গাজার ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে। রোববার (২২ ডিসেম্বর) ইসরায়েলি বাহিনী গাজা শহরের একটি স্কুল ও দুটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে, এতে অন্তত আট ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা সূত্রে জানা যায়, গাজা শহরের একটি স্কুল ছিল বাস্তুচ্যুত পরিবারগুলোর আশ্রয়স্থল। ইসরায়েলি বাহিনী ওই স্কুলে বোমা হামলা চালালে শিশুসহ বেশ কয়েকজন নিহত হন।
এদিন ইসরায়েলি বাহিনী কামাল আদওয়ান হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে। হাসপাতালে গুলি চালানোর পর কয়েকজন আহত হন। হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন, আইসিইউ এবং প্রসূতি বিভাগে সরাসরি গুলি চালানো হয়। একই দিন, উত্তর গাজার জাবালিয়ায় অবস্থিত আল-আওদা হাসপাতালে গুলি চালানোর খবর পাওয়া গেছে।
আল-জাজিরা আরবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাসপাতালগুলোর ওপর হামলার পাশাপাশি ইসরায়েলি বাহিনী মধ্য গাজার নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে বেশ কয়েকটি ভবন ধ্বংস করেছে। মঙ্গলবার রাতে ওই শিবিরে এক বিমান হামলায় আরও চারজন নিহত হন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রো আধানম গ্যাব্রিয়েসুস এসব হামলাকে ‘গভীর উদ্বেগজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন এবং গাজায় ‘তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি’ দাবি করেছেন।
এদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময় নিয়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আলোচনা চলছে। একটি শীর্ষ ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছে, ৯০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে, তবে এখনও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সমঝোতা বাকি রয়েছে। দোহায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় গাজার সীমান্ত বরাবর একটি বাফার জোন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে ইসরায়েল সামরিক উপস্থিতি বজায় রাখবে।
গাজায় গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৫ হাজার ২২৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং লক্ষাধিক আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গাজার এই হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে।