ঢাকা ০৬:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
সংস্কার নিয়ে কাল রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা: আদিলুর রহমান খান এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে পুরস্কার তহবিল ৫৩% বৃদ্ধি বাংলাদেশের প্রসঙ্গে যা বললেন ট্রাম্প আমিরাত প্রবাসী কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার মতবিনিময় ইলন মাস্কের সন্তানদের উপহার দিলেন মোদি আজ পবিত্র শবে বরাত সুন্দরবন দিবস আজ বসন্তের রঙে রাঙানো বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আজ পাকিস্তান পৌঁছেছেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে কোন দল নিষিদ্ধ হবে: মির্জা ফখরুল বাজিতপুরে আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে পুনরায় সভাপতি সাকের, সাধারণ সম্পাদক ফাত্তাহ মির্জাপুরে হেরোইনসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার

পাবনার নগরবাড়ি আধুনিক নৌ বন্দর নির্মাণ শেষ পর্যায়ে; পন্য খালাসের গতি বাড়বে দশগুন

ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে শেষ পর্যায়ে পাবনার নগরবাড়ি নৌবন্দর নির্মাণ কাজ। যদিও মাঝখানে প্রকল্পটি শেষ করার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে দুইবার। তবে এরই মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে ৯০ ভাগ।

কর্তৃপক্ষের দাবি, সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে গতি বাড়বে অন্তত দশগুন। সেই সাথে সরকারের রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থান।

উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়িতে একটি আধুনিক নদীবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বিগত সরকার। এ অঞ্চলে কম খরচে সহজে নদীপথে বিপুল পরিমাণ সার, কয়লা, সিমেন্ট, পাথরসহ অন্যান্য পণ্য আনা নেয়া হয় নগরবাড়ি নৌ বন্দর দিয়ে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে ৫৬৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ৩৬ একর জায়গার উপর যমুনা নদীর পাড়ে শুরু হয় নগরবাড়ি নৌবন্দর নির্মাণকার। চার বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের জুনে। তবে ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা জটিলতা থাকায় মেয়াদ বাড়ানো হয় দুইবার। এরইমধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৯০ ভাগ।

এক সময়ে বন্দরের জায়গা স্বল্পতার কারণে নদীর পাড়েই জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা হতো। বন্দরের কাজ সম্পূর্ণ শেষ না হলেও সিংহভাগ শেষ হওয়ায় বন্দরটিতে ইতোমধ্যেই আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। স্থানীয়দের আশা, এই নদী বন্দরটির কাজ শতভাগ শেষ হলে কমবে খরচ, বাড়বে কর্মসংস্থান।

নগরবাড়ি থেকে পণ্য আনা নেয়ার কাজে থাকা ট্রাকচালক মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্দরটা নির্মাণ শেষ হলে পণ্য আনা-নেওয়ায় গাড়ি চলাচল বাড়বে, আমাদের কাজ ও আয় বাড়বে।’

গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সরেজমিনে বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, একদিকে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা হচ্ছে। অন্যদিকে নির্মাণকাজও এগিয়ে চলেছে সমানতালে। শ্রমিকদের হাঁকডাকে মুখর নদীবন্দর। শ্রমিক বিভিন্ন জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করে ট্রাকে লোড দিচ্ছেন। আবার জাহাজ থেকে পণ্য মেশিনের সাহায্যে ট্রাকে লোড করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ঘাট শ্রমিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকদিন ধরে নদীবন্দরের নির্মাণকাজ চলছে। কিন্তু শেষ হয়েও যেন শেষ হচ্ছে না। আমরা চাই দ্রুত কাজ শেষ হোক। সরকার থেকে এখানকার মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ালে অনেক উপকার হবে।’

এদিকে দ্রুত কাজ শেষ করার আশ্বাস মিলেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এস এস রহমান গ্রুপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক বদরুল আমিন বলেন, ‘আমাদের কাজ ভালোভাবে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এর আগে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় দুইবার সময় বাড়ানো হয়েছিল। আশা করি আর সময় বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। ২০২৫ সালের জুনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’

নগরবাড়ি নদীবন্দরের বিআইডাব্লিউটিএ’র বন্দর কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াকিল বলেন, ‘চট্টগ্রামের মতো আধুনিক নৌ বন্দরের মতো পণ্য খালাসে এখানেও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে। এতে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বাড়বে কয়েকগুণ। বর্তমানে প্রতিদিন মালামাল খালাস করা যাচ্ছে ২ হাজার মেট্রিক টন। আর বন্দরের কাজ শেষ হলে পণ্য খালাস করা যাবে অন্তত ২০ হাজার মেট্রিক টন। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।’

