আজ পবিত্র শবে বরাত, মুসলমানদের জন্য এক বিশেষ রাত। শবে বরাত বা ‘লাইলাতুল বারাআত’ হলো পাপ থেকে মুক্তি ও আল্লাহর রহমত লাভের এক অসীম সুযোগ। শাবান মাসের মধ্যবর্তী রাতে পালিত এই রাতটি মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্ববহ, যখন তারা তাওবা, ইবাদত, নামাজ, কুরআন তেলাওয়াত এবং দোয়ায় মশগুল হয়ে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমা ও মাগফিরাত লাভের আশায় থাকেন।
এ রাতে মুসলিমরা বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করেন, কুরআন তেলাওয়াত করেন, ইস্তেগফার পাঠ করেন ও বিভিন্ন প্রকারের ইবাদত ও দোয়া করেন। ‘শব’ শব্দটি ফারসি, যার মানে রাত এবং ‘বারায়াত’ শব্দের মানে নাজাত বা নিষ্কৃতি। শবে বরাতের রাতকে ‘লাইলাতুল বারাআত’ নামে অভিহিত করা হয়, যা মুসলমানদের জন্য মুক্তি লাভের ও জীবনের পাপ ক্ষমা চাওয়ার এক আশীর্বাদময় রাত হিসেবে পরিচিত।
এদিনে দেশের প্রতিটি মসজিদে ওয়াজ মাহফিল, জিকির-আসকারের আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। সরকারি ছুটির দিন হিসেবে আগামীকাল শনিবার শবে বরাতের উপলক্ষ্যে বিশেষ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। সংবাদপত্র, রেডিও ও টেলিভিশনে শবে বরাতের তাত্পর্য তুলে ধরে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে। সংবাদপত্রও আজ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।
শবে বরাতের ঐতিহাসিক গুরুত্ব এবং ইসলামের ইতিহাসে এর স্থান নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে শবে বরাতের বরকত ও ফজিলত সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস পাওয়া যায়। বিশেষত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সময় থেকে শবে বরাতের নামাজ ও ইবাদতের প্রচলন শুরু হয়। শবে বরাতের রাতকে রমজান মাসের প্রস্তুতির সময় হিসেবে পালন করা হয় এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাসে বেশি বেশি নফল রোজা রাখতেন।
এছাড়া, শবে বরাত পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন তুরস্ক, ইরান ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটি বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হয়। সৌদি আরব, আফ্রিকা, ইউরোপ ও আমেরিকাতে এই রাতটি বিশেষভাবে পালিত হয় না, তবে ইরানে এই রাতটি অত্যন্ত ধুমধামের সঙ্গে পালন করা হয়।