মিশরের রাজধানী কায়রোতে ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের একটি বিশেষ অধিবেশনে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতা বন্ধে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় ফিলিস্তিন সংকটের দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের জন্য বাংলাদেশের অবিচল অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
গাজা ও লেবাননে মানবিক সংকট এবং পুনর্গঠন চ্যালেঞ্জ বিষয়ে আয়োজিত বিশেষ অধিবেশনে ড. ইউনূস বলেন, “গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ১৪ মাস ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যা অব্যাহত রয়েছে। এই বর্বরতা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়।” তিনি আরও জানান, ইসরায়েলের নির্লজ্জ অবজ্ঞায় আন্তর্জাতিক আইন ও নিয়মনীতি চলতে থাকার ফলে পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন হয়ে উঠেছে, যা গোটা অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশিরা বরাবরই ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে দৃঢ়ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা সবসময় ইসরায়েলের অবৈধ দখলদারত্ব এবং সহিংস দমন-পীড়নের নিন্দা জানিয়েছি।” তিনি উল্লেখ করেন, গত ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ফিলিস্তিনিদের অধিকার ও ইসরায়েলের দখলদারত্ব নিয়ে বিস্তারিত বিবৃতি দিয়েছে, এবং আদালতও ইসরায়েলের দখলদারত্বকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেছে।
বাংলাদেশের গভীর উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, “প্রতিটি ফিলিস্তিনির জীবন গুরুত্বপূর্ণ। এটি কেবল মুসলমানদের জন্য উদ্বেগজনক বিষয় নয়, বরং এটি একটি মানবাধিকারের বিষয় যেখানে মানুষের মর্যাদার পরীক্ষা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যে প্রায় ৬০ লাখ বাংলাদেশি শ্রমিক ও প্রবাসী রয়েছে, যারা এই অঞ্চলের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাদের নিরাপত্তাও বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এছাড়া, তিনি গাজা, পপশ্চিম তীর ও লেবাননের পুনর্গঠনের চিন্তাভাবনাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান। জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে, ইসরাইলি হামলার ফলে গাজায় প্রায় ৪০ মিলিয়ন টন ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে, যা অপসারণ করতে কমপক্ষে ১৫ বছর সময় লাগতে পারে। এ অবস্থায়, ডি-৮ নেতাদের কাছে তিনি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য আবেদন জানান।