যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনটি প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার চীন, মেক্সিকো এবং কানাডার বিরুদ্ধে নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন।
আগামী মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। অন্যদিকে, চীন থেকে আসা পণ্যের ওপর শুল্ক হবে ১০ শতাংশ। তবে, কানাডার জ্বালানি পণ্যের ওপর শুল্কের হার কিছুটা কম, তা ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, এই শুল্ক যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সমস্যা যেমন অবৈধ অভিবাসন ও মাদক পাচার প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয়। মার্কিন সরকার বলছে, মেক্সিকো সরকার মাদক পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এবং চীন ফেন্টানাইলের মতো বিপজ্জনক মাদক আমদানিতে জড়িত।
তবে এই শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে কানাডা ও মেক্সিকো তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, তারা পাল্টা শুল্ক আরোপ করবে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছেন, কানাডা ১৫৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে, যার মধ্যে থাকবে মদ, ফল, শাকসবজি, পোশাক, বাসনপত্র, আসবাবপত্র এবং অন্যান্য পণ্য। তিনি বলেন, কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া ফেন্টানাইলের পরিমাণ খুবই কম, এবং ট্রাম্পের সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
মেক্সিকো প্রেসিডেন্ট ক্লাউডিয়া শেইনবাউম এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তকে সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন, শুল্ক আরোপ কোনো সমস্যার সমাধান নয় বরং এটি আরও সমস্যা তৈরি করবে। তিনি বলেছেন, মেক্সিকো মার্কিন সরকারের সঙ্গে মাদক পাচার রোধে কাজ করতে প্রস্তুত, তবে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হতে পারে, শুল্ক আরোপের মাধ্যমে নয়।
এদিকে, চীনও ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং তারা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করার পরিকল্পনা করছে। চীনের সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীন এই শুল্ক আরোপকে ‘অযৌক্তিক’ এবং ‘বিভ্রান্তিকর’ মনে করে এবং স্বার্থ রক্ষায় পাল্টা পদক্ষেপ নেবে।
অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন, এই শুল্ক আরোপের ফলে মার্কিন বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে পারে, বিশেষ করে গাড়ি, যন্ত্রাংশ, স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম এবং খাদ্যপণ্যের। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো—সব দেশেই মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পাবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমবে। এমনকী বিশ্ববাজারেও এর প্রভাব পড়বে।
তথ্য: বিবিসি।