রাশিয়ার কাজানে অনুষ্ঠিত ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের অবকাশে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও ভারত-রাশিয়া ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং ইরানের চাবাহার বন্দরসহ বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। এই বৈঠকগুলোতে ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি, এবং দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে।
পুতিনের সঙ্গে বৈঠক:
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে মোদির বৈঠকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ। মোদি পুনরায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দেন এবং ভারতের পক্ষ থেকে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেন। এ বিষয়ে মোদি বলেন, “যুদ্ধের সমাধান হতে হবে কূটনৈতিকভাবে।” এছাড়া, ভারত-রাশিয়ার ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতা বজায় রাখার ব্যাপারে দুই দেশের নেতারা ঐক্যমত পোষণ করেন। মোদি পুতিনকে ব্রিকস সম্মেলনের সফল আয়োজনের জন্য অভিনন্দনও জানান।
ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক:
ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেসকিয়ানের সঙ্গে বৈঠকেও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ে মোদি উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ইরানের সঙ্গে ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের বিষয়ে কথা বলেন। ইরানের চাবাহার বন্দর প্রকল্প এবং ইন্টারন্যাশনাল নর্থ-সাউথ ট্রান্সপোর্ট করিডোর (আইএনএসটি) নিয়েও দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট মোদির প্রশংসা করে বলেন, “ভারত একটি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে তার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
ভারত-চীন বৈঠকের প্রস্তুতি:
ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। গালওয়ান সংঘর্ষের পর পাঁচ বছর পর এই প্রথম তাদের বৈঠক হতে যাচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনের জন্য নতুন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা দুই দেশের সুসম্পর্কের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কূটনৈতিক মহলের প্রতিক্রিয়া:
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ব্রিকস সম্মেলনে মোদি এবং শির বৈঠক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। সীমান্ত চুক্তি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।