প্রায় তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যুদ্ধ বন্ধে আলোচনায় বসার প্রস্তুতির কথা ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে যে কোনো সময় যুদ্ধ থামাতে আলোচনা করতে প্রস্তুত। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের নতুন প্রজন্মের রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ‘ওরেশনিক’-এর কার্যকারিতা নিয়ে তোলা সংশয়ের জবাবে তাদের একটি চ্যালেঞ্জও দিয়েছেন।
পুতিন বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে এবং রুশ সেনারা এক বর্গ কিলোমিটারের ভূখণ্ডে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে নিচ্ছে। তবে, যুদ্ধের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা সম্পর্কে রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট—যুদ্ধে বিজয়ী হতে রাশিয়া ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলের দাবি ছাড়তে রাজি নয়। যুদ্ধের অগ্রগতির পাশাপাশি গত মাসে রাশিয়া তার পারমাণবিক অস্ত্র নীতি পরিবর্তন করে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে এই অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলে।
গত বৃহস্পতিবার একটি চার ঘণ্টাব্যাপী সংবাদ সম্মেলনে পুতিন জানান, তিনি কোনো আলোচনায় বসতে প্রস্তুত, তবে অন্য পক্ষও এতে অংশ নিতে ইচ্ছুক কি না তা দেখতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় আলোচনা ও আপসের কথা বলে আসছি।’ তার এই বক্তব্য থেকে একদিকে যুদ্ধ বন্ধের আশার আলো দেখা গেলেও, অন্যদিকে রুশ দখলকৃত অঞ্চলের দাবির প্রশ্নে পুতিনের আপস না করার মনোভাবও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
পুতিনের ক্ষেপণাস্ত্র চ্যালেঞ্জের বিষয়ে, তিনি বলেন, ‘পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা যদি ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন, আমরা তাদের সঙ্গে এক পরীক্ষায় অংশ নিতে প্রস্তুত।’ ওরেশনিক ক্ষেপণাস্ত্রের গতি শব্দের চেয়ে ১০ গুণ বেশি এবং এটি অত্যন্ত শক্তিশালী। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি পৃথিবীতে প্রতিরোধযোগ্য এমন কোনো ব্যবস্থা নেই।
বিশ্লেষকরা পুতিনের এই বক্তব্যকে একটি মিশ্র সংকেত হিসেবে দেখছেন। পুতিনের যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা করার প্রস্তুতির কথা থেকে একটি সম্ভাব্য আপসের আভাস মিললেও, তার দখলকৃত অঞ্চল ছাড়ার মনোভাব এখনো অস্পষ্ট।