ঢাকা ০৩:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
ঢাকা ওয়াসায় কর্মচারীরা বিক্ষোভ: ডিএমডি (অর্থ ও প্রশাসন) আকতারুজ্জামানকে বের করে দিয়েছে কর্মচারীরা মাগুরায় শুরু হয়েছে ঐতিহ্যবাহী কাত্যানী পূজা মিঠাপুকুরে জোরপূর্বক কৃষকের জমির ধান কেটে নেওয়ার অভিযোগ অন্তর্বর্তীকালীন রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন: জনমনে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শোভাযাত্রা শ্রীমঙ্গলে সেনাবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্রসহ আটক- ৬ যশোরে টেন্ডার নিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে লাঞ্ছিতের ঘটনায় যুবদল নেতা বহিষ্কার ওজন নিয়ে সমালোচনার জবাবে সোজাসাপটা জবাব দিলেন সামান্থা সংসার করতে চান বাঁধন, একান্ত সঙ্গীর খোঁজে ক্ষমতা হস্তান্তরের ঘোষণা দিলেন বাইডেন ঝিনাইদহের সাবেক এমপি তাহজীব সিদ্দিকী গ্রেপ্তার বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল
ডিমের দাম, ডিমের বাজার, দ্রব্যমূল্য,

ডিমের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতাদের ক্ষোভ, সরকারের নির্ধারিত দাম বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৩৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

দেশের বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশিত হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকার যদিও ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে, বাস্তবে সেই নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না এবং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে। পাইকারি বাজারেও ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে, যার ফলে অনেক দোকানে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, পাইকারি বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না, যা খুচরা বাজারে সংকট সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি উৎপাদক, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে ডিমের নতুন দাম পুনঃনির্ধারণ করেছে সরকার। উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সরকারের ঘোষিত নতুন এই মূল্য অনুযায়ী, ভোক্তারা প্রতি ডজন ডিম ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সায় কিনতে পারবেন। তবে বাজারের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

গরীবের আমিষ হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম গত এক মাসের বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। যারা মাছ ও মাংস কিনতে পারছেন না, তারা মূলত ডিমের উপর নির্ভর করতেন। এ অবস্থায় ক্রেতারা এখন বিপাকে পড়েছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টাস্কফোর্স ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার তদারকি টিম নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি না হলে জরিমানা করার হুমকি দেওয়ার পরও অনেক আড়তদার ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী হাজী রবিউল আলম বলেন, “সরকার ১১.১ টাকায় ডিম বিক্রি করতে বলছেন, কিন্তু আমরা প্রতিটি ডিম কিনছি ১৩ টাকায়। তাই ডিম আনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী ডিমও নেই।”

চট্টগ্রামের ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর লিটন জানান, “সরকারি দামে ডিম ক্রয় ও বিক্রি করা যাচ্ছে না। উৎপাদন পর্যায় থেকে ১০ টাকা ৫৮ পয়সায় ডিম কিনতে বলা হলেও বাস্তবে আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকার বেশি।”

এদিকে, সরকার রাজধানীর ২০টি স্পটে ১৩০ টাকা ডজন দরে ডিম বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও এই উদ্যোগ সীমিত, তবুও এটি সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। স্থানে রয়েছে সচিবালয় এলাকার খাদ্য ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ, মিরপুর-১০, বাসাবো, বছিলা, রায়ের বাজার, রাজারবাগ, মুগদা উত্তর ও দক্ষিণ, পলাশী মোড়, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, বেগুনবাড়ী, উত্তর খান, দক্ষিণ খান, কামরাঙ্গীরচর, রামপুরা ও জিগাতলা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, “ডিমের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে। ৭০ শতাংশ দাম ফিডের খরচের ওপর নির্ভর করে, কিন্তু এই ফিডের দাম তো বৃদ্ধি পায়নি। তাহলে দামটা বাড়লো কেন?” তিনি আরও বলেন, “এখন অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত।”

ক্রেতাদের মধ্যে এই অস্থিরতা ও অসন্তোষ চলতে থাকলে, বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা ওয়াসায় কর্মচারীরা বিক্ষোভ: ডিএমডি (অর্থ ও প্রশাসন) আকতারুজ্জামানকে বের করে দিয়েছে কর্মচারীরা

ডিমের দাম, ডিমের বাজার, দ্রব্যমূল্য,

ডিমের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতাদের ক্ষোভ, সরকারের নির্ধারিত দাম বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না

আপডেট সময় ১১:৩৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

দেশের বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশিত হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকার যদিও ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে, বাস্তবে সেই নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না এবং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে। পাইকারি বাজারেও ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে, যার ফলে অনেক দোকানে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, পাইকারি বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না, যা খুচরা বাজারে সংকট সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি উৎপাদক, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে ডিমের নতুন দাম পুনঃনির্ধারণ করেছে সরকার। উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সরকারের ঘোষিত নতুন এই মূল্য অনুযায়ী, ভোক্তারা প্রতি ডজন ডিম ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সায় কিনতে পারবেন। তবে বাজারের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

গরীবের আমিষ হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম গত এক মাসের বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। যারা মাছ ও মাংস কিনতে পারছেন না, তারা মূলত ডিমের উপর নির্ভর করতেন। এ অবস্থায় ক্রেতারা এখন বিপাকে পড়েছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টাস্কফোর্স ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার তদারকি টিম নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি না হলে জরিমানা করার হুমকি দেওয়ার পরও অনেক আড়তদার ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী হাজী রবিউল আলম বলেন, “সরকার ১১.১ টাকায় ডিম বিক্রি করতে বলছেন, কিন্তু আমরা প্রতিটি ডিম কিনছি ১৩ টাকায়। তাই ডিম আনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী ডিমও নেই।”

চট্টগ্রামের ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর লিটন জানান, “সরকারি দামে ডিম ক্রয় ও বিক্রি করা যাচ্ছে না। উৎপাদন পর্যায় থেকে ১০ টাকা ৫৮ পয়সায় ডিম কিনতে বলা হলেও বাস্তবে আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকার বেশি।”

এদিকে, সরকার রাজধানীর ২০টি স্পটে ১৩০ টাকা ডজন দরে ডিম বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও এই উদ্যোগ সীমিত, তবুও এটি সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। স্থানে রয়েছে সচিবালয় এলাকার খাদ্য ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ, মিরপুর-১০, বাসাবো, বছিলা, রায়ের বাজার, রাজারবাগ, মুগদা উত্তর ও দক্ষিণ, পলাশী মোড়, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, বেগুনবাড়ী, উত্তর খান, দক্ষিণ খান, কামরাঙ্গীরচর, রামপুরা ও জিগাতলা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, “ডিমের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে। ৭০ শতাংশ দাম ফিডের খরচের ওপর নির্ভর করে, কিন্তু এই ফিডের দাম তো বৃদ্ধি পায়নি। তাহলে দামটা বাড়লো কেন?” তিনি আরও বলেন, “এখন অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত।”

ক্রেতাদের মধ্যে এই অস্থিরতা ও অসন্তোষ চলতে থাকলে, বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।