ঢাকা ০৪:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
৩৫ কেজি বাঘাইড় মাছ ও ১৫ কেজি মিষ্টিতে পোড়াদহ মেলা আয়নাঘর পরিদর্শন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা যমুনা রেলওয়ে সেতুতে বাণিজ্যিকভাবে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএআইডি মহাপরিদর্শক পল মার্টিন বরখাস্ত শেখ হাসিনার বক্তব্য ভারতের জন্য জটিলতা সৃষ্টি করেছে: শশী থারুর বিনামূল্যে ক্যান্সার ওষুধ দেওয়ার ঘোষণা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আগামী অক্টোবরের মধ্যে জুলাই হত্যা মামলার রায়: আসিফ নজরুল পরিবেশ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সহকারী পরিচালক বদরুন্নাহার সীমার সীমাহীন দুর্নীতি পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প: পিডি উজ্জ্বল মল্লিক ভুয়া কাগজপত্র দিয়ে শত শত কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্ত প্লট হাতিয়ে নিয়েছে ময়মনসিংহে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ময়মনসিংহ জেলা মটরযান কর্মচারী ইউনিয়ন নির্বাচনে নির্বাচিত সভাপতি সম্পাদকসহ সকলের শপদ ও দায়িত্ব গ্রহণ গাজীপুর কারাগারে কয়েদির আত্মহত্যা, তদন্ত কমিটি গঠন

ভাঙ্গুড়ায় প্রতিবন্ধী যুবকের মানবেতর জীবন সারাদিন কাটে ছাগলের সাথে!

দেশ যখন তারুণ্যের উৎসবে মেতে উঠেছে তখন পাবনার ভাঙ্গুড়ায় এক প্রতিবন্ধী যুবকের দিন কাটছে ছাগলের সাথে। বড়ই নিদারুণ দৃশ্য!

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এই যুবকের নাম চাঁদ মোল্লা। বয়স ২৫ বছর। তিনি ভাঙ্গুড়া পৌরসভার সাহেবপাড়া মহল্লার মৃত মতি মোল্লার ছেলে। তার জন্মের পর মা-বাবা আদর করে নাম রেখেছিলেন চাঁদ। অথচ পঙ্গুত্ব তার জীবন-যৌবনের সব আলো নিভিয়ে দিয়েছে।

ভাই-ভাবীর দয়ায় কষ্টের জীবন পাড় করছেন তিনি। পশুর যে দাম সেটাও তার নেই। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বাড়ির ছাগলের সাথে তাকেও পায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় গাছের সাথে। রাতে ছাগলের ঘরেই ঘুমায় চাঁদ মোল্লা। অযত্নে অবহেলায় সে এখন কথাও বলতে পারে না।

সরজমিনে দেখা যায়, শীতের সকালে চাঁদের একটি পায়ে দড়ি লাগিয়ে তাদের বাড়ির সামনের একটি মেহগুনি গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। পাশের গাছের সাথে একটি ছাগলও বেঁধে রাখা হয়েছে। ঠান্ডা নিবারণের জন্য ছাগলকে বিছানা দেওয়া হলেও চাঁদের ভাগ্যে জোটেনি তাও। তার সারাদিনের সঙ্গী কেবল ঐ ছাগল। তার সামনে খাবারও নেই। ফলে গবরের একটা টুকরো খেতে দেখা যায় তাকে। এভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন চাঁদ মোল্লা।

সাহেব পাড়ার সোহেল আহমেদ বলেন, ‘এমন জীবন কারো কাম্য নয়। মানুষ তো বটে সে!’ তাই কবির ভাষায় বলা যায়, “কাহারে করেছো ঘৃণা তুমি ভাই, কাহারে মারিছো লাথি? হয়তো উহারই বুকে ভগবান জাগিছেন দিবা-রাতি!”

