কবির ভাষায় বলা যায়, “কাহারে করেছো ঘৃণা তুমি ভাই, কাহারে মারিছো লাথি? হয়তো উহারই বুকে ভগবান জাগিছেন দিবা-রাতি!”
চাঁদ মোল্লার ভাই সুরুজ মোল্লা বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, দিন এনে দিন খাই। সকাল হলেই কাজের সন্ধানে বের হই। তাই ওকে বেঁধে রাখতে হয়।’
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদ মোল্লাকে প্রতি মাসে ৮৫০টাকা সরকারি ভাতা দেওয়া হয়। সেই ভাতার টাকা দিয়ে তার ভরণপোষণ করার কথা।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুন নাহার বলেন, ‘চাঁদ মোল্লার পরিবারের যে সদস্য তার পক্ষে ভাতা গ্রহণ করেন তিনি বা তারা ওকে দেখভাল করবেন। এর গাফিলতি করলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’