ঢাকা ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
বিপিএল ২০২৪ মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন: মিরপুরে জমকালো মিউজিক ফেস্ট বকশিগঞ্জে নবাগত ইউএনওকে বরণ ও সাবেক ইউএনওকে বিদায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় কাঁপছে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল, বেড়েছে পর্যটক ঝালকাঠিতে ফুয়াদ হত্যা মামলায় সাবেক চেয়ারম্যান কাজী জেসমিন আক্তার কারাগারে কিশোরগঞ্জে ছেলের বিরুদ্ধে মায়ের মামলা চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে কম হবে না বরং বেশি হবে: টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ময়মনসিংহে পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রসহ বিপুল সংখ্যক মাদক উদ্ধার ময়মনসিংহে বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত সুনামগঞ্জ নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক জনসচেতনতামূলক কর্মশালা অনুষ্ঠিত মৌলভীবাজারে বাইক্কা বিলে অতিথি পাখির কলতানে মুখর মৌলভীবাজারের অবৈধভাবে আগর কাঠ পাচারের সময় ট্রাক জব্দ বিএসএফের গুলিতে চা শ্রমিক গোপাল হত্যার প্রতিবাদে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সমাবেশ

মৌলভীবাজারে বাইক্কা বিলে অতিথি পাখির কলতানে মুখর

শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে মৌলভীবাজারের বাইক্কা বিলে আবারও শীতের অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। সারা বছর সরকারের অভশ্রম বাইক্কা বিলে শীতের শুরু থেকেই দর্শনার্থী ও পাখিপ্রেমীদের ভিড় বাড়ছে।

বিশ্বের শীতপ্রধান নানা দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির দল আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে পরিযায়ী পাখির কলরবে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি মুখরিত হয়ে উঠছে বিলের চারপাশ। প্রায় সারা বছর প্রাণ-প্রকৃতিতে মুখরিত থাকলেও শীতকালে বদলে যায় এ বিলের পরিবেশ। শীতপ্রধান বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নানা প্রজাতির পাখ-পাখালির ডাকে ভিন্ন প্রাণের সঞ্চার হয় বিলটিতে।

বাইক্কা বিলের অপার সৌন্দর্য, জলজ সম্পদ আর অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত অপরুপ বাইক্কা বিলের সৌন্দর্য দেখতে দর্শনার্থীদের সমাগমে এখন পদভারে মুখর। সুদূর সাইবেরিয়া, হিমালয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শীতের শুরুতে প্রতি বছর ঝাঁকে ঝাঁকে আসে নানা প্রজাতির পাখি। ওইসব অঞ্চলে যখন শীত তীব্র হয়ে ওঠে ঠিক সে সময় এসব পাখি একটু উষ্ণতা ও খাদ্যের অন্বেষণে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়ে দলবেঁধে এবং এসব পাখি তখন অস্তিত্বের প্রয়োজনে এ দেশের আতিথ্য নিতে ছুটে আসে বিভিন্ন হাওর, বিল ও জলাশয়ে।

বাইক্কা বিলের অপার সৌন্দর্য দেখতে খুবই আনন্দঘন একটি অধ্যায়। বাংলা মায়ের অপার সৌন্দর্য্য আর অমূল্য সম্পদে ভরপুর স্বপ্নময় এই বাইক্কাবিল।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়, বিলুপ্ত প্রজাতির মাছের বংশ রক্ষার্থে হাইল হাওড়ের তিনটি বিলের সমন্বয়ে ১৭০ হেক্টর আয়তনের জলাভূমিকে একটি স্থায়ী অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করে। বাইক্কা বিল অভয়াশ্রমটির জীববৈচিত্র্য ফিরে পাওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শুরু থেকে সরকার বড়গাংগিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে।

সম্প্রতি বাইক্কা বিল ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশায় মোড়ানো সকালে চারিদিকে যখন সুনসান নীরবতা, ঠিক তখন থেকেই শুরু হয় পরিযায়ী পাখি ওড়াওড়ি। বিলজুড়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি অবস্থান নেয় পাখির ঝাঁক। এ সময়ে চারিদিকে থাকে পাখির কলরবে মুখর। এসব পাখির পাতিসরালি, ভূতিহাঁস, শামুকখোল, চখাচখি বলে ডাকেন স্থানীয়রা।