চাঁদ মোল্লার ভাই সুরুজ মোল্লা বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, দিন এনে দিন খাই। সকাল হলেই কাজের সন্ধানে বের হই। তাই ওকে বেঁধে রাখতে হয়।’

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদ মোল্লাকে প্রতি মাসে ৮৫০টাকা সরকারি ভাতা দেওয়া হয়। সেই ভাতার টাকা দিয়ে তার ভরণপোষণ করার কথা।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুন নাহার বলেন, ‘চাঁদ মোল্লার পরিবারের যে সদস্য তার পক্ষে ভাতা গ্রহণ করেন তিনি বা তারা ওকে দেখভাল করবেন। এর গাফিলতি করলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

৩৫ কেজি বাঘাইড় মাছ ও ১৫ কেজি মিষ্টিতে পোড়াদহ মেলা

Verified by MonsterInsights

ভাঙ্গুড়ায় প্রতিবন্ধী যুবকের মানবেতর জীবন সারাদিন কাটে ছাগলের সাথে!

আপডেট সময় ১১:২২:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

দেশ যখন তারুণ্যের উৎসবে মেতে উঠেছে তখন পাবনার ভাঙ্গুড়ায় এক প্রতিবন্ধী যুবকের দিন কাটছে ছাগলের সাথে। বড়ই নিদারুণ দৃশ্য!

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এই যুবকের নাম চাঁদ মোল্লা। বয়স ২৫ বছর। তিনি ভাঙ্গুড়া পৌরসভার সাহেবপাড়া মহল্লার মৃত মতি মোল্লার ছেলে। তার জন্মের পর মা-বাবা আদর করে নাম রেখেছিলেন চাঁদ। অথচ পঙ্গুত্ব তার জীবন-যৌবনের সব আলো নিভিয়ে দিয়েছে।

ভাই-ভাবীর দয়ায় কষ্টের জীবন পাড় করছেন তিনি। পশুর যে দাম সেটাও তার নেই। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর বাড়ির ছাগলের সাথে তাকেও পায়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয় গাছের সাথে। রাতে ছাগলের ঘরেই ঘুমায় চাঁদ মোল্লা। অযত্নে অবহেলায় সে এখন কথাও বলতে পারে না।

সরজমিনে দেখা যায়, শীতের সকালে চাঁদের একটি পায়ে দড়ি লাগিয়ে তাদের বাড়ির সামনের একটি মেহগুনি গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়েছে। পাশের গাছের সাথে একটি ছাগলও বেঁধে রাখা হয়েছে। ঠান্ডা নিবারণের জন্য ছাগলকে বিছানা দেওয়া হলেও চাঁদের ভাগ্যে জোটেনি তাও। তার সারাদিনের সঙ্গী কেবল ঐ ছাগল। তার সামনে খাবারও নেই। ফলে গবরের একটা টুকরো খেতে দেখা যায় তাকে। এভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন চাঁদ মোল্লা।

সাহেব পাড়ার সোহেল আহমেদ বলেন, ‘এমন জীবন কারো কাম্য নয়। মানুষ তো বটে সে!’ তাই কবির ভাষায় বলা যায়, “কাহারে করেছো ঘৃণা তুমি ভাই, কাহারে মারিছো লাথি? হয়তো উহারই বুকে ভগবান জাগিছেন দিবা-রাতি!”

চাঁদ মোল্লার ভাই সুরুজ মোল্লা বলেন, ‘আমরা গরীব মানুষ, দিন এনে দিন খাই। সকাল হলেই কাজের সন্ধানে বের হই। তাই ওকে বেঁধে রাখতে হয়।’

উপজেলা সমাজসেবা অফিসার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চাঁদ মোল্লাকে প্রতি মাসে ৮৫০টাকা সরকারি ভাতা দেওয়া হয়। সেই ভাতার টাকা দিয়ে তার ভরণপোষণ করার কথা।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুন নাহার বলেন, ‘চাঁদ মোল্লার পরিবারের যে সদস্য তার পক্ষে ভাতা গ্রহণ করেন তিনি বা তারা ওকে দেখভাল করবেন। এর গাফিলতি করলে তার বা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’