জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে গত বছর শুরু হওয়া মুজিববর্ষ কার্যক্রমের নামে ব্যাপক রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে একটি বিস্তারিত ডকুমেন্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, “মুজিববর্ষে কি ধরনের কাজ হয়েছে, কত টাকা অপচয় হয়েছে, এবং মুজিববর্ষের নামে কোন মন্ত্রণালয় কত টাকা খরচ করেছে তা নিয়ে ডকুমেন্টেশন করা হবে।”
৭ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি-তে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান শফিকুল আলম। এর আগে সকালে তেজগাঁও-এ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
শফিকুল আলম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আমরা জানি, মুজিববর্ষকে ঘিরে কিভাবে এক ধরনের উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু কত টাকা খরচ করা হয়েছে এবং সেই অর্থের কী পরিমাণ অপচয় হয়েছে সেটা ডকুমেন্ট করে জনগণের সামনে আনা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জোর করে মুজিবের ম্যুরাল তৈরি করতে বাধ্য করা হয়েছে, তবে এসব খাতে সরকারের লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।”
প্রেস সচিব বলেন, “এত টাকা অপচয় হওয়ার পরও আমরা যখন আইএমএফ থেকে ঋণ চাইছি, তখন কি মুজিববর্ষের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট করা উচিত ছিল?”
“এটা আমাদের করদাতাদের টাকা, যারা তাদের পরিশ্রমের টাকায় এই অর্থ যুগিয়েছে, সুতরাং এটি সঠিকভাবে ব্যয় করা উচিত।” শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, তারা একটি পত্রিকার রিপোর্ট পড়েছেন যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, শুধুমাত্র ম্যুরাল তৈরির নামে ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়ে গেছে এবং প্রায় ১০ হাজার মূর্তি তৈরি করা হয়েছে।
অপচয় বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “পদ্মাসেতুতে দুটি ম্যুরাল বানানোর জন্য ১১৭ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এটা কি মেনে নেয়া যায়?”
শফিকুল আলম জানান, প্রথমে ডকুমেন্টেশন সম্পন্ন করার পরে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং ওই সময় অপচয়ের পরিমাণ এবং দায়িত্বশীলদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা-এর উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও অপূর্ব জাহাঙ্গীর।