ঢাকা ০৯:৩১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
ছোট ভাইয়ের লাশ দেখতে এসে বড় বোনের মৃত্যু শ্রীমঙ্গল উপজেলা, পৌর ও সদর ইউনিয়ন বিএনপির আয়োজনে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত বেনাপোলে দরিদ্র ও পথচারীদের ইফতার বিতরণ মিষ্টি কুমড়া চাষ করে লোকসান, ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত কৃষক ফিলিস্তিনে নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানববন্ধন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্জিত জ্ঞান শিক্ষাজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা ইফতার সামগ্রী বিতরণ করল এপেক্স ক্লাব অব লামা কমলগঞ্জে যুবদলের ইফতার বিতরণ মৌলভীবাজারের রাজনগরে ডিবি পুলিশকে মারধর করে চেয়ারম্যাকে ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩ টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকায়: প্রশাসনের নীরব ভূমিকা ফিলিস্তিন ও ভারতে মুসলমানদের হত্যার প্রতিবাদে শ্রীমঙ্গলে বিক্ষোভ মিছিল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে হাসনাতের সাথেই আমরা

কমলগঞ্জের চা বাগানগুলোতে নির্বিচারে ছায়াবৃক্ষ নিধন

চা বাগানগুলোতে নির্বিচারে ছায়াবৃক্ষ নিধন চলছে

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চা বাগানসমূহ থেকে নির্বিচারে ছায়াবৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে চায়ের উৎপাদন ও পরিবেশের উপর।

অতি সম্প্রতি ডানকান ব্রাদার্সা শমশেরনগর চা বাগানের ফাঁড়ি কানিহাটি ও দেওছড়াসহ আসপাশে বিভিন্ন চা বাগান থেকে গাছ উজাড় করা হয়েছে। চা বাগান কর্তৃপক্ষ দাবি করছে গাছ উজাড় করা হয়নি, দুর্গাপূজা উপলক্ষে চা বাগান পঞ্চায়েত ও শ্রমিকদের জন্য জ্বালানি কাঠ হিসাবে দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কমলগঞ্জ উপজেলায় ডানকান ব্রাদার্স, এনটিসি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন মিলিয়ে ২২টি চা বাগান রয়েছে। চা বাগান সেকশনে রোপিত গাছগাছালি অতিবৃষ্টি ও প্রখর রোদ থেকে চা গাছকে রক্ষায় ভূমিকা পালন করে। চা বাগানের টিলাভূমিতে ছায়াবৃক্ষগুলো একদিকে চায়ের উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে, অন্যদিকে পরিবেশের জন্য উপকার বয়ে আনছে। তবে চা বাগানের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী, পঞ্চায়েত নেতাদের কারণে চা বাগানে রোপিত গাছগাছালি নির্বিচারে কেটে নেয়ার কারনে চা বাগানগুলো গাছ শুণ্য হতে চলেছে।

শমশেরনগরের ফাঁড়ি কানিহাটি ও দেওছড়া চা বাগান ঘুরে দেখা যায়, গত দু’মাসে চায়ের টিলাভূমিতে গড়ে উঠা বৃহদাকার প্রায় দু’শতাধিক গাছ কেটে উজাড় করা হয়েছে। আকাশি, রেনট্রি, বেলজিয়ামসহ মূল্যবান গাছগুলো কেটে খন্ডাংশ করে ট্রাক্টর, ট্রলি ও ঠেলাগাড়ি যোগে স’মিলসহ বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়া হয়।

গাছ কেটে নেয়ার পর চায়ের টিলাভূমি বৃক্ষশুন্য হয়ে পড়ছে। এতে চা বাগানের কিছু লোক লাভবান হলেও বৈদেশিক মুর্দ্রা অর্জনের শিল্পটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসা হচ্ছে। এছাড়া শমশেরনগরের দেওছড়া, কানিহাটি, বাঘিছড়া, ডবলছড়া, আলীনগর চা বাগানের সুনছড়া, কামারছড়া এবং এনটিসি’র চা বাগান থেকে নানা সময়ে গাছ চুরির অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চা বাগান শ্রমিকরা জানান, বাগানের জনপ্রতিনিধি, পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ ও সর্দারদের একটি চক্র গাছ পাচারের সাথে সম্পৃক্ত। তারা দীর্ঘ দিন ধরে চা বাগানের টিলা থেকে বড় বড় গাছ কেটে নিচ্ছে। গত এক বছরে কানিহাটি চা বাগানে প্রায় ১৫শ গাছ বিলীন হয়েছে এবং এক মাসে শতাধিক গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতেও পারছেন না। ফলে চায়ের টিলার অনেক স্থান গাছগাছালি বিহীন বিরান ভুমিতে পরিণত হয়েছে।

কানিহাটি চা বাগানের শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, ‘যে হারে চায়ের টিলা থেকে গাছ সাবাড় হচ্ছে তাতে বছর দু’একের মধ্যেই টিলাগুলো ফাঁকা হয়ে পড়বে। চা বাগানের বিভিন্ন সেকশনের বিভিন্ন স্থান থেকে গাছ সাবাড় হয়েছে।’

কানিহাটি চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি প্রতাপ রিকিয়াশন বলেন, দুর্গাপূজার জন্য শ্রমিকদের জ্বালানি কাঠ দেয়া হচ্ছে। তবে বড় সাইজের গাছ কেটে ট্রাক্টরযোগে নেয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

কানিহাটি চা বাগানের টিলাক্লার্ক প্রদীপ কুমার বলেন, ‘পূজার সিজনে সর্দারদের জ্বালানির জন্য গাছ দেয়া হচ্ছে। এগুলো মন্দিরেও যাচ্ছে। তবে মাঝে মধ্যে গাছ চুরি হয়।’

শমশেরনগর চা বাগান ব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, দুর্গাপূজার জন্য চা শ্রমিকরা কিছু জ্বালানি কাঠ নিচ্ছে। পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দদের মাধ্যমে জ্বালানি কাঠ নেয়া হচ্ছে। জ্বালানি কাঠের সাথে কিছু মরা গাছের খন্ডাংশ থাকতে পারে।

ট্যাগস :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ছোট ভাইয়ের লাশ দেখতে এসে বড় বোনের মৃত্যু

Verified by MonsterInsights

কমলগঞ্জের চা বাগানগুলোতে নির্বিচারে ছায়াবৃক্ষ নিধন

আপডেট সময় ০৩:৩৮:০৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চা বাগানসমূহ থেকে নির্বিচারে ছায়াবৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। নির্বিচারে গাছ কাটার ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে চায়ের উৎপাদন ও পরিবেশের উপর।

অতি সম্প্রতি ডানকান ব্রাদার্সা শমশেরনগর চা বাগানের ফাঁড়ি কানিহাটি ও দেওছড়াসহ আসপাশে বিভিন্ন চা বাগান থেকে গাছ উজাড় করা হয়েছে। চা বাগান কর্তৃপক্ষ দাবি করছে গাছ উজাড় করা হয়নি, দুর্গাপূজা উপলক্ষে চা বাগান পঞ্চায়েত ও শ্রমিকদের জন্য জ্বালানি কাঠ হিসাবে দেয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কমলগঞ্জ উপজেলায় ডানকান ব্রাদার্স, এনটিসি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন মিলিয়ে ২২টি চা বাগান রয়েছে। চা বাগান সেকশনে রোপিত গাছগাছালি অতিবৃষ্টি ও প্রখর রোদ থেকে চা গাছকে রক্ষায় ভূমিকা পালন করে। চা বাগানের টিলাভূমিতে ছায়াবৃক্ষগুলো একদিকে চায়ের উৎপাদনে ভূমিকা রাখছে, অন্যদিকে পরিবেশের জন্য উপকার বয়ে আনছে। তবে চা বাগানের কিছু অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী, পঞ্চায়েত নেতাদের কারণে চা বাগানে রোপিত গাছগাছালি নির্বিচারে কেটে নেয়ার কারনে চা বাগানগুলো গাছ শুণ্য হতে চলেছে।

শমশেরনগরের ফাঁড়ি কানিহাটি ও দেওছড়া চা বাগান ঘুরে দেখা যায়, গত দু’মাসে চায়ের টিলাভূমিতে গড়ে উঠা বৃহদাকার প্রায় দু’শতাধিক গাছ কেটে উজাড় করা হয়েছে। আকাশি, রেনট্রি, বেলজিয়ামসহ মূল্যবান গাছগুলো কেটে খন্ডাংশ করে ট্রাক্টর, ট্রলি ও ঠেলাগাড়ি যোগে স’মিলসহ বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দেয়া হয়।

গাছ কেটে নেয়ার পর চায়ের টিলাভূমি বৃক্ষশুন্য হয়ে পড়ছে। এতে চা বাগানের কিছু লোক লাভবান হলেও বৈদেশিক মুর্দ্রা অর্জনের শিল্পটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসা হচ্ছে। এছাড়া শমশেরনগরের দেওছড়া, কানিহাটি, বাঘিছড়া, ডবলছড়া, আলীনগর চা বাগানের সুনছড়া, কামারছড়া এবং এনটিসি’র চা বাগান থেকে নানা সময়ে গাছ চুরির অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চা বাগান শ্রমিকরা জানান, বাগানের জনপ্রতিনিধি, পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দ ও সর্দারদের একটি চক্র গাছ পাচারের সাথে সম্পৃক্ত। তারা দীর্ঘ দিন ধরে চা বাগানের টিলা থেকে বড় বড় গাছ কেটে নিচ্ছে। গত এক বছরে কানিহাটি চা বাগানে প্রায় ১৫শ গাছ বিলীন হয়েছে এবং এক মাসে শতাধিক গাছ কেটে নেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতেও পারছেন না। ফলে চায়ের টিলার অনেক স্থান গাছগাছালি বিহীন বিরান ভুমিতে পরিণত হয়েছে।

কানিহাটি চা বাগানের শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, ‘যে হারে চায়ের টিলা থেকে গাছ সাবাড় হচ্ছে তাতে বছর দু’একের মধ্যেই টিলাগুলো ফাঁকা হয়ে পড়বে। চা বাগানের বিভিন্ন সেকশনের বিভিন্ন স্থান থেকে গাছ সাবাড় হয়েছে।’

কানিহাটি চা বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি প্রতাপ রিকিয়াশন বলেন, দুর্গাপূজার জন্য শ্রমিকদের জ্বালানি কাঠ দেয়া হচ্ছে। তবে বড় সাইজের গাছ কেটে ট্রাক্টরযোগে নেয়ার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

কানিহাটি চা বাগানের টিলাক্লার্ক প্রদীপ কুমার বলেন, ‘পূজার সিজনে সর্দারদের জ্বালানির জন্য গাছ দেয়া হচ্ছে। এগুলো মন্দিরেও যাচ্ছে। তবে মাঝে মধ্যে গাছ চুরি হয়।’

শমশেরনগর চা বাগান ব্যবস্থাপক মো. জাকির হোসেন বলেন, দুর্গাপূজার জন্য চা শ্রমিকরা কিছু জ্বালানি কাঠ নিচ্ছে। পঞ্চায়েত নেতৃবৃন্দদের মাধ্যমে জ্বালানি কাঠ নেয়া হচ্ছে। জ্বালানি কাঠের সাথে কিছু মরা গাছের খন্ডাংশ থাকতে পারে।