মিথ্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও অব্যাহতি পেতে মৌলভীবাজারে এক ভুক্তভোগী পরিবার সংবাদ সম্মেলন করেছে।
শনিবার (০১ মার্চ) দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে রাজনগর উপজেলার সারমপুর গ্রামের এক পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অভিযুক্তের চাচি ফাতেহা বেগম। এ সময় তিনি একই পরিবারের সদস্য আতিকুর রহমান সুয়েব এর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, আতিকুর রহমান সুয়েব আমাদের পরিবারের সদস্য। সারমপুর গ্রামের মো. বশির আহমদের পুত্র সুয়েব আহমদ পরিবারের লোক হলেও দুষ্টু লোকের ছত্রছায়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। সে বিএনপির সময়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সময়ে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে মানুষের চরম ক্ষতিসাধন করে। তার অনেক বাহিনী আছে। সে বিগত ১৫-১৬ বছর যাবৎ চাঁদাবাজি এবং মিথ্যা মামলা দিয়ে অনেক লোককে হয়রানি করে আসছে।
নদী লুটকে কেন্দ্র করে বিগত দুই বছর আগে গ্রামের আরজু মিয়া নামের এক ব্যক্তির হাত-পা কেটে পঙ্গু বানিয়ে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরজু মিয়া বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরে তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে মামলা তুলে নেওয়া হয়।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইস্যু কাজে লাগিয়ে গেল ৪ আগস্ট ঘটনা দেখিয়ে গেল ২০ ফ্রেব্রুয়ারি রাজনগর থানায় পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণের একটি মামলা (নং-০৭) দায়ের করেন। ওই মামলায় আসামি করেন আপন চাচা নিরীহ আনছার আলী রুশন (৫৫), আপন চাচাতো ভাই রাাকিন আহমদ বাবু (১৮), চাচাতো ভাই ফাহান আহমদ (১৯), চাচাতো ভাই রাকিম আহমদ (১৯) ও গ্রামের আরজু মিয়া (৪৫), জরিফ মিয়া(৪৭), দেলোয়ার মিয়া (৩৬) সহ অজ্ঞাতনামা আরও বেশ ক’জনকে।
তিনি বলেন, আমার স্বামী আনছার আলী রুশনকে ৩ যুগ পর প্রবাস থেকে দেশে আসার পর তার ছেলের সাথে সুয়েব এর ভাইয়ের মারামারির ঘটনায় সুয়েবের ভাই মারা যায়। এ ঘটনায় হুকুমদাতা হিসেবে তাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। অথচ এরা একই পরিবারের দুই পুত্র ছিল। আনছার আলী কিছুই জানতেন না। ওই বিচ্ছিন্ন ঘটনায় পরে এডভোকেট সৌরভ ভট্টাচার্যের মধ্যস্থতায় ৫ লাখ টাকা নগদ ও কিছু জমি বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু টাকা পাবার পরও মামলা তুলে আনেননি। এরপরও তিনি আরও ৭০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করছেন।
তিনি বলেন, তার মা রুকেয়া বেগম, বোন রিমি বেগম ও তার ভাই যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাজ্জাদুর রহমান জুসেফ মামলার আসামি আনছার আলী নিরপরাধ মর্মে আদালতে স্বাক্ষ্য দেন। কিন্তু সুয়েবের ছলচাতুরির কারণে একটি পরিবার ধুকে ধুকে মরছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের জরিফ মিয়া প্রবাস থেকে দেশে আসলে সুয়েব ও তার বাহিনীর তার সম্পত্তির উপর নজর পড়ে এবং চাঁদা দাবি করে। রাজি না হওয়ায় হামলা ও মামলা দিয়ে হয়রানি করে। তার সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ভয় পেয়ে জরিফ মিয়া বাড়ি ছেড়ে মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাট বাসায় বসবাস করছেন। পরে গেল ৪ঠা আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলা দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়াও, গ্রামের শিবলু মিয়া ও দেলোয়ার মিয়াকে এভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করে সুয়েব। কাল্পনিক বিস্ফোরনের মিথ্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের দাবিতে তিনি সাংবাদিকদের সহযোগীতা কামনা করেন। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অভিযুক্ত সুয়েবের চাচি রাহেলা বেগম, গ্রামের জরিফ মিয়ার স্ত্রী ছালেহা বেগম ও জুনেল আহমদ প্রমূখ।