প্রবাসী এনামুল হক ইমামুল হত্যার বিচার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার বড় বোন মোসা. পারভিন। এ সময় তার পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুর প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোসা. পারভিন জানান, তার ছোট ভাই এনামুল হক ইমামুল প্রায় ১৭ বছর বিদেশে থাকার পর ছয় মাস আগে দেশে ফেরেন। গত ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ সকালে তিনি কৃষিকাজের জন্য নগদ টাকা সংগ্রহ করতে পারভিনের স্বামীর বাড়ি ধলিসুতায় আসেন এবং সেখান থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে নিজ বাড়ি তিলশুনিয়ার উদ্দেশে রওনা দেন। পথে চাঁদপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি কিছু লোকজনকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দৌড়ে প্রবেশ করতে দেখে কৌতুহলবশত এগিয়ে যান এবং ঘটনাটি ভিডিও করতে গেলে ১৫-১৬ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার উপর হামলা চালায়।
এ সময় তারা এনামুলকে মারধর করে তার মোবাইল ফোন ও ৫ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। হামলাকারীদের মধ্যে চাঁদপুর গ্রামের মো. সোলাইমানের ছেলে তারেক, তিলশুনিয়া গ্রামের আ. আজিজের ছেলে রবিন, ভাকোয়াদি গ্রামের আজিজুলের ছেলে রিপন, একই গ্রামের বকুল, কোটবাজালিয়া গ্রামের সামসুদ্দিন খানের ছেলে মো. সিফাতুল্লাহ ও বড়পুশিয়া গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে সাকিবের নাম উল্লেখ করেন মোসা. পারভিন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, পরিবারের সদস্যরা আহত অবস্থায় এনামুলকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসা শেষে তিনি বাড়ি ফিরলেও ১৫ জানুয়ারি বিকালে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার আরও অবনতি হলে রাত ১১টার দিকে ঢাকায় নেওয়ার পথে উত্তরা এলাকায় পৌঁছালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। নিহত এনামুলের ৬ বছর বয়সী একমাত্র সন্তান রিয়াদ এখন বাবা হারা হয়ে পড়েছে।
পারভিন অভিযোগ করেন, হত্যাকাণ্ডের পরও অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং উল্টো তাদের পরিবারকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এমনকি ঘটনার পরদিন ১৪ জানুয়ারি তারা এনামুলের ছিনিয়ে নেয়া মোবাইল ও টাকা ফেরত চাইলে ইউনিয়ন বিএনপির সোলাইমান মোড়ল, সেলিম মেম্বার ও আশরাফুল তাদের হুমকি দেন। পরে পুলিশ তিলশুনিয়া গ্রামের আমজাত হোসেনের ছেলে আশরাফুলের কাছ থেকে এনামুলের মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।
পরিবারের পক্ষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তারা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে এ বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন।