ঢাকা ০৮:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
বাজার মনিটরিং এর কারণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে, আগামী কোরবানির ঈদেও বাজার মূল্য স্থিতি থাকবে: মাহবুবুর রহমান, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পিএসসিকে চাপ দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়া ডিএসসিসি’র ব্যাটারির দরপত্রে অনিয়ম  :  কর্পোরেশনের ২০ লাখ টাকা গচ্চা এলজিইডির সদর দপ্তরসহ একযোগে ৩৬ অফিসে দুদকের অভিযান মৌলভীবাজারে ডাকাতির ঘটনায় ৫ডাকাতসহ গ্রেফতার-৭: অস্ত্র, গুলি, লুণ্ঠিত টাকা ও স্বর্ণালংকার উদ্ধার রেললাইনের পাশে পড়েছিল ব্যবসায়ীর গলাকাটা মরদেহ নাগরপুরে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিরছা ব্রিকসের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ইউএসটিসিতে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার ও ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত কমলগঞ্জে ইকবাল হত্যার বিচার ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন মৌলভীবাজার পৈলভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে দুর্নীতি: ঠিকাদারের সাথে এলজিইডি কর্মকর্তারা জড়িত জাতীয় আইন সহায়তা দিবস উপলক্ষে সুনামগঞ্জে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা নদী ভাঙনে ১৫টি ঘর বিলীন, দেড়শ পরিবার নিঃস্ব

দু’টি হত্যা মামলা থাকার পরেও ধরাছোয়ার বাইরে ডিবি পুলিশের এসআই আশরাফুল

দু’টি হত্যা মামলা থাকার পরেও ধরাছোয়ার বাইরে লক্ষীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের এসআই আশরাফুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম ও অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ এনে এবং আইনগত ব্যাবস্থা নেয়ার দাবীতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনো অদৃশ্য শক্তি বলে বহাল তবিয়তে চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন তিনি।

জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের সৈয়দ শফিকুল ইসলামের পুত্র এসআই আশরাফুল ইসলাম ওরফে প্রকাশ সেলিম একজন প্রতারক, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ঘুষখোর, মাদক ব্যবসায়ী ও অবৈধ অস্ত্রধারী লোক। সে দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় নীরবে মাদক ব্যবসা, চোরাচালান ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গড়ে তুলেছে সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাদকের সাম্রাজ্য।

সে এলাকার মাস্তান, চোর, ইয়াবাখোর, ডাকাতদের সংগ্রহ করে বিশাল বাহিনী গড়ে তুলেছে। এলাকার উঠতি বয়সী তরুণ যুবকদেরকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের নেশায় আকৃষ্ট করে অসামাজিক বিভিন্ন কার্যকলাপে বাধ্য করে। তার অবৈধ আয়ের বিরাট অংকের টাকা দিয়ে মাস্তান বাহিনীকে চালায়। এসআই আশরাফুলের গঠিত ওই সন্ত্রাসী বাহিনীরা হলেন, লাল মিয়ার পুত্র ১নং ওয়ার্ড কাইতলা উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি অলি মুন্সী, আ’লীগ নেতা নজরুল ইসলাম, মলাই, মনির, আমিরুল, বোরহান উদ্দিন, মেহেদী, কাইয়ুম, সাইফুলসহ নাম না জানা আরো ১২/১৫ জন। তাদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ জর্জরিত। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। তাদের বাহিনী দিয়ে হামলা মামলার মাধ্যমে মানুষকে ভয় দেখায়। এলাকার নীরিহ লোকদেরকে বিভিন্ন থানায় মামলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে যেসব ফৌজদারী মামলাগুলো চলমান রয়েছে, ০১. সিআর মোকদ্দমা নং- ১৪৮/২০২৪ ধারা ৫০০/৫০১, ০২. সাইবার পিটিশন মামলা নং ১৪৫/২০২৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ০৩. ধারা সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এর ২৫/২৬/২৯/৩১/৩৩ দন্ডবিধি, ০৪. সিআর মোকদ্দমা নং ৮২৭/২৪ইং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ধারা ১৪৩/৩৮৫/৫০৬ (২)/১১৪/৩৪ পেনাল কোড, ০৫. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলা নং ৮৫২/২০১৭ চকরিয়া থানা, কক্সবাজার, ০৬. হত্যা মামলা যাত্রাবাড়ি থানার মামলা নং- ৪৫(৯), তাং- ১৩/০৯/২০২৪ইং ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৩০২/১০৯/১১৪/৩৪ দন্ডবিধি (ডিবি হারুনের ক্যাশিয়ার), ০৭. বাড্ডা থানা, ঢাকা মামলা নং- ২৯ তারিখ ২৯/০৯/২০২৪ইং ধারা-৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/১১৪/১০৯/৩৪।

তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে অনেকবার অভিযোগ করলেও আওয়ামী সরকারের আমলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ ব্যক্তিগণ দিয়ে এবং উচ্চপদস্থ পুলিশের কিছু অসাধু অফিসার দিয়ে ঘুষের বিনিময়ে সে পাড় পেয়ে যায়। কিছুদিন আগে লক্ষীপুর ডিবি কার্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হলেও বর্তমানে সে আবার তার চাকরিতে যোগদান করার জন্য পায়তারা করতেছে।

বরখাস্তের আদেশে উল্লেখ আছে, কোনো ফৌজদারী মামলা চলমান থাকলে তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার হবে না। কিন্তু অতি চালাক এসআই আশরাফুল তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ফৌজদারী মামলাগুলো চলমান থাকাবস্থায় গোপনীয়তা বজায় রেখে তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

শুধু তাই নয় তানভীর হোসেন সাগর নামের এক ব্যক্তিকে চাকরিতে পুর্নবহাল করে দেওয়ার কথা বলে ৮ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে। কাজ করে দিতে না পারায় টাকা ফেরৎ চাইলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।

এছাড়াও ওই এসআই ফেইক ফেসবুক আইডি থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সম্মানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য প্রচার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। তার এই কার্যকলাপে কেউ বাঁধা প্রদান করলে মিথ্যা মামলার হুমকি অথবা লাশ গুম করে নদীতে ফেলে দেয়ার ভয় দেখায়।

তার বিরুদ্ধে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পরামর্শক্রমে সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে সাইবার পিটিশন মামলা নং ১৪৫/২০২৪ইং (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) মামলা দায়ের করা হলে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদালত থেকে নিদের্শনা দেওয়া হয়। সিআর ১৪৮/২৪ইং ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করিলে উক্ত মামলার আসামী এসআই আশরাফুল ও অন্যান্য আসামীদেরকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।

এদিকে মামলাগুলো তুলে না নিলে আমাকে হত্যার হুমকি দিতেছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার কারণে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে আমাকে নিঃস্ব করে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে। কাজেই আমি ভীত সন্ত্রস্থ। জরুরী ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমি ও আমার পরিবারবর্গ কে বিপদে ফেলিতে পারে বলে আমি ধারনা করছি। আমি প্রচন্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার

এসআই আশরাফুলের কুকর্মের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্ঠা, আইজিপি, ডিআইজি, ও জেলা পুলিশ লক্ষীপুর বরাবরে বার বার এসআই আশরাফুল ও তার বাহিনীর কুকর্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করলেও এখনো পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। এমনকি বহাল তবিয়তে চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন তিনি।

জানা যায়, পুলিশ সুপার ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নবীনগর থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর শত শত মানুষের স্বাক্ষরকৃত অভিযোগ দিলেও তৎকালিন পুলিশ সুপার তার পক্ষ নিয়ে কাজ করতেন। সেজন্য এসআই আশরাফুলের অনৈতিক কার্যলাপের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। আমি অভিযোগ করার কারণেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ কারীগণকে অভিযোগ ও মামলা তুলে না নিলে আমি ও আমার পরিবারবর্গকে যেকোন সময় প্রাণে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে।

আমি তার বিরুদ্ধে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বরাবর বারবার অভিযোগ করেও আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে কোন সুফল পাচ্ছি না। এমনকি অভিযোগগুলো কে বা কারা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার আমরা জানি না, আমরা শুধু একের পর এক অভিযোগ করেছি। এদিকে এসআই আশরাফুল সরকারী চাকরির বিধিমালা না মেনে নবীনগরের কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটির কার্যকরী সদস্য পদ লাভ করেন। সে আওয়ামী লীগ পরিবারের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দালাল ও মামলাবাজ প্রতারক। এসআই আশরাফুল ডিবি হারুনের প্রভাবে চলত এবং বিভিন্ন সময় সে ডিবি হারুনের আস্থাভাজন লোক হিসাবে বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করত।

সে ডিবি হারুনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল। তাকে ডিবি হারুনের ক্যাশিয়ার বলা হতো। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ও জেলায় হত্যা, ডাকাতি, চুরি, রাহাজানিসহ অনেক মামলা থানা ও আদালতে চলমান রয়েছে। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এসআই আশরাফুল ২টি হত্যার মামলার ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। এমনকি ছাত্রদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হত্যার ঘটনা ঘটায়। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির বলে আজ অবধি এসআই আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। দ্রুত তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানান অভিযোগকারী।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই আশরাফুল জানান, আপনারা যা ইচ্ছা তাই আমার বিরুদ্ধে লিখেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার জাবেদুর রহমান জানান, এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বাজার মনিটরিং এর কারণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে, আগামী কোরবানির ঈদেও বাজার মূল্য স্থিতি থাকবে: মাহবুবুর রহমান, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়