পরিযায়ী পাখি ছাড়াও পানকৌড়ি, ছন্নিহাঁস, বকের দেখা মেলে বিলজুড়ে। দূর থেকে এসব পাখি দেখতে হাঁস বলে মনে হলেও কাছে গেলে সেই ভুল ভাঙে দর্শনার্থীর। মানুষের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই দলবেঁধে আকাশে উড়াল দেয় পাখি।

পর্যটকরা জানান, বাইক্কা বিলে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি দেখে আমরা মুগ্ধ। বিলের ধারের সবুজ বাগান, প্রকৃতি আনন্দ দেয়। কিছুটা বড় আকারের কয়েকটি পাখির দেখা পেলাম। পাখির কিচিরমিচির শব্দ, ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানো ও বিলের পানিতে ঝাঁপাঝাঁপি দৃশ্য নজর কেরেছে।

তারা জানান, বাইক্কা ঘুরে মনোরম দৃশ্য দেখে তাদের মধ্যে প্রশান্তি ফিরে পেয়েছেন।

পাখি দেখতে পর্যটকদের জন্য এখানে তৈরী করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। গত বছর যে পরিমান পাখি ছিলো, এ বছর পাখি কম মিলেছে।

বাইক্কা বিল বড়গাংগিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মিন্নত আলী বলেন, বাইক্কাবিলে পাখি বছরে বছরে দেশীয় ও পরিযায়ী জলচর পাখি কম যাওয়ার কারণ মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়। বাইক্কা বিলের অপার সৌন্দর্য, জলজ সম্পদ আর অতিথি পাখির জলকেলী, উড়াউড়ি ও কিচিরমিচিরে মুখরিত অপরুপ বাইক্কা বিলের সৌন্দর্য দেখতে এবার দর্শনার্থীদের উল্লেখযোগ্য হারে সমাগম ঘটবে বলে মনে করছেন তিনি।

তিনি জানান, আগের চেয়ে পাখির সংখা কম। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে শুমারি শুরু হবে, তখন বাইক্কাবিলে পাখির সংখ্যা বলা যেতে পারে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কমকতা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, বাইক্কা রক্ষায় জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনসহ স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে সম্প্রতি এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে এ বিলকে আরও কীভাবে আকর্ষণীয় করে তা সংরক্ষণ এবং জীববৈচিত্র ধরে রাখা যায় তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বিপিএল ২০২৪ মৌসুমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন: মিরপুরে জমকালো মিউজিক ফেস্ট

মৌলভীবাজারে বাইক্কা বিলে অতিথি পাখির কলতানে মুখর

আপডেট সময় ০৬:০২:০৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে মৌলভীবাজারের বাইক্কা বিলে আবারও শীতের অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। সারা বছর সরকারের অভশ্রম বাইক্কা বিলে শীতের শুরু থেকেই দর্শনার্থী ও পাখিপ্রেমীদের ভিড় বাড়ছে।

বিশ্বের শীতপ্রধান নানা দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির দল আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে পরিযায়ী পাখির কলরবে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি মুখরিত হয়ে উঠছে বিলের চারপাশ। প্রায় সারা বছর প্রাণ-প্রকৃতিতে মুখরিত থাকলেও শীতকালে বদলে যায় এ বিলের পরিবেশ। শীতপ্রধান বিভিন্ন দেশ থেকে আসা নানা প্রজাতির পাখ-পাখালির ডাকে ভিন্ন প্রাণের সঞ্চার হয় বিলটিতে।

বাইক্কা বিলের অপার সৌন্দর্য, জলজ সম্পদ আর অতিথি পাখির কিচিরমিচিরে মুখরিত অপরুপ বাইক্কা বিলের সৌন্দর্য দেখতে দর্শনার্থীদের সমাগমে এখন পদভারে মুখর। সুদূর সাইবেরিয়া, হিমালয় অঞ্চলসহ বিভিন্ন দেশ থেকে শীতের শুরুতে প্রতি বছর ঝাঁকে ঝাঁকে আসে নানা প্রজাতির পাখি। ওইসব অঞ্চলে যখন শীত তীব্র হয়ে ওঠে ঠিক সে সময় এসব পাখি একটু উষ্ণতা ও খাদ্যের অন্বেষণে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়ে দলবেঁধে এবং এসব পাখি তখন অস্তিত্বের প্রয়োজনে এ দেশের আতিথ্য নিতে ছুটে আসে বিভিন্ন হাওর, বিল ও জলাশয়ে।

