ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘ইন্ডিয়া’স ওয়ার্ল্ড’ নামক একটি আন্তর্জাতিক নীতি-বিষয়ক সাময়িকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এই বক্তব্য দেন।
জয়শঙ্কর বলেন, “স্পষ্টভাবে বলতে গেলে, আমাদের পুরোনো সমস্যা অনেকটাই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে এবং আমাদের সীমানা এখনো একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ। তবে, আমরা ইতোমধ্যে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে বিদেশি নীতিতে এগিয়ে গেছি।” তিনি আরও যোগ করেন, “বিশ্ব এখন আর দ্বিমেরু বিশিষ্ট বা এককেন্দ্রিক নয়, এবং পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতিতে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে বদল আনা অত্যন্ত প্রয়োজন।”
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর থেকে শিখে নেওয়া মূল্যবান পাঠের কথা উল্লেখ করেন, যা ভারতের বিদেশি নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে তুলে ধরেন। জয়শঙ্কর বলেন, “গত দুই দশকে বিশ্বায়ন তীব্র আকার ধারণ করেছে। দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক নির্ভরশীলতা অনেক বেড়েছে। এছাড়া, প্রযুক্তি মানুষের দৈনন্দিন জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছে।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন বিদেশে সফর করেছেন, তখন প্রযুক্তি, মূলধন, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং বিনিয়োগ সম্পর্কিত আলোচনা অনেক বড় ভূমিকা নিয়েছে।” তিনি ভারত সরকারের বহির্বিশ্বে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা ও বিনিয়োগের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “এটি দেশের জাতীয় উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।”
জয়শঙ্কর এসময় ভারতের পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে জানান, “যখন আমরা পররাষ্ট্রনীতিতে পরিবর্তন আনার কথা বলি, তখন এটি কোনো রাজনৈতিক আক্রমণ হিসেবে দেখা উচিত নয়।” তিনি বলেন, “বিশ্বমঞ্চে ভারত ক্রমশ ‘গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী’ দেশে পরিণত হচ্ছে এবং আগামী বছরগুলোতে ভারতের প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে বাড়বে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমরা গতিশীলতার বিস্ফোরণ দেখতে যাচ্ছি।”
এ প্রসঙ্গে, জয়শঙ্কর বলেন, “তাহলে, বড় করে ভাবা, দীর্ঘমেয়াদে ভাবা এবং স্মার্টভাবে ভাবাই ভবিষ্যতের পররাষ্ট্রনীতি হবে।”