পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের বোলান জেলার মুশকাফ এলাকায় জাফর এক্সপ্রেস নামে যাত্রীবাহী ট্রেনে বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) নামে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যরা হামলা চালিয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) এ হামলায় ট্রেনের চালক গুরুতর আহত হয়েছেন এবং ট্রেনটি প্রায় ১৮২ জন যাত্রীকে জিম্মি করে নিয়েছে।
হামলার পর জাফর এক্সপ্রেস-এ থাকা প্রায় ৫০০ যাত্রীর মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি পাকিস্তানি সেনা, পুলিশ এবং অ্যান্টি টেররিজম ফোর্স সদস্যদের আটকে রাখা হয়েছে। এ হামলার সময়ে বালুচ বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি পাকিস্তানি নিরাপত্তা বাহিনীর উপর গুলি চালিয়ে তাদের ২০ সদস্য হত্যা করেছে এবং একটি ড্রোন ভূপাতিত করেছে। হামলাকারীরা নারী, শিশু, বালোচ নাগরিকদের মুক্তি দিয়েছে, তবে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের আটকে রেখেছে।
ট্রেনটি মাচের পাহাড়ি এলাকা অতিক্রম করার সময় সশস্ত্র বিদ্রোহীরা এটি থামিয়ে ফেলতে বাধ্য করে এবং তারপর যাত্রীদের জিম্মি করা হয়। পাকিস্তানের রেলওয়ে পুলিশ এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। তবে হামলার পর বেলুচিস্তান সরকার দ্রুত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং সেনাবাহিনী একটি বিশেষ উদ্ধারকারী টিম পাঠিয়েছে। এ সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে, তারা টানেলের কাছে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন এবং বর্তমানে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধ চলছে।
বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা যাত্রীদের মধ্যে ১৮২ জনকে পণবন্দী করেছে এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, যদি তারা অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়, তবে এক ঘণ্টার মধ্যে জিম্মিদের হত্যা করা হবে।
সশস্ত্র গোষ্ঠীটির দাবি, পাকিস্তান সরকার বেলুচিস্তান অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ কেড়ে নিচ্ছে এবং বেলুচ জাতিগোষ্ঠীকে তাদের অধিকার দেওয়া হচ্ছে না।
এদিকে, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি এ হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, “যারা নিরপরাধ যাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, তারা মানবতার শত্রু। তাদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।”
এই হামলার পর পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভুয়া তথ্য ছড়ানোর জন্য ভারতীয় মিডিয়া ও পাকিস্তানবিরোধী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্টার এবং ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ জনগণকে এসব গুজব থেকে সাবধান থাকতে এবং শুধুমাত্র নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে তথ্য গ্রহণ করতে অনুরোধ করেছে।