ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
সাংবাদিক নুরুল কবির ও প্রফেসর আসিফ মিজানের সৌজন্য সাক্ষাৎ মৌলভীবাজারের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, কাজ না করে বিল উত্তোলন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর কমলগঞ্জে ভারতীয় শাড়িসহ সিএনজি আটক দাকোপে ইঁদুর দমন অভিযানে আলোচনা সভা বিশ্ববাজারে তেলের দাম আবার বেড়ে গেল, মধ্যপ্রাচ্যে অনিশ্চয়তা বাংলাদেশের নতুন কোচ হিসেবে ফিল সিমন্সের আগমন, হাথুরুসিংহের বিদায় নতুন আইপ্যাড মিনি বাজারে আনার ঘোষণা দিল অ্যাপল ৮ টি জাতীয় দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার ১২ বিচারপতিকে চায়ের আমন্ত্রণ প্রধান বিচারপতির শেখ হাসিনার নাম সম্বলিত প্রতিষ্ঠানগুলো শহীদদের নামে করার দাবি করলেন জয়নুল আবদীন ফারুক
সংবাদ শিরোনামঃ
মৌলভীবাজারের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, কাজ না করে বিল উত্তোলন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর দুদকের জালে সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম অবশেষে দুর্নীতিপরায়ন স্থানীয় সরকার সচিব আবু হেনা মোর্শেদ জামান ওএসডি যশোরে পশুর হাটে চলছে লুটপাট, ইউএনও-র নামে মিথ্যা বিজ্ঞাপন তাকসিম সিন্ডিকেটের সুবিধাভোগীরা এখনো বহাল তবিয়তে শ্রীমঙ্গলে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর চাল আত্মসাতের অভিযোগ পাবনায় সাবেক ২ মেয়র ও কাউন্সিলরসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা মাদকের গডফাদারদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির শাহরিয়ার কবির গ্রেপ্তার মেয়র আতিকের এপিএস ফরিদের দুর্নীতির শত শত কোটি টাকা তার মালিকানা নগদ ডিস্ট্রিবিউশন এফ আর ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল সহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নামে
ডিমের দাম, ডিমের বাজার, দ্রব্যমূল্য,

ডিমের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতাদের ক্ষোভ, সরকারের নির্ধারিত দাম বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৩৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • ১ বার পড়া হয়েছে

দেশের বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশিত হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকার যদিও ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে, বাস্তবে সেই নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না এবং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে। পাইকারি বাজারেও ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে, যার ফলে অনেক দোকানে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, পাইকারি বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না, যা খুচরা বাজারে সংকট সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি উৎপাদক, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে ডিমের নতুন দাম পুনঃনির্ধারণ করেছে সরকার। উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সরকারের ঘোষিত নতুন এই মূল্য অনুযায়ী, ভোক্তারা প্রতি ডজন ডিম ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সায় কিনতে পারবেন। তবে বাজারের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

গরীবের আমিষ হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম গত এক মাসের বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। যারা মাছ ও মাংস কিনতে পারছেন না, তারা মূলত ডিমের উপর নির্ভর করতেন। এ অবস্থায় ক্রেতারা এখন বিপাকে পড়েছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টাস্কফোর্স ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার তদারকি টিম নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি না হলে জরিমানা করার হুমকি দেওয়ার পরও অনেক আড়তদার ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী হাজী রবিউল আলম বলেন, “সরকার ১১.১ টাকায় ডিম বিক্রি করতে বলছেন, কিন্তু আমরা প্রতিটি ডিম কিনছি ১৩ টাকায়। তাই ডিম আনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী ডিমও নেই।”

চট্টগ্রামের ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর লিটন জানান, “সরকারি দামে ডিম ক্রয় ও বিক্রি করা যাচ্ছে না। উৎপাদন পর্যায় থেকে ১০ টাকা ৫৮ পয়সায় ডিম কিনতে বলা হলেও বাস্তবে আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকার বেশি।”

এদিকে, সরকার রাজধানীর ২০টি স্পটে ১৩০ টাকা ডজন দরে ডিম বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও এই উদ্যোগ সীমিত, তবুও এটি সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। স্থানে রয়েছে সচিবালয় এলাকার খাদ্য ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ, মিরপুর-১০, বাসাবো, বছিলা, রায়ের বাজার, রাজারবাগ, মুগদা উত্তর ও দক্ষিণ, পলাশী মোড়, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, বেগুনবাড়ী, উত্তর খান, দক্ষিণ খান, কামরাঙ্গীরচর, রামপুরা ও জিগাতলা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, “ডিমের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে। ৭০ শতাংশ দাম ফিডের খরচের ওপর নির্ভর করে, কিন্তু এই ফিডের দাম তো বৃদ্ধি পায়নি। তাহলে দামটা বাড়লো কেন?” তিনি আরও বলেন, “এখন অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত।”

ক্রেতাদের মধ্যে এই অস্থিরতা ও অসন্তোষ চলতে থাকলে, বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক নুরুল কবির ও প্রফেসর আসিফ মিজানের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ডিমের দাম, ডিমের বাজার, দ্রব্যমূল্য,

ডিমের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতাদের ক্ষোভ, সরকারের নির্ধারিত দাম বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না

আপডেট সময় ১১:৩৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

দেশের বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশিত হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকার যদিও ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে, বাস্তবে সেই নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না এবং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে। পাইকারি বাজারেও ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে, যার ফলে অনেক দোকানে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, পাইকারি বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না, যা খুচরা বাজারে সংকট সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি উৎপাদক, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে ডিমের নতুন দাম পুনঃনির্ধারণ করেছে সরকার। উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সরকারের ঘোষিত নতুন এই মূল্য অনুযায়ী, ভোক্তারা প্রতি ডজন ডিম ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সায় কিনতে পারবেন। তবে বাজারের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

গরীবের আমিষ হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম গত এক মাসের বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। যারা মাছ ও মাংস কিনতে পারছেন না, তারা মূলত ডিমের উপর নির্ভর করতেন। এ অবস্থায় ক্রেতারা এখন বিপাকে পড়েছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টাস্কফোর্স ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার তদারকি টিম নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি না হলে জরিমানা করার হুমকি দেওয়ার পরও অনেক আড়তদার ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী হাজী রবিউল আলম বলেন, “সরকার ১১.১ টাকায় ডিম বিক্রি করতে বলছেন, কিন্তু আমরা প্রতিটি ডিম কিনছি ১৩ টাকায়। তাই ডিম আনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী ডিমও নেই।”

চট্টগ্রামের ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর লিটন জানান, “সরকারি দামে ডিম ক্রয় ও বিক্রি করা যাচ্ছে না। উৎপাদন পর্যায় থেকে ১০ টাকা ৫৮ পয়সায় ডিম কিনতে বলা হলেও বাস্তবে আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকার বেশি।”

এদিকে, সরকার রাজধানীর ২০টি স্পটে ১৩০ টাকা ডজন দরে ডিম বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও এই উদ্যোগ সীমিত, তবুও এটি সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। স্থানে রয়েছে সচিবালয় এলাকার খাদ্য ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ, মিরপুর-১০, বাসাবো, বছিলা, রায়ের বাজার, রাজারবাগ, মুগদা উত্তর ও দক্ষিণ, পলাশী মোড়, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, বেগুনবাড়ী, উত্তর খান, দক্ষিণ খান, কামরাঙ্গীরচর, রামপুরা ও জিগাতলা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, “ডিমের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে। ৭০ শতাংশ দাম ফিডের খরচের ওপর নির্ভর করে, কিন্তু এই ফিডের দাম তো বৃদ্ধি পায়নি। তাহলে দামটা বাড়লো কেন?” তিনি আরও বলেন, “এখন অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত।”

ক্রেতাদের মধ্যে এই অস্থিরতা ও অসন্তোষ চলতে থাকলে, বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।