ইরাকের দক্ষিণাঞ্চলীয় মুসান্না প্রদেশের তা’ল আল-শাইখিয়া এলাকায় একটি গণকবর আবিষ্কৃত হয়েছে, যেখানে প্রায় ১০০ জনের দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসব মরদেহ কুর্দি জনগণের। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছেন। এ ঘটনা ১৯৮০-এর দশকের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের অংশ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে, যা সাবেক ইরাকি শাসক সাদ্দাম হোসেনের নির্দেশে ঘটানো হয়েছিল।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) আরব নিউজসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়।
ইরাকি কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে কবরের অবস্থান প্রধান সড়ক থেকে ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে, এবং কুর্দি বাসন্তী পোশাক পরিহিত মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি দ্বিতীয় গণকবর, যেটি খননকারী বিশেষজ্ঞ দল গত মাসে আবিষ্কার করে।
ইরাকের তদন্ত কর্মকর্তা দিয়া করিম জানান, “মাটির প্রথম স্তর অপসারণ করার পর এই গণকবরটি আবিষ্কৃত হয়েছে। মৃতদেহগুলোর মধ্যে অনেকেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, এবং সম্ভবত কিছুজনকে জীবন্ত কবর দেয়া হয়েছিল।”
তথ্য অনুযায়ী, এই গণহত্যা সম্ভবত সাদ্দামের ‘আনফাল অপারেশন’ নামে পরিচিত অভিযানের অংশ ছিল, যা ১৯৮৭ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে কুর্দি জনগণের উপর চালানো হয়। ওই সময়ে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার কুর্দি নিহত হয়েছিল, এবং হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, দেশে ছড়িয়ে থাকা বহু গণকবরে গুম হওয়া এসব কুর্দিদের দেহাবশেষ রয়েছে।
এদিকে, কুর্দিরা এখনও শান্তিতে নেই। তুরস্কের সাম্প্রতিক হামলায় কুর্দি যোদ্ধারা প্রতিনিয়ত প্রাণ হারাচ্ছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সম্প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধারা যদি আত্মসমর্পণ না করেন, তবে তাদের জীবন্ত কবর দেয়া হবে। তিনি বলেন, “কুর্দি যোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণ না করলে তাদের জন্য কোনো স্থান থাকবে না।”
এই নতুন গণকবর আবিষ্কৃত হওয়া কুর্দি জনগণের উপর পূর্ববর্তী সরকারের অত্যাচারের স্মৃতি আবারও উন্মোচন করে, এবং ইরাক ও তুরস্কের চলমান কুর্দি সমস্যার গভীরতার দিকে আলোকপাত করে।