ঢাকা ০৪:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫, ১৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
ইউএসটিসিতে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার ও ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত কমলগঞ্জে ইকবাল হত্যার বিচার ও আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন মৌলভীবাজার পৈলভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজে দুর্নীতি: ঠিকাদারের সাথে এলজিইডি কর্মকর্তারা জড়িত জাতীয় আইন সহায়তা দিবস উপলক্ষে সুনামগঞ্জে র‍্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজারে কুশিয়ারা নদী ভাঙনে ১৫টি ঘর বিলীন, দেড়শ পরিবার নিঃস্ব জয়পুরহাটে স্কুল ছাত্র কাফি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ নবীনগর ভূমি অফিসে ‘ভুয়া পরিচয়ে’ ৮ বছর চাকরির অভিযোগ এক ইউএনও জমি দিলো, আরেক ইউএনও কেড়ে নিলো রাস্তার পাশে পড়েছিল শিশুর মাথা থেঁতলানো লাশ নিখোঁজের একদিন পর রেললাইনের পাশ থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার, স্ত্রী ও স্বজনদের অভিযোগ পরিকল্পিত হত্যা মির্জাপুর জমি নিয়ে সংঘর্ষে যুবদল নেতা নিহত, স্ত্রী ও ছেলে আহত জয়পুরহাটে স্কুলছাত্র নিখোঁজের নয়দিন পর পরিত্যক্ত ডোবায় লাশ উদ্ধার

নিখোঁজের একদিন পর রেললাইনের পাশ থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার, স্ত্রী ও স্বজনদের অভিযোগ পরিকল্পিত হত্যা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ইকবাল হোসেন (৩০) নামে এক ব্যক্তির খণ্ডিত মরদেহ রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেল থেকে নিহত ইকবাল হোসেন নিখোঁজ ছিলেন। তবে পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে রেললাইনের ওপর লাশ রেখে গেছে। নিহত ইকবাল হোসেন উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বরচেগ গ্রামের ইলিয়াস মিয়ার ছেলে। মরদেহ নিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ, জিআরপি পুলিশ ও পিবিআই তদন্তের জন্য মাঠে নেমেছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেটের পাশ থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেটের পাশে স্থানীয়রা খণ্ডিত একটি লাশ দেখতে পান। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে ইকবালের পরিবার এসে লাশটি শনাক্ত করে। ঘটনাস্থল থেকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিহতের হাত-পা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায়।

নিহত ইকবালের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ইকবাল কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভেড়াছড়া গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে সেখান থেকে পরদিন শনিবার বিকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রথমে মোবাইলে কল ঢুকলেও পরে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ইকবালের সন্ধান চেয়ে ছবিসহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। এছাড়াও শ্বশুর ও ইকবালের বাবা কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ইকবালের মরদেহ পাওয়ার পর উভয় পরিবারের লোকজন ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে অভিযোগ করছেন। রেললাইন থেকে উদ্ধারকৃত মরদেহের চেহারা এবং জিডি করা নিখোঁজ ইকবালের ছবির সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে।

নিহত ইকবালের স্ত্রী রিমা (২৫) বলেন, আমার স্বামী স্বাভাবিকভাবে শনিবার আমাদের বাড়ি থেকে তাঁর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। ৬ মাস হয়েছে আমাদের বিয়ে হয়েছে। ৩ মাসের বাচ্চা আমার পেটে। স্বামীর সাথে আমার কোনো ধরনের মন-মালিন্য হয়নি। আমরা শুধু স্বামী-স্ত্রী ছিলাম না, ভালো একটা বন্ধু ছিলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী ট্রেনের নিচে পড়ে হত্যা করতে পারেন না। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমি স্বামী হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত ইকবালের বাবা মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যেন প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর রোববার সকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, গতকাল শনিবার নিহত ইকবালের বাবা ও তাঁর শ্বশুর থানায় এসে একটি জিডি করেছিলেন, যে বিকেল থেকে তাঁর ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, আমরা রেললাইন থেকে লাশ উদ্ধার করেছি। মৃতদেহ থেকে হাত-পা সহ পুরো শরীর ছিন্নভিন্ন অবস্থায় রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর জানা যাবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউএসটিসিতে থ্যালাসেমিয়া বিষয়ক সচেতনতামূলক সেমিনার ও ফ্রি স্ক্রিনিং ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত

Verified by MonsterInsights

নিখোঁজের একদিন পর রেললাইনের পাশ থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার, স্ত্রী ও স্বজনদের অভিযোগ পরিকল্পিত হত্যা

আপডেট সময় ০৭:৩৯:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ইকবাল হোসেন (৩০) নামে এক ব্যক্তির খণ্ডিত মরদেহ রেললাইনের পাশ থেকে উদ্ধার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেল থেকে নিহত ইকবাল হোসেন নিখোঁজ ছিলেন। তবে পরিবারের দাবি, শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে রেললাইনের ওপর লাশ রেখে গেছে। নিহত ইকবাল হোসেন উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের বরচেগ গ্রামের ইলিয়াস মিয়ার ছেলে। মরদেহ নিয়ে দেখা দিয়েছে রহস্য। এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ, জিআরপি পুলিশ ও পিবিআই তদন্তের জন্য মাঠে নেমেছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৮টায় কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেটের পাশ থেকে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রোববার সকালে উপজেলা পরিষদের অদূরে রেলগেটের পাশে স্থানীয়রা খণ্ডিত একটি লাশ দেখতে পান। পরে ঘটনাটি জানাজানি হলে ইকবালের পরিবার এসে লাশটি শনাক্ত করে। ঘটনাস্থল থেকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক সরকারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল নিহতের হাত-পা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠায়।

নিহত ইকবালের পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার ইকবাল কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভেড়াছড়া গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান। শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে সেখান থেকে পরদিন শনিবার বিকেলে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। প্রথমে মোবাইলে কল ঢুকলেও পরে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ইকবালের সন্ধান চেয়ে ছবিসহ অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। এছাড়াও শ্বশুর ও ইকবালের বাবা কমলগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। ইকবালের মরদেহ পাওয়ার পর উভয় পরিবারের লোকজন ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যা বলে অভিযোগ করছেন। রেললাইন থেকে উদ্ধারকৃত মরদেহের চেহারা এবং জিডি করা নিখোঁজ ইকবালের ছবির সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে।

নিহত ইকবালের স্ত্রী রিমা (২৫) বলেন, আমার স্বামী স্বাভাবিকভাবে শনিবার আমাদের বাড়ি থেকে তাঁর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিলেন। ৬ মাস হয়েছে আমাদের বিয়ে হয়েছে। ৩ মাসের বাচ্চা আমার পেটে। স্বামীর সাথে আমার কোনো ধরনের মন-মালিন্য হয়নি। আমরা শুধু স্বামী-স্ত্রী ছিলাম না, ভালো একটা বন্ধু ছিলাম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী ট্রেনের নিচে পড়ে হত্যা করতে পারেন না। এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমি স্বামী হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত ইকবালের বাবা মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, আমার ছেলের হত্যার বিচার চাই। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যেন প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসে।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর রোববার সকালে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, গতকাল শনিবার নিহত ইকবালের বাবা ও তাঁর শ্বশুর থানায় এসে একটি জিডি করেছিলেন, যে বিকেল থেকে তাঁর ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার বলেন, আমরা রেললাইন থেকে লাশ উদ্ধার করেছি। মৃতদেহ থেকে হাত-পা সহ পুরো শরীর ছিন্নভিন্ন অবস্থায় রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি পরিকল্পিত হত্যা নাকি আত্মহত্যা, সেটি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও তদন্তের পর জানা যাবে।