গত ৮ ডিসেম্বর সিরিয়ায় একটি আকস্মিক বিদ্রোহী অভিযান ও তার পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাশার আল আসাদ সরকারের পতন ঘটে এবং দেশের শাসনভার চলে যায় সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত আল তাহরির আল শামের (এইচটিএস) হাতে। এরপরই আসাদ সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্যরা তাদের অস্ত্র জমা দিতে শুরু করেন, এমনকি অস্ত্র জমা দেওয়ার জন্য অনেক জায়গায় দীর্ঘ লাইনও দেখা গেছে।
এইচটিএস এবং অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠী আহরার আল শামের পক্ষ থেকে সাবেক সেনাদের অস্ত্র জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। সিরিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ টারতুসে বাথ পার্টির কার্যালয়ে অস্ত্র জমা দেয়ার জন্য আসাদ বাহিনীর সদস্যরা আসেন। সেখানে সাবেক সেনারা নিজেদের অস্ত্র এই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে প্রদান করেন এবং এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাদের নিরাপদে আত্মসমর্পণও সম্পন্ন হয়।
সিরিয়ান সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর আলি হাবাবা গণমাধ্যমে জানান, বিদ্রোহীরা যখন ক্ষমতা দখল করতে আসে, তখন তারা তাদের কোনো রক্তপাত ছাড়াই সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পরে, সেনা বাহিনীও কোনো ধরনের লড়াই ছাড়াই তাদের অবস্থান থেকে সরে আসে। সাবেক সেনাসদস্যরা এ সময়ের পরিস্থিতিকে আগের তুলনায় অনেক ভালো বলে মন্তব্য করেন। তারা উল্লেখ করেন, সেনাবাহিনীর এই পরাজয়ের ফলে তারা নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছেন, যা আগে আসাদ সরকারের নিপীড়নের কারণে সম্ভব ছিল না।
সাবেক সেনারা আরও জানান, আসাদ সরকারের সময়ে তাদের উপর চলা নিপীড়ন ও বৈষম্যের কথা তুলে ধরে বিদ্রোহীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা বলছেন, আসাদ সরকারের শোষণ থেকে মুক্তি পেয়ে তাদের জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সিরিয়ার পুনর্গঠন এখনো অনেক কঠিন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনরায় সচল হওয়ার জন্য প্রচুর বৈদেশিক সহায়তা এবং আসাদ বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্যের প্রয়োজন। তুরস্কের মতো সীমান্তবর্তী প্রভাবশালী দেশগুলোর সাহায্যে এ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়া সম্ভব।