সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর দেশটির নতুন নেতৃত্বের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার হওয়ার মধ্যে ফ্রান্স তাদের দূতাবাসে আবারও পতাকা উড়িয়েছে।
১২ বছর পর মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দামেস্কে ফ্রান্সের দূতাবাসে পতাকা উত্তোলন করা হয়। সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের কারণে এক যুগ ধরে ফরাসি দূতাবাসের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছিল।
২০১২ সালে সিরিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ফ্রান্স। তবে সম্প্রতি সিরিয়ার নতুন প্রশাসন গঠন হওয়ায় পশ্চিমা দেশগুলো কূটনৈতিক যোগাযোগ ও আলোচনা বাড়ানোর চেষ্টা করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা সিরিয়ার নতুন নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করার জন্য প্রস্তুত এবং সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম এবং এর নেতা আহমেদ আল-শারা (আল-জোলানির) নেতৃত্বাধীন নতুন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির জন্য নতুন চ্যানেল খুলছে পশ্চিমা দেশগুলো।
ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যে শারা-র নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে বৈঠক করেছে। জার্মানিও সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করার পরিকল্পনা করছে। মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নও সিরিয়ার নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরিকল্পনা করেছে।
ফ্রান্স সিরিয়ায় একদল কূটনীতিক পাঠিয়েছে, যারা সেখানকার রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবেন। তবে, দূতাবাসে পতাকা উত্তোলনের পরও ফরাসি দূতাবাসের কার্যক্রম এখনই শুরু হচ্ছে না।
নতুন প্রশাসন গঠন হওয়া পর, হায়াত তাহরির আল শামের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহী গোষ্ঠী দেশের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোহাম্মদ আল-বশিরকে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি সিরিয়ার অর্থনৈতিক সংকট এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, শারা আইন এবং প্রাতিষ্ঠানিক শাসন প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।
এদিকে, সোমবার ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দল শারা-র সঙ্গে বৈঠক করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপন এবং সিরিয়ার শরণার্থীদের ফিরতে সহায়তা করার জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
সিরিয়ায় এই নতুন কূটনৈতিক যোগাযোগের ফলে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের নতুন অধ্যায় সূচনা হতে পারে। এছাড়া, বাশার আল-আসাদের পতনের ফলে সিরিয়ায় রাশিয়া ও ইরানের প্রভাব কমেছে বলে মনে করা হচ্ছে।