খেলাফত মজলিস শেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শেরপুরে গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ধর্ম-বর্ণ ভিন্নমত সবার জন্য খেলাফত এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবং ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সংঘটিত গণহত্যার বিচার ও নৈরাজ্যবাদের বিরুদ্ধে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১ টায় শেরপুর শহরের পৌর ঈদগাহ মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শেরপুর জেলা শাখার আয়োজনে ওই গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক।
এ সময় তিনি বলেন, গত ৫ আগস্ট এদেশের মানুষের দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এই স্বাধীনতা অর্জন করতে গিয়ে এদেশের মানুষের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। অনেক জুলুম নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। বছরের পর বছর কারারুদ্ধ, গুম-খুনের শিকার হতে হয়েছে। অনেক মা তার সন্তানকে হারিয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার একদলীয় শাসন আমলে অনেকগুলো গণহত্যা সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও পিলখানায় ৫৭ জন সেনা হত্যা, শাপলা চত্বরে হেফাজতের নেতাকর্মী হত্যা, মিথ্যা মামলায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়াসহ অনেক কোরআন প্রেমিদের পাখির মতো হত্যা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সম্প্রীতির দেশ, এখানে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-মুসলমান সহ সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করবে, তাদের সকল অধিকার ভোগ করবে। যার যার ধর্ম তারা নির্বিঘ্নে পালন করবে, বাঁধা দেয়ার কোনো সুযোগ নেই।
শেখ হাসিনার সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন করা হতো, এখন শেখ হাসিনা সরকার নাই, সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনও নাই। সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের পিছনে শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের হাত ছিল। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বাংলাদেশে পুনর্বাসিত করা হলে এ দেশের মানুষ তা মানবে না। বাংলাদেশে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিল ইনশা আল্লাহ বলার মধ্যে দিয়ে। ইনশা আল্লাহ বলার মানে হল মহান আল্লাহর উপর আস্থা বিশ্বাস রাখার মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম। কিন্তু এ দেশে শেখ হাসিনা ইসলামকে বিতারিত করার পায়তারা করেছিল। ছাত্রজনতা তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
এছাড়াও তিনি আরও বলেন, সমকামীদের নিয়ে শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়েছে, ওই শিক্ষা কমিশনকে বাতিল করতে হবে। তা না হলে ওই শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। কোরআন হাদিসের প্রতিনিধি শিক্ষা কমিশনে রাখতে হবে। সর্বজন গৃহীত শিক্ষা কমিশন গঠন করতে হবে। বাংলাদেশের কোনো আইনেই ইসলাম বিরোধী কোন ধারা মেনে নেওয়া হবে না। আমরা ইসলাম বিরোধী সকল কার্যক্রমের মোকাবেলা করতেছি।
এছাড়াও তিনি ইসলাম রক্ষায় ওয়ার্ড থেকে শুরু করে সর্বস্তরে খেলাফতের সাথে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শেরপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, সহ-বাইতুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাশেদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস শেরপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। এছাড়াও শেরপুর জেলার খেলাফত মজলিসের শতশত নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।