অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, নতুন বাংলাদেশে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সব শক্তি প্রয়োগ করে হলেও এই অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
শনিবার (০৮ মার্চ) সকালে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০২৫ উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানে নারীরা সম্মুখসারিতে থাকলেও এখনো সমাজে অনেক ক্ষেত্রে তারা পিছিয়ে আছে। তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।”
নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, “অনেক নারী নির্যাতনের শিকার হলেও জানেন না কোথায় অভিযোগ জানাতে হবে। এজন্য সরকার হটলাইন চালু করেছে, যাতে নির্যাতিত নারীরা সহজেই সহযোগিতা পেতে পারেন।”
সম্প্রতি নারীদের ওপর ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, “এটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সম্পূর্ণ বিপরীত।”
তিনি বলেন, “নারী বিরোধী শক্তিকে প্রতিহত করতে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকার কাজ করবে। আমাদের সমাজে এখনো এমন মানসিকতা রয়েছে, যেখানে নিপীড়িত নারীদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে তাদের অবজ্ঞার চোখে দেখা হয়। এই দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা ছাড়া আমরা এগোতে পারব না।”
ইতিহাসের বীর নারীদের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “আমরা জুলাই কন্যাদের আত্মত্যাগ ভুলে যেতে পারি না। তারা বিভিন্ন সময়ে নিজেদের সংগ্রাম ও আকাঙ্ক্ষার কথা জানিয়েছেন। নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে নারীদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি। পুরুষদেরও নারীদের সহযোদ্ধা হয়ে কাজ করতে হবে।”
পতিত স্বৈরাচার দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করছে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “এ অবস্থায় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, যেন দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়।”
নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা রক্ষায় সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নিপীড়নের বিরুদ্ধে সামাজিক ঐক্য গড়ে তুলতে হবে এবং সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে, যাতে একটি শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব হয়।”