মৌলভীবাজারের বড়লেখায় অবৈধভাবে ট্রাক/ট্রাক্টরে বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমির মাটি কেটে ভিটা মালিক ও ইটভাটায় বিক্রি করছে। শত শত অবৈধ ট্রাক/ট্রাক্টরে মাটি পরিবহনে বিনষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। বড়লেখায় ফসলি জমির মাটি পাচার করছে অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীরা। এদের বেশিরভাগ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা
রাস্তাগুলোর বিভিন্ন স্থান ভেঙ্গে খানাখন্দে পরিণত হচ্ছে। পরিবহনকালে গাড়ি থেকে পড়া মাটিতে রাস্তা সয়লাব হচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতেই মারাত্মক দুর্ঘটনার আশংকা রয়েছে। অসাধু মাটি পাচারকারিরা শুধু দিনের বেলা নয়, সারারাত ধরে শত শত ট্রাক-ট্রাক্টরে অবৈধ মাটি পাচার কাজ চালানোয় বিকট শব্দে গ্রামবাসির ঘুমে বিঘ্ন ঘটে। মাটি পরিবহনে রাস্তার ক্ষতি ছাড়াও ধুলাবালি ও বিকট শব্দে এলাকাবাসি ও স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। বাধা-নিষেধ করলে উল্টো হুমকি ধমকি দেওয়া হয়। যানবাহনের বিকট শব্দ আর ধুলাবালিতে বিপর্যস্ত এলাকার পরিবেশ।
অভিযোগ রয়েছে, মাটি পাচারকারি চক্র পুলিশ প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বেপরোয়া ফসলি জমির মাটি পাচার করছে।
জানা গেছে, অবৈধভাবে ফসলী জমির মাটি কর্তন করে ট্রাক-ট্রাক্টরে পরিবহনের কারণে তালিমপুর, বাহারপুর, হাল্লা, বাঘমারা, আখালিমুড়াসহ কয়েকটি গ্রামের রাস্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বৃহস্পতিবার ইউএনওর কাছে ভুক্তভোগীরা লিখিত অভিযোগ করেছে।
উপজেলার তালিমপুর, বাহারপুর ও আখালিমুড়া গ্রামের ভুক্তভোগী কয়েছ আহমদ, রিয়াজ উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, তুতিউর রহমান, বাবুল বিশ্বাস প্রমুখের লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিনে জানা গেছে, তালিমপুর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সুনাম উদ্দিন চান্দই, যুবলীগ সদস্য আব্দুল হক, লাভলু আহমদ, খায়রুল ইসলাম, ময়নুল ইসলাম, আলাই মিয়া, কপিল উদ্দিন প্রমুখ জড়িত।
তালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এখলাছুর রহমান জানান, অবৈধ মাটি পাচারে তার ইউনিয়নের পাকা ও ইটসলিং রাস্তাঘাট মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। প্রতিদিনই ভুক্তভোগিরা অভিযোগ নিয়ে আসছেন। নিষেধ করেও তিনি তা বন্ধ করতে পারছেন না। মাটি পাচারকারিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে ইউএনওর কাছে এলাকাবাসির প্রেরিত লিখিত অভিযোগপত্রে তিনি সুপারিশ করেছেন।
ইউএনও তাহমিনা আক্তার জানান, পরিবেশ ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে ফসলি জমির (টপ সয়েল) মাটি কর্তন পরিবহন শাস্তিযোগ্য অপরাধ। চলিত মাসের প্রথম দিকে অবৈধ মাটি কর্তন ও পরিবহনের দায়ে তিন ব্যক্তিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত চালিয়ে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা জমিরমানা করা হয়েছে। ফসলি জমির মাটি কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত আছে।