বাইক্কা বিলের অপার সৌন্দর্য দেখতে খুবই আনন্দঘন একটি অধ্যায়। বাংলা মায়ের অপার সৌন্দর্য্য আর অমূল্য সম্পদে ভরপুর স্বপ্নময় এই বাইক্কাবিল।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, ২০০৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়, বিলুপ্ত প্রজাতির মাছের বংশ রক্ষার্থে হাইল হাওড়ের তিনটি বিলের সমন্বয়ে ১৭০ হেক্টর আয়তনের জলাভূমিকে একটি স্থায়ী অভয়াশ্রম হিসেবে ঘোষণা করে। বাইক্কা বিল অভয়াশ্রমটির জীববৈচিত্র্য ফিরে পাওয়া ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য শুরু থেকে সরকার বড়গাংগিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করে।

সম্প্রতি বাইক্কা বিল ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশায় মোড়ানো সকালে চারিদিকে যখন সুনসান নীরবতা, ঠিক তখন থেকেই শুরু হয় পরিযায়ী পাখি ওড়াওড়ি। বিলজুড়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি অবস্থান নেয় পাখির ঝাঁক। এ সময়ে চারিদিকে থাকে পাখির কলরবে মুখর। এসব পাখির পাতিসরালি, ভূতিহাঁস, শামুকখোল, চখাচখি বলে ডাকেন স্থানীয়রা।

পরিযায়ী পাখি ছাড়াও পানকৌড়ি, ছন্নিহাঁস, বকের দেখা মেলে বিলজুড়ে। দূর থেকে এসব পাখি দেখতে হাঁস বলে মনে হলেও কাছে গেলে সেই ভুল ভাঙে দর্শনার্থীর। মানুষের উপস্থিতি টের পাওয়া মাত্রই দলবেঁধে আকাশে উড়াল দেয় পাখি।

পর্যটকরা জানান, বাইক্কা বিলে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখি দেখে আমরা মুগ্ধ। বিলের ধারের সবুজ বাগান, প্রকৃতি আনন্দ দেয়। কিছুটা বড় আকারের কয়েকটি পাখির দেখা পেলাম। পাখির কিচিরমিচির শব্দ, ঝাঁক বেঁধে উড়ে বেড়ানো ও বিলের পানিতে ঝাঁপাঝাঁপি দৃশ্য নজর কেরেছে।

তারা জানান, বাইক্কা ঘুরে মনোরম দৃশ্য দেখে তাদের মধ্যে প্রশান্তি ফিরে পেয়েছেন।

পাখি দেখতে পর্যটকদের জন্য এখানে তৈরী করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। গত বছর যে পরিমান পাখি ছিলো, এ বছর পাখি কম মিলেছে।

বাইক্কা বিল বড়গাংগিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মিন্নত আলী বলেন, বাইক্কাবিলে পাখি বছরে বছরে দেশীয় ও পরিযায়ী জলচর পাখি কম যাওয়ার কারণ মানুষের আনাগোনা বেড়ে যায়। বাইক্কা বিলের অপার সৌন্দর্য, জলজ সম্পদ আর অতিথি পাখির জলকেলী, উড়াউড়ি ও কিচিরমিচিরে মুখরিত অপরুপ বাইক্কা বিলের সৌন্দর্য দেখতে এবার দর্শনার্থীদের উল্লেখযোগ্য হারে সমাগম ঘটবে বলে মনে করছেন তিনি।

তিনি জানান, আগের চেয়ে পাখির সংখা কম। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে শুমারি শুরু হবে, তখন বাইক্কাবিলে পাখির সংখ্যা বলা যেতে পারে।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রশাসনের নির্বাহী কমকতা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, বাইক্কা রক্ষায় জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেনসহ স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে সম্প্রতি এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে এ বিলকে আরও কীভাবে আকর্ষণীয় করে তা সংরক্ষণ এবং জীববৈচিত্র ধরে রাখা যায় তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।