অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য এক বছরের কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সরকার উচ্চশিক্ষিতদের মধ্যে বেকারত্ব দূরীকরণে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে। এতে করে শিক্ষিত বেকারের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার লক্ষ্যে নেওয়া হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এর আগে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বছরে অনার্স শেষের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, কিন্তু নতুন সিদ্ধান্তে এখন শিক্ষার্থীরা দু’টি সার্টিফিকেট পাবে- একটি তিন বছরের অনার্স কোর্সের সার্টিফিকেট এবং আরেকটি এক বছরের কারিগরি শিক্ষার সার্টিফিকেট।
বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্য নিয়ে সরকার এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কর্মমুখী শিক্ষার ধারণা ছড়িয়ে দিয়ে বেকারত্ব সমস্যার সমাধান করা যাবে বলে মনে করছে সরকার। চার বছরের কোর্সের পরিবর্তে তিন বছরের সাধারণ এবং বিষয়ভিত্তিক পাঠ দেওয়ার পর, শিক্ষার্থীদের এক বছর বিষয়ভিত্তিক কারিগরি শিক্ষা বা হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া হবে। এতে শিক্ষার্থীদের দু’টি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে, যা তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছেন এবং তাদের মধ্যে এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে কর্মমুখী শিক্ষায় যুক্ত করার জন্য সরকার নানা পরিকল্পনা নিচ্ছে। বিশেষ করে, যেসব শিক্ষার্থী সাধারণ বিষয়ে অধ্যয়নরত থাকবেন, তাদের জন্য স্পেশালাইজড কোর্স চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, রোববার আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস উপলক্ষে ঢাকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এম আমিনুল ইসলাম এই পরিকল্পনার কথা জানান। তিনি জানান, এ পরিকল্পনাটি একটি অভিনব উদ্যোগ এবং খুব প্রয়োজনীয়।
তিনি আরও বলেন, দেশের মধ্যে ডিপ্লোমা এবং কারিগরি শিক্ষার প্রতি নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে, কিন্তু সরকার এ বিষয়টি পরিবর্তন করতে চাইছে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “আমরা কর্মমুখী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই।” এ কারণেই অনার্সের এক বছরে কারিগরি শিক্ষা যোগ করা হচ্ছে, যাতে শিক্ষার্থীরা একদিকে স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পায় এবং অন্যদিকে চাকরি বাজারে সফলতা অর্জন করতে পারে।