ঢাকা ০৫:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
আমিরাত প্রবাসী কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার মতবিনিময় ইলন মাস্কের সন্তানদের উপহার দিলেন মোদি আজ পবিত্র শবে বরাত সুন্দরবন দিবস আজ বসন্তের রঙে রাঙানো বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ পাকিস্তান পৌঁছেছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কোন দল নিষিদ্ধ হবে: মির্জা ফখরুল বাজিতপুরে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পুনরায় সভাপতি সাকের, সাধারণ সম্পাদক ফাত্তাহ মির্জাপুরে হেরোইনসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” এর পরিবর্তিত নাম “গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়” বোয়ালখালীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা কিশোরগঞ্জে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত

গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে এইচআরডব্লিউ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কয়েকজন শীর্ষ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেছে। সংস্থাটির ‘আফটার দ্য মনসুন রেভ্যুলিউশন : আ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ ৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুমের ঘটনা তদারকিতে যুক্ত ছিলেন। গত ১৪ ডিসেম্বর জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদন্তকারী জাতীয় কমিশন তাদের প্রথম প্রতিবেদনে প্রকাশ করে যে, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সাড়ে তিন হাজারের বেশি জোরপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে।

এইচআরডব্লিউ দাবি করেছে, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা সংস্থাটিকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা গুম করে রাখার বিষয়ে অবগত ছিলেন। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর গোপন আটক কেন্দ্র থেকে তিনজনকে মুক্তি দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর ধরে তাদের আটক রাখার কথা অস্বীকার করে আসছিল।

গুম হওয়ার শিকার আইনজীবী মীর আহমাদ বিন কাসেম বলেছেন, তাকে যে স্থানে আটক রাখা হয়েছিল, সেটি ‘বন্দিদের মৃত্যুর চেয়েও খারাপ অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য নিখুঁতভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল।’ ন্যাশনাল ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্যাতনের ধরন শুধু পদ্ধতিগত নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিকও ছিল।

এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও জোরপূর্বক গুমের জন্য দায়ী পুলিশ ও সামরিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত র‌্যাবের বিরুদ্ধে জাতীয় তদন্ত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, র‌্যাব প্রধান এ কে এম শহীদুর রহমান ইউনিটের গোপন ডিটেনশন সেন্টারের কথা স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইউনিটটি ভেঙে দিতে চাইলে র‌্যাব সিদ্ধান্ত মেনে নেবে।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, বাংলাদেশে বিভেদমূলক রাজনীতির দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে ঢুকে যেতে পারে। সংস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারকে আটক করে রাখার সব স্থানে অঘোষিত পরিদর্শন করার কর্তৃত্বসহ আইন প্রয়োগের ওপর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মাধ্যমে স্বাধীন বেসামরিক তদারকি প্রতিষ্ঠা করার পরামর্শ দিয়েছে। এ ছাড়া, নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড প্রয়োগ করা উচিত, যাতে সুস্পষ্ট হয় যে, আইন লঙ্ঘনকারী কোনো সদস্যকে দায়ী করা হবে।

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

Verified by MonsterInsights

গুমের ঘটনায় শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে এইচআরডব্লিউ

আপডেট সময় ১২:১৭:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে জোরপূর্বক গুমের ঘটনায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও কয়েকজন শীর্ষ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তার সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করেছে। সংস্থাটির ‘আফটার দ্য মনসুন রেভ্যুলিউশন : আ রোডম্যাপ টু লাস্টিং সিকিউরিটি সেক্টর রিফর্ম ইন বাংলাদেশ’ ৫০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা, মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গুমের ঘটনা তদারকিতে যুক্ত ছিলেন। গত ১৪ ডিসেম্বর জোরপূর্বক গুমের ঘটনা তদন্তকারী জাতীয় কমিশন তাদের প্রথম প্রতিবেদনে প্রকাশ করে যে, শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সাড়ে তিন হাজারের বেশি জোরপূর্বক গুমের ঘটনা ঘটেছে।

এইচআরডব্লিউ দাবি করেছে, গুমের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা সংস্থাটিকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা ও তার সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিরা গুম করে রাখার বিষয়ে অবগত ছিলেন। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর গোপন আটক কেন্দ্র থেকে তিনজনকে মুক্তি দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষ বছরের পর বছর ধরে তাদের আটক রাখার কথা অস্বীকার করে আসছিল।

গুম হওয়ার শিকার আইনজীবী মীর আহমাদ বিন কাসেম বলেছেন, তাকে যে স্থানে আটক রাখা হয়েছিল, সেটি ‘বন্দিদের মৃত্যুর চেয়েও খারাপ অভিজ্ঞতা দেওয়ার জন্য নিখুঁতভাবে ডিজাইন করা হয়েছিল।’ ন্যাশনাল ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নির্যাতনের ধরন শুধু পদ্ধতিগত নয়, বরং প্রাতিষ্ঠানিকও ছিল।

এইচআরডব্লিউ তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সরকারকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন ও জোরপূর্বক গুমের জন্য দায়ী পুলিশ ও সামরিক কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত র‌্যাবের বিরুদ্ধে জাতীয় তদন্ত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, র‌্যাব প্রধান এ কে এম শহীদুর রহমান ইউনিটের গোপন ডিটেনশন সেন্টারের কথা স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইউনিটটি ভেঙে দিতে চাইলে র‌্যাব সিদ্ধান্ত মেনে নেবে।

এইচআরডব্লিউ বলেছে, বাংলাদেশে বিভেদমূলক রাজনীতির দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মধ্যে ঢুকে যেতে পারে। সংস্থাটি অন্তর্বর্তী সরকারকে আটক করে রাখার সব স্থানে অঘোষিত পরিদর্শন করার কর্তৃত্বসহ আইন প্রয়োগের ওপর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মাধ্যমে স্বাধীন বেসামরিক তদারকি প্রতিষ্ঠা করার পরামর্শ দিয়েছে। এ ছাড়া, নিরাপত্তা বাহিনীর ক্ষমতা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড প্রয়োগ করা উচিত, যাতে সুস্পষ্ট হয় যে, আইন লঙ্ঘনকারী কোনো সদস্যকে দায়ী করা হবে।