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

Verified by MonsterInsights

পাবনার নগরবাড়ি আধুনিক নৌ বন্দর নির্মাণ শেষ পর্যায়ে; পন্য খালাসের গতি বাড়বে দশগুন

আপডেট সময় ০৮:০৩:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা জটিলতা কাটিয়ে শেষ পর্যায়ে পাবনার নগরবাড়ি নৌবন্দর নির্মাণ কাজ। যদিও মাঝখানে প্রকল্পটি শেষ করার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে দুইবার। তবে এরই মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে ৯০ ভাগ।

কর্তৃপক্ষের দাবি, সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে জাহাজ থেকে পণ্য খালাসে গতি বাড়বে অন্তত দশগুন। সেই সাথে সরকারের রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি বাড়বে কর্মসংস্থান।

উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়িতে একটি আধুনিক নদীবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেয় বিগত সরকার। এ অঞ্চলে কম খরচে সহজে নদীপথে বিপুল পরিমাণ সার, কয়লা, সিমেন্ট, পাথরসহ অন্যান্য পণ্য আনা নেয়া হয় নগরবাড়ি নৌ বন্দর দিয়ে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে ৫৬৩ কোটি টাকা ব্যয় ধরে ৩৬ একর জায়গার উপর যমুনা নদীর পাড়ে শুরু হয় নগরবাড়ি নৌবন্দর নির্মাণকার। চার বছর মেয়াদি প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের জুনে। তবে ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতাসহ নানা জটিলতা থাকায় মেয়াদ বাড়ানো হয় দুইবার। এরইমধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৯০ ভাগ।

এক সময়ে বন্দরের জায়গা স্বল্পতার কারণে নদীর পাড়েই জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা হতো। বন্দরের কাজ সম্পূর্ণ শেষ না হলেও সিংহভাগ শেষ হওয়ায় বন্দরটিতে ইতোমধ্যেই আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। স্থানীয়দের আশা, এই নদী বন্দরটির কাজ শতভাগ শেষ হলে কমবে খরচ, বাড়বে কর্মসংস্থান।

নগরবাড়ি থেকে পণ্য আনা নেয়ার কাজে থাকা ট্রাকচালক মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বন্দরটা নির্মাণ শেষ হলে পণ্য আনা-নেওয়ায় গাড়ি চলাচল বাড়বে, আমাদের কাজ ও আয় বাড়বে।’

গত শনিবার (২৫ জানুয়ারি) সরেজমিনে বন্দরে গিয়ে দেখা যায়, একদিকে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা হচ্ছে। অন্যদিকে নির্মাণকাজও এগিয়ে চলেছে সমানতালে। শ্রমিকদের হাঁকডাকে মুখর নদীবন্দর। শ্রমিক বিভিন্ন জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করে ট্রাকে লোড দিচ্ছেন। আবার জাহাজ থেকে পণ্য মেশিনের সাহায্যে ট্রাকে লোড করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ঘাট শ্রমিক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকদিন ধরে নদীবন্দরের নির্মাণকাজ চলছে। কিন্তু শেষ হয়েও যেন শেষ হচ্ছে না। আমরা চাই দ্রুত কাজ শেষ হোক। সরকার থেকে এখানকার মানুষের কর্মসংস্থান বাড়ালে অনেক উপকার হবে।’

এদিকে দ্রুত কাজ শেষ করার আশ্বাস মিলেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এস এস রহমান গ্রুপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক বদরুল আমিন বলেন, ‘আমাদের কাজ ভালোভাবে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এর আগে ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতায় দুইবার সময় বাড়ানো হয়েছিল। আশা করি আর সময় বাড়ানোর প্রয়োজন হবে না। ২০২৫ সালের জুনে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে।’

নগরবাড়ি নদীবন্দরের বিআইডাব্লিউটিএ’র বন্দর কর্মকর্তা আব্দুল ওয়াকিল বলেন, ‘চট্টগ্রামের মতো আধুনিক নৌ বন্দরের মতো পণ্য খালাসে এখানেও আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে। এতে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস বাড়বে কয়েকগুণ। বর্তমানে প্রতিদিন মালামাল খালাস করা যাচ্ছে ২ হাজার মেট্রিক টন। আর বন্দরের কাজ শেষ হলে পণ্য খালাস করা যাবে অন্তত ২০ হাজার মেট্রিক টন। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে।’