Verified by MonsterInsights

দু’টি হত্যা মামলা থাকার পরেও ধরাছোয়ার বাইরে ডিবি পুলিশের এসআই আশরাফুল

আপডেট সময় ১০:৩০:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪

দু’টি হত্যা মামলা থাকার পরেও ধরাছোয়ার বাইরে লক্ষীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের এসআই আশরাফুল ইসলাম। তার বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম ও অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ এনে এবং আইনগত ব্যাবস্থা নেয়ার দাবীতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনো অদৃশ্য শক্তি বলে বহাল তবিয়তে চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন তিনি।

জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ব্রাহ্মণহাতা গ্রামের সৈয়দ শফিকুল ইসলামের পুত্র এসআই আশরাফুল ইসলাম ওরফে প্রকাশ সেলিম একজন প্রতারক, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ঘুষখোর, মাদক ব্যবসায়ী ও অবৈধ অস্ত্রধারী লোক। সে দীর্ঘদিন যাবৎ এলাকায় নীরবে মাদক ব্যবসা, চোরাচালান ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। গড়ে তুলেছে সন্ত্রাসী বাহিনী ও মাদকের সাম্রাজ্য।

সে এলাকার মাস্তান, চোর, ইয়াবাখোর, ডাকাতদের সংগ্রহ করে বিশাল বাহিনী গড়ে তুলেছে। এলাকার উঠতি বয়সী তরুণ যুবকদেরকে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকের নেশায় আকৃষ্ট করে অসামাজিক বিভিন্ন কার্যকলাপে বাধ্য করে। তার অবৈধ আয়ের বিরাট অংকের টাকা দিয়ে মাস্তান বাহিনীকে চালায়। এসআই আশরাফুলের গঠিত ওই সন্ত্রাসী বাহিনীরা হলেন, লাল মিয়ার পুত্র ১নং ওয়ার্ড কাইতলা উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি অলি মুন্সী, আ’লীগ নেতা নজরুল ইসলাম, মলাই, মনির, আমিরুল, বোরহান উদ্দিন, মেহেদী, কাইয়ুম, সাইফুলসহ নাম না জানা আরো ১২/১৫ জন। তাদের অত্যাচারে এলাকার মানুষ জর্জরিত। কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গেলেই মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়। তাদের বাহিনী দিয়ে হামলা মামলার মাধ্যমে মানুষকে ভয় দেখায়। এলাকার নীরিহ লোকদেরকে বিভিন্ন থানায় মামলার ভয় দেখিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।

এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে যেসব ফৌজদারী মামলাগুলো চলমান রয়েছে, ০১. সিআর মোকদ্দমা নং- ১৪৮/২০২৪ ধারা ৫০০/৫০১, ০২. সাইবার পিটিশন মামলা নং ১৪৫/২০২৪ ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ০৩. ধারা সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এর ২৫/২৬/২৯/৩১/৩৩ দন্ডবিধি, ০৪. সিআর মোকদ্দমা নং ৮২৭/২৪ইং ব্রাহ্মণবাড়িয়া ধারা ১৪৩/৩৮৫/৫০৬ (২)/১১৪/৩৪ পেনাল কোড, ০৫. নারী ও শিশু নির্যাতন দমন মামলা নং ৮৫২/২০১৭ চকরিয়া থানা, কক্সবাজার, ০৬. হত্যা মামলা যাত্রাবাড়ি থানার মামলা নং- ৪৫(৯), তাং- ১৩/০৯/২০২৪ইং ধারা- ১৪৩/৪৪৭/৩০২/১০৯/১১৪/৩৪ দন্ডবিধি (ডিবি হারুনের ক্যাশিয়ার), ০৭. বাড্ডা থানা, ঢাকা মামলা নং- ২৯ তারিখ ২৯/০৯/২০২৪ইং ধারা-৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩০২/১১৪/১০৯/৩৪।

তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে অনেকবার অভিযোগ করলেও আওয়ামী সরকারের আমলে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ ব্যক্তিগণ দিয়ে এবং উচ্চপদস্থ পুলিশের কিছু অসাধু অফিসার দিয়ে ঘুষের বিনিময়ে সে পাড় পেয়ে যায়। কিছুদিন আগে লক্ষীপুর ডিবি কার্যালয় থেকে বরখাস্ত করা হলেও বর্তমানে সে আবার তার চাকরিতে যোগদান করার জন্য পায়তারা করতেছে।

বরখাস্তের আদেশে উল্লেখ আছে, কোনো ফৌজদারী মামলা চলমান থাকলে তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার হবে না। কিন্তু অতি চালাক এসআই আশরাফুল তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ফৌজদারী মামলাগুলো চলমান থাকাবস্থায় গোপনীয়তা বজায় রেখে তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

শুধু তাই নয় তানভীর হোসেন সাগর নামের এক ব্যক্তিকে চাকরিতে পুর্নবহাল করে দেওয়ার কথা বলে ৮ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে। কাজ করে দিতে না পারায় টাকা ফেরৎ চাইলে তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।

এছাড়াও ওই এসআই ফেইক ফেসবুক আইডি থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, সম্মানীয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য প্রচার করে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়। তার এই কার্যকলাপে কেউ বাঁধা প্রদান করলে মিথ্যা মামলার হুমকি অথবা লাশ গুম করে নদীতে ফেলে দেয়ার ভয় দেখায়।

তার বিরুদ্ধে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের পরামর্শক্রমে সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামে সাইবার পিটিশন মামলা নং ১৪৫/২০২৪ইং (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) মামলা দায়ের করা হলে মামলাটি তদন্তের জন্য সিআইডি ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আদালত থেকে নিদের্শনা দেওয়া হয়। সিআর ১৪৮/২৪ইং ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করিলে উক্ত মামলার আসামী এসআই আশরাফুল ও অন্যান্য আসামীদেরকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন।

এদিকে মামলাগুলো তুলে না নিলে আমাকে হত্যার হুমকি দিতেছে। তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার কারণে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে আমাকে নিঃস্ব করে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে। কাজেই আমি ভীত সন্ত্রস্থ। জরুরী ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আমি ও আমার পরিবারবর্গ কে বিপদে ফেলিতে পারে বলে আমি ধারনা করছি। আমি প্রচন্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার

এসআই আশরাফুলের কুকর্মের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্ঠা, আইজিপি, ডিআইজি, ও জেলা পুলিশ লক্ষীপুর বরাবরে বার বার এসআই আশরাফুল ও তার বাহিনীর কুকর্মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করলেও এখনো পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করছে না পুলিশ। এমনকি বহাল তবিয়তে চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন তিনি।

জানা যায়, পুলিশ সুপার ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নবীনগর থানা অফিসার ইনচার্জ বরাবর শত শত মানুষের স্বাক্ষরকৃত অভিযোগ দিলেও তৎকালিন পুলিশ সুপার তার পক্ষ নিয়ে কাজ করতেন। সেজন্য এসআই আশরাফুলের অনৈতিক কার্যলাপের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। আমি অভিযোগ করার কারণেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ কারীগণকে অভিযোগ ও মামলা তুলে না নিলে আমি ও আমার পরিবারবর্গকে যেকোন সময় প্রাণে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছে।

আমি তার বিরুদ্ধে পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা বরাবর বারবার অভিযোগ করেও আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে কোন সুফল পাচ্ছি না। এমনকি অভিযোগগুলো কে বা কারা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তার আমরা জানি না, আমরা শুধু একের পর এক অভিযোগ করেছি। এদিকে এসআই আশরাফুল সরকারী চাকরির বিধিমালা না মেনে নবীনগরের কাইতলা উত্তর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কমিটির কার্যকরী সদস্য পদ লাভ করেন। সে আওয়ামী লীগ পরিবারের চিহ্নিত সন্ত্রাসী, দালাল ও মামলাবাজ প্রতারক। এসআই আশরাফুল ডিবি হারুনের প্রভাবে চলত এবং বিভিন্ন সময় সে ডিবি হারুনের আস্থাভাজন লোক হিসাবে বিভিন্ন মানুষকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করত।

সে ডিবি হারুনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ছিল। তাকে ডিবি হারুনের ক্যাশিয়ার বলা হতো। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ও জেলায় হত্যা, ডাকাতি, চুরি, রাহাজানিসহ অনেক মামলা থানা ও আদালতে চলমান রয়েছে। এছাড়াও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এসআই আশরাফুল ২টি হত্যার মামলার ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত ছিল। এমনকি ছাত্রদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হত্যার ঘটনা ঘটায়। কিন্তু অদৃশ্য শক্তির বলে আজ অবধি এসআই আশরাফুলকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। দ্রুত তাকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবী জানান অভিযোগকারী।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই আশরাফুল জানান, আপনারা যা ইচ্ছা তাই আমার বিরুদ্ধে লিখেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ সুপার জাবেদুর রহমান জানান, এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে বাড্ডা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, এসআই আশরাফুলের বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।