খুলনা জোনাল অফিসের সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার আব্দুর রশিদের নিকট সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ মৌজার যাঁচ কাজসহ অন্যান্য কাজ থাকায় অত্যান্ত সুকৌশলে সাধারণ ভূমি মালিকদের জমি বা সরকারি সম্পত্তি কোনো প্রকার আপীল বা কেস ছাড়াই বিভিন্ন নামে এবং জমির শ্রেণির পরিবর্তনসহ নানান কাজ টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে করিয়ে দিয়ে মোটা অংকের টাকার হাতিয়ে নিচ্ছে। এবারের পর্বে রয়েছে সেই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার জেলার মুন্সিগঞ্জ মৌজায়। আব্দুর রশিদ সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকর্তা হয়ে আলাউদ্দিন প্রদ্বীপ দেখিয়ে মুন্সিগঞ্জ মৌজার সাধারণ ভূমি মালিকদের জমি কখনো নয় আবার কখনো ছয় এই খেলা দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার মুন্সিগঞ্জ মৌজায় ডিপি ৭৬০ খতিয়ানে হাল ৭১৫৭ দাগের ৫০ শতক ভূমি ছিল বাড়ি শ্রেণির। কৌশলগতভাবে সরকারি রাজত্ব ফাঁকি দেওয়ার লক্ষে ভূমি মালিক বারব আলীর পুত্র মুজিবরের নিকট হতে অর্থের বিনিময়ে কোনো কেস ছাড়াই টেম্পারিং এর মাধ্যম বিলান শ্রেণিতে রুপান্তর করেন।
ডিপি ৭৬৬ খতিয়ানে হাল ৫৯১৫ দাগটি সম্পূর্ণ টেম্পারিং এর মাধ্যম রেকর্ডিয় মালিকের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তার নামীয় ডিপি খতিয়ানে ৫০ শতক ভূমি অন্তর্ভুক্ত করিয়ে দেয়, যা ঐ খতিয়ানে ২টি হাল দাগ দিয়ে মোবালক করা ছিল। টেম্পারিং এর মাধ্যম ৫৯১৫ দাগের ৫০ শতক ভূমি রেকর্ড করিয়ে দেয়।
ডিপি ৭৭৩ নং খতিয়ানে হাল দাগ ৪৩৬৬ দাগটি কোনো কেস ছাড়াই টেম্পারিং এর মাধ্যম অর্থের বিনিময়ে ডিপি খতিয়ানে অন্তর্ভুক্ত করিয়ে দেয়।
ডিপি ৭৮৪ নং খতিয়ানে নীলিমা রানী মন্ডলকে কোনো কেস ছাড়াই টেম্পারিং