ঢাকা ১২:১৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
ইউএসটিসিতে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার ও ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত কমলগঞ্জে ইকবাল হত্যার বিচার ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন মৌলভীবাজার পৈলভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে দুর্নীতি: ঠিকাদারের সাথে এলজিইডি কর্মকর্তারা জড়িত জাতীয় আইন সহায়তা দিবস উপলক্ষে সুনামগঞ্জে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা নদী ভাঙনে ১৫টি ঘর বিলীন, দেড়শ পরিবার নিঃস্ব জয়পুরহাটে স্কুল ছাত্র কাফি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ নবীনগর ভূমি অফিসে ‘ভুয়া পরিচয়ে’ ৮ বছর চাকরির অভিযোগ এক ইউএনও জমি দিলো, আরেক ইউএনও কেড়ে নিলো রাস্তার পাশে পড়েছিল শিশুর মাথা থেঁতলানো লাশ নিখোঁজের একদিন পর রেললাইনের পাশ থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার, স্ত্রী ও স্বজনদের অভিযোগ পরিকল্পিত হত্যা মির্জাপুর জমি নিয়ে সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত, স্ত্রী ও ছেলে আহত জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র নিখোঁজের নয়দিন পর পরিত্যক্ত ডোবায় লাশ উদ্ধার

এক ইউএনও জমি দিলো, আরেক ইউএনও কেড়ে নিলো

হুট করে ভেঙে দেওয়া হলো শ্মশান। হঠাৎ এমন ঘটনায় হতভম্ব এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদুল আহমেদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলার হিন্দু জনগণ। রোববার দুপুরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন অংশ নেন। এসময় তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর অপসারণ দাবি করেন।

জানা যায়, উচাখিলা ইউনিয়নের শ্মশানটির ১৬ শতাংশ জমি রয়েছে। শ্মশানের পাশের কিছু স্থাপনা ও রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ২০২৪ সালে শ্মশানের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে মর্মে বেশ কিছু দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জায়গাটি পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। পরবর্তীতে প্রতিবেদন মোতাবেক শ্মশানকে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। জমির বিআরএসে ভুল থাকায় সেটি সংশোধনের জন্য আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই মামলা এখনও চলমান রয়েছে। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় বিনা নোটিশে শ্মশান ভেঙে দেওয়ায় উপজেলায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সনাতনীদের মাঝে। ভেঙে ফেলার সময় তাঁদের কাগজপত্র দেখাতে চাইলে তাও দেখতে রাজি হয়নি প্রশাসন, এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় হিন্দুরা।

মহাশ্মশান কমিটির আহ্বায়ক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ জানান, ‘শ্মশানের জমি নিয়ে পুরনো বিরোধ ছিল। তৎকালীন ইউএনও বিষয়টি সমাধান করে শ্মশানের ১৬ শতাংশ জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেন এবং দখলরত মালিকদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আহ্বান জানান। ৫ মাসের ব্যবধানে নতুন ইউএনও’র নির্দেশে মহাশ্মশানের নির্মাণাধীন সীমানাপ্রাচীর ভেঙে শ্মশানটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি ঈশ্বরগঞ্জ শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঈশ্বরগঞ্জ শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক পিন্টু চৌধুরী বলেন, ‘এক ইউএনও জায়গা দিয়ে গেলো, আরেক ইউএনও সেটি কেড়ে নিতে চাচ্ছেন। আমাদের কোনো কিছু না জানিয়ে এভাবে শ্মশান ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানাই।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘শ্মশানের অবস্থান যেখানে তার সাবেক ২২২ দাগে শ্রেণি শ্মশান ঘাট হিসাবে উল্লেখ আছে এবং জমির পরিমাণ ১৬ শতক। ২০২৪ সালের অক্টোবরে শ্মশানের জমি বেদখল হয়েছে জানার পর সেটি উদ্ধার করে শ্মশান কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেটি আসলে কিসের ভিত্তিতে হয়েছে সে বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ অবগত নই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদুল আহমেদের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলে সেটি তিনি সিন করেন। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখা অবধি কোনো উত্তর দেননি।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউএসটিসিতে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার ও ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

Verified by MonsterInsights

এক ইউএনও জমি দিলো, আরেক ইউএনও কেড়ে নিলো

আপডেট সময় ০৯:১৮:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

হুট করে ভেঙে দেওয়া হলো শ্মশান। হঠাৎ এমন ঘটনায় হতভম্ব এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদুল আহমেদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে উপজেলার হিন্দু জনগণ। রোববার দুপুরে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনে এই বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আগত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন অংশ নেন। এসময় তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এর অপসারণ দাবি করেন।

জানা যায়, উচাখিলা ইউনিয়নের শ্মশানটির ১৬ শতাংশ জমি রয়েছে। শ্মশানের পাশের কিছু স্থাপনা ও রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ২০২৪ সালে শ্মশানের জমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে মর্মে বেশ কিছু দৈনিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) জায়গাটি পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে বলেন। পরবর্তীতে প্রতিবেদন মোতাবেক শ্মশানকে জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। জমির বিআরএসে ভুল থাকায় সেটি সংশোধনের জন্য আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই মামলা এখনও চলমান রয়েছে। মামলা চলমান থাকা অবস্থায় বিনা নোটিশে শ্মশান ভেঙে দেওয়ায় উপজেলায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে সনাতনীদের মাঝে। ভেঙে ফেলার সময় তাঁদের কাগজপত্র দেখাতে চাইলে তাও দেখতে রাজি হয়নি প্রশাসন, এমনটাই জানিয়েছেন স্থানীয় হিন্দুরা।

মহাশ্মশান কমিটির আহ্বায়ক বিপুল চন্দ্র দেবনাথ জানান, ‘শ্মশানের জমি নিয়ে পুরনো বিরোধ ছিল। তৎকালীন ইউএনও বিষয়টি সমাধান করে শ্মশানের ১৬ শতাংশ জমির সীমানা নির্ধারণ করে দেন এবং দখলরত মালিকদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের আহ্বান জানান। ৫ মাসের ব্যবধানে নতুন ইউএনও’র নির্দেশে মহাশ্মশানের নির্মাণাধীন সীমানাপ্রাচীর ভেঙে শ্মশানটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটি ঈশ্বরগঞ্জ শাখার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও ঈশ্বরগঞ্জ শ্মশান কমিটির সাধারণ সম্পাদক পিন্টু চৌধুরী বলেন, ‘এক ইউএনও জায়গা দিয়ে গেলো, আরেক ইউএনও সেটি কেড়ে নিতে চাচ্ছেন। আমাদের কোনো কিছু না জানিয়ে এভাবে শ্মশান ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানাই।’

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইকবাল হোসাইন বলেন, ‘শ্মশানের অবস্থান যেখানে তার সাবেক ২২২ দাগে শ্রেণি শ্মশান ঘাট হিসাবে উল্লেখ আছে এবং জমির পরিমাণ ১৬ শতক। ২০২৪ সালের অক্টোবরে শ্মশানের জমি বেদখল হয়েছে জানার পর সেটি উদ্ধার করে শ্মশান কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেটি আসলে কিসের ভিত্তিতে হয়েছে সে বিষয়ে আমি সম্পূর্ণ অবগত নই।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. এরশাদুল আহমেদের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠানো হলে সেটি তিনি সিন করেন। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখা অবধি কোনো উত্তর দেননি।