ঢাকা ০৫:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
ইসরায়েলি নেতাদের ট্রাম্পের গাজা উপত্যকা দখলের প্রস্তাবে সমর্থন মিয়ানমারের জান্তা সরকার নারীকে বাধ্যতামূলক সামরিক চাকরিতে অন্তর্ভুক্ত করছে ভারতের পার্লামেন্টে শেখ হাসিনাকে ফেরতের বিষয়ে আলোচনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ‘ধানমন্ডি ৩২’ মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আহত ৪ পুলিশ সদস্য ধানমন্ডি ৩২ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব শেখ মুজিবকে নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এক্সে পোস্টের সত্যতা! অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন আটক ক্ষেতলালে ইউএনওর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ময়মনসিংহে শিশুকে অপহরণ করে লাশ গুমের ঘটনায় যুবকের আমৃত্যু কারাদন্ড মৌলভীবাজারে শেখ মুজিবুর রহমানের দু’টি পৃথক ম্যুরাল ভাংচুর করেছে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা
ডিমের দাম, ডিমের বাজার, দ্রব্যমূল্য,

ডিমের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতাদের ক্ষোভ, সরকারের নির্ধারিত দাম বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না

  • অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৩৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪
  • ৫৩৬ বার পড়া হয়েছে

দেশের বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশিত হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকার যদিও ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে, বাস্তবে সেই নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না এবং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে। পাইকারি বাজারেও ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে, যার ফলে অনেক দোকানে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, পাইকারি বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না, যা খুচরা বাজারে সংকট সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি উৎপাদক, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে ডিমের নতুন দাম পুনঃনির্ধারণ করেছে সরকার। উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সরকারের ঘোষিত নতুন এই মূল্য অনুযায়ী, ভোক্তারা প্রতি ডজন ডিম ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সায় কিনতে পারবেন। তবে বাজারের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

গরীবের আমিষ হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম গত এক মাসের বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। যারা মাছ ও মাংস কিনতে পারছেন না, তারা মূলত ডিমের উপর নির্ভর করতেন। এ অবস্থায় ক্রেতারা এখন বিপাকে পড়েছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টাস্কফোর্স ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার তদারকি টিম নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি না হলে জরিমানা করার হুমকি দেওয়ার পরও অনেক আড়তদার ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী হাজী রবিউল আলম বলেন, “সরকার ১১.১ টাকায় ডিম বিক্রি করতে বলছেন, কিন্তু আমরা প্রতিটি ডিম কিনছি ১৩ টাকায়। তাই ডিম আনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী ডিমও নেই।”

চট্টগ্রামের ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর লিটন জানান, “সরকারি দামে ডিম ক্রয় ও বিক্রি করা যাচ্ছে না। উৎপাদন পর্যায় থেকে ১০ টাকা ৫৮ পয়সায় ডিম কিনতে বলা হলেও বাস্তবে আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকার বেশি।”

এদিকে, সরকার রাজধানীর ২০টি স্পটে ১৩০ টাকা ডজন দরে ডিম বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও এই উদ্যোগ সীমিত, তবুও এটি সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। স্থানে রয়েছে সচিবালয় এলাকার খাদ্য ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ, মিরপুর-১০, বাসাবো, বছিলা, রায়ের বাজার, রাজারবাগ, মুগদা উত্তর ও দক্ষিণ, পলাশী মোড়, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, বেগুনবাড়ী, উত্তর খান, দক্ষিণ খান, কামরাঙ্গীরচর, রামপুরা ও জিগাতলা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, “ডিমের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে। ৭০ শতাংশ দাম ফিডের খরচের ওপর নির্ভর করে, কিন্তু এই ফিডের দাম তো বৃদ্ধি পায়নি। তাহলে দামটা বাড়লো কেন?” তিনি আরও বলেন, “এখন অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত।”

ক্রেতাদের মধ্যে এই অস্থিরতা ও অসন্তোষ চলতে থাকলে, বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
Verified by MonsterInsights

ডিমের দাম, ডিমের বাজার, দ্রব্যমূল্য,

ডিমের মূল্যবৃদ্ধিতে ক্রেতাদের ক্ষোভ, সরকারের নির্ধারিত দাম বাস্তবে কার্যকর হচ্ছে না

আপডেট সময় ১১:৩৩:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪

দেশের বাজারে ডিমের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশিত হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় এই খাদ্যপণ্যের দাম অতিমাত্রায় বেড়ে যাওয়ার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। সরকার যদিও ডিমের দাম নির্ধারণ করেছে, বাস্তবে সেই নির্দেশনার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না এবং পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করেছে।

বর্তমানে ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে খুচরা বাজারে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকার মধ্যে। পাইকারি বাজারেও ডিমের সংকট দেখা দিয়েছে, যার ফলে অনেক দোকানে ডিম পাওয়া যাচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, পাইকারি বিক্রেতারা নির্ধারিত মূল্যে ডিম সরবরাহ করতে পারছেন না, যা খুচরা বাজারে সংকট সৃষ্টি করছে।

সম্প্রতি উৎপাদক, পাইকারি এবং খুচরা পর্যায়ে ডিমের নতুন দাম পুনঃনির্ধারণ করেছে সরকার। উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ টাকা ৯১ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরায় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সরকারের ঘোষিত নতুন এই মূল্য অনুযায়ী, ভোক্তারা প্রতি ডজন ডিম ১৪২ টাকা ৪৪ পয়সায় কিনতে পারবেন। তবে বাজারের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন।

গরীবের আমিষ হিসেবে পরিচিত ডিমের দাম গত এক মাসের বেশি সময় ধরে অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। যারা মাছ ও মাংস কিনতে পারছেন না, তারা মূলত ডিমের উপর নির্ভর করতেন। এ অবস্থায় ক্রেতারা এখন বিপাকে পড়েছেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ টাস্কফোর্স ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের বাজার তদারকি টিম নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। তবে সরকার নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি না হলে জরিমানা করার হুমকি দেওয়ার পরও অনেক আড়তদার ডিম বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

তেজগাঁওয়ের ডিম ব্যবসায়ী হাজী রবিউল আলম বলেন, “সরকার ১১.১ টাকায় ডিম বিক্রি করতে বলছেন, কিন্তু আমরা প্রতিটি ডিম কিনছি ১৩ টাকায়। তাই ডিম আনা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী ডিমও নেই।”

চট্টগ্রামের ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল শুক্কুর লিটন জানান, “সরকারি দামে ডিম ক্রয় ও বিক্রি করা যাচ্ছে না। উৎপাদন পর্যায় থেকে ১০ টাকা ৫৮ পয়সায় ডিম কিনতে বলা হলেও বাস্তবে আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৩ টাকার বেশি।”

এদিকে, সরকার রাজধানীর ২০টি স্পটে ১৩০ টাকা ডজন দরে ডিম বিক্রি করার উদ্যোগ নিয়েছে। যদিও এই উদ্যোগ সীমিত, তবুও এটি সাধারণ ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি নিয়ে এসেছে। স্থানে রয়েছে সচিবালয় এলাকার খাদ্য ভবন, মানিক মিয়া এভিনিউ, মিরপুর-১০, বাসাবো, বছিলা, রায়ের বাজার, রাজারবাগ, মুগদা উত্তর ও দক্ষিণ, পলাশী মোড়, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, গাবতলী, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড, বেগুনবাড়ী, উত্তর খান, দক্ষিণ খান, কামরাঙ্গীরচর, রামপুরা ও জিগাতলা।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানান, “ডিমের দাম বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি রয়েছে। ৭০ শতাংশ দাম ফিডের খরচের ওপর নির্ভর করে, কিন্তু এই ফিডের দাম তো বৃদ্ধি পায়নি। তাহলে দামটা বাড়লো কেন?” তিনি আরও বলেন, “এখন অবিলম্বে তদন্ত হওয়া উচিত।”

ক্রেতাদের মধ্যে এই অস্থিরতা ও অসন্তোষ চলতে থাকলে, বাজারের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।