মার্কিন প্রশাসন অভিবাসন নীতিতে কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অবৈধ ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে, যুক্তরাষ্ট্রে নথিবিহীন অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে এবং ভারতীয়দের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া দ্রুত গতিতে চলছে।
১৮ হাজার ভারতীয় ফেরত পাঠানোর তালিকায়
মার্কিন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রথমে ১৮ হাজার ভারতীয় অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই, প্রথম ব্যাচের অভিবাসীদের নিয়ে একটি সি-১৭ উড়োজাহাজ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। যদিও, উড়োজাহাজটি কোথা থেকে উড্ডয়ন করেছে, কোথায় অবতরণ করবে এবং এতে মোট কতজন ভারতীয় রয়েছেন, সেই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে, আইসিই (ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে উড়োজাহাজটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের ভূখণ্ডে পৌঁছাবে।
ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন
২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে প্রচারণার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তিনি ক্ষমতায় আসলে যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ অভিবাসীমুক্ত করবেন। নির্বাচনে জয়লাভের পর তিনি ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেন এবং এরপরেই অভিবাসন নীতি আরও কঠোর করেন। ট্রাম্পের স্বাক্ষরিত নির্বাহী আদেশগুলোর মধ্যে একটি ছিল ‘আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন জনগণকে সুরক্ষা প্রদান’। এই আদেশের আওতায় দেশজুড়ে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত ও ফেরত পাঠানোর অভিযান শুরু হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অভিবাসীদের সংখ্যা
যুক্তরাষ্ট্রে বিপুলসংখ্যক ভারতীয় অভিবাসী বসবাস করেন। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অভিবাসীদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যা মেক্সিকো, এল সালভাদর ও ভারতের রয়েছে। বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ৭ লাখ ২৫ হাজার ভারতীয় অভিবাসী অবৈধভাবে বসবাস করছেন।
ভারতের প্রস্তুতি
অবৈধ অভিবাসীদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তের পর ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর জানিয়েছেন যে, ভারত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো অভিবাসীদের গ্রহণ করতে প্রস্তুত।
১৫ লাখ অভিবাসী ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা
আইসিই কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, মার্কিন প্রশাসন শুধুমাত্র ভারতীয় নয়, মোট ১৫ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। এই উদ্যোগের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা রয়েছে।