বিদ্যমান সংবিধান পর্যালোচনা ও মূল্যায়নের জন্য সংবিধান সংস্কারের আলোচনার মধ্যে ১৯৭২ সালে রচিত বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানের ‘জন্ম’ ভারতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান।
বুধবার (০৯ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে জামায়াতে ইসলামীর তরফে ‘রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনা’ তুলে ধরার পর প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানটি ‘জন্মভূমি হিসেবে বাংলাদেশকে পায়ন।’ এছাড়া তিনি ১০ দফা সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরেন।
জামায়াত আমির বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসুক, আমরা চাই কি না এমন প্রশ্ন এসেছে। তারা কি নির্বাচন করেছিলো, না। তারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলো? তারা নির্বাচন চায়নি। এজন্য রাতের অন্ধকারে ভোট করেছিল পুলিশ আর প্রশাসন দিয়ে। যারা নির্বাচন চায় না, তাদের ওপর নির্বাচন চাপায়ে দিলেতো জুলুম হবে। এটাও একটা বৈষম্য হবে।’
আগে নির্বাচন, না আগে সংস্কার এমন প্রশ্নে জামায়াত আমির বলেন, দু’টি রোডম্যাপ হবে। একটা সংস্কারের আর একটা নির্বাচনের। তবে সময় যেনো অতি দীর্ঘ না হয়, আবার অতি সংক্ষিপ্ত না হয়।
পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা সম্পর্কে তিনি বলেন, দেশে অনেকগুলো রাজনৈতিক দল। অনেকে স্বতন্ত্র নির্বাচন করেন। তাদের জন্য তো কোনো কোটা নির্ধারণ করা নেই। যারা রাজনৈতিক দল করেন তাদের জন্য ৫১ বা ৪৯। এর ব্যবধানে কেউ হয়ে যায় অধিকাংশ সিটের মালিক। কেউ হয়ে যান ৩০ সিটের মালিক। এতে করে জনগণের জনমতের প্রতিনিধিত্বটা সঠিক হয় না। আবার লেজিসলেটিভ বডিতে যারা থাকবেন তাদের ক্রিটিক্যাল পরিস্থিতি বিশ্লেষণের যোগ্যতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এমন এমন ব্যক্তি এসেছেন যাদের সংবিধানের মৌলিক বিষয়ে প্রশ্ন করলে বিব্রত হতেন।
তিনি বলেন, সংগত তারা দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করবে না। সেজন্য যোগ্য ব্যক্তিরা আসুক। একটা বর্ণাঢ্য সংসদ গড়তে হলে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণ থাকবে। জনগণ ভোট দেবে দলকে, দলের প্রতীককে। ব্যক্তি কাউকে নয়। এই ভোটে প্রত্যেকটি দল প্যানেল সাপোর্ট করবে। ভোটে তারাই নির্বাচিত হবে প্রপর্শন অনুযায়ী। এতে কম যোগ্য লোকও নির্বাচিত হবে না আবার বেশি যোগ্য কেউ বাদ পড়বে না।
১৯৭২ সালে যে সংবিধান ভারতে বসে রচিত হয়েছিল জানিয়ে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশে বসেও রচনা করা যেতো। শুধু ভারত বা অন্য কোনো দেশের এক্সপার্টকে আনতে পারতাম। আমাদের সংবিধান জন্মভূমি হিসেবে বাংলাদেশকে পায়নি। যদিও এটা স্বাধীন সংসদে পাস হয়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করলাম মুজিব সাহেব থাকা অবস্থায় পার্লামেন্টে ৭ মিনিটের বক্তব্যের পর বাকশাল কায়েম হলো। আমাদের সংবিধান যেনো মতলবি সংবিধান না হয়। শুধু নির্বাচন নয়, সমগ্রিক সমাজ কাঠামো ধরে সংবিধান হতে হবে।
অনুষ্ঠানে জামায়াত আমির বলেন, গণহত্যায় জড়িত যারা পালিয়ে গেছে, তাদের ফিরিয়ে এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।