মাগুরায় জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী হৈমন্তী-কাত্যানী পূজা শুরু হয়েছে। এই উৎসবকে ঘিরে মাগুরা শহরে সাজানো হয়েছে দৃষ্টিনন্দন গেট (ত্বরণ)। কাত্যানী পূজার দৃষ্টিনন্দন আলোকসজ্জা তরুণ ও প্যান্ডেলের মূল আকর্ষণ। যা দেখতে পার্শ্ববর্তী জেলাসহ দেশ-বিদেশ থেকেও আসেন আত্মীয়-স্বজনসহ শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
পূজা উদযাপন কমিটির সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে এই উৎসব। আগামী সোমবার (১১ নভেম্বর) বিজয়া দশমী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই কাত্যানী পূজা। এ বছর জেলায় মোট ৮১ টি মণ্ডপ কাত্যানী পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তার মধ্যে পৌরসভার ১৬ টি স্থানে পূজা হচ্ছে। আরো জানা যায়, বাংলার নবাব আলীবর্দী খাঁর সময় ১১৫০ সনে জগধাত্রী পূজা প্রথম উদযাপিত হয় মাগুরা সদর উপজেলার কান্দা বাশঁকোটা গ্রামে। সেই সময় থেকেই জেলায় এই কাত্যানী পূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এই কাত্যানী পূজাকে কেন্দ্র করে জেলায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গত বুধবার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ওয়াহিদুল ইসলামসহ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিভিন্ন পূজা মন্দির পরিদর্শন করেন। এ সময় অন্যান্যর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের ৪৪ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মিজানুর রহমান, ১৪ ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর এম এম জিল্লুর রহমানসহ অন্যান্যরা।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় সরজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন মণ্ডপে প্রতিমাগুলো আকর্ষণীয় রঙে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শহরের প্রতিটি কাটতেনী মণ্ডপ সাজানো হয়েছে আকর্ষণীয় দৃষ্টিনন্দন গেট (ত্বরণ) একই সাথে তৈরী হয়েছে বিশাল বিশাল আলোকসজ্জার প্রবেশদ্বার। সন্ধ্যা থেকে শুরু হয়ে প্রতিটি প্যান্ডেলে আলোকসজ্জা চলবে রাতভর। পূজা প্যান্ডেলের এই আকর্ষণীয় আলোকসজ্জা দেখতে ইতোমধ্যে মাগুরায় আসতে শুরু করেছে আত্মীয়-স্বজনসহ দেশি-বিদেশি থেকে আসা ভক্তবৃন্দরা। এ পূজাকে কেন্দ্র করে প্রতিটি মন্দিরের সামনে বসেছে মেলা। এ মেলা মাসব্যাপী চলবে।
ভারত কলকাতা থেকে কাকদানি পূজা দেখতে আসা সুধীর মণ্ডল বলেন, মাগুরার কাটতানি এশিয়ার বিখ্যাত পূজা। এই পূজা দেখতে আমি প্রতিবছরই আত্মীয়র বাড়িতে আসি।
পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বাসুদেব কুন্ডু জানান, কাত্যানী পূজা মাগুরা জেলায় শত বছরের ঐতিহ্য। প্রতি বছর এ উৎসব উপলক্ষে দেশ বিদেশ থেকে আসা লাখো মানুষের ঢল নামে। প্রশাসনের যে তৎপরতা দেখতেছি তাতে আশা রাখছি ভালো পরিবেশের মধ্য দিয়ে কাত্যানী পূজা সম্পন্ন হবে।
পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বিপিএম বলেন, কাত্যানী পূজাকে কেন্দ্র করে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাথা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর সাথে সেনাবাহিনী এবং প্রয়োজনে র্যাব থাকবে। আশা করি কাত্যানী পূজাকে কেন্দ্র করে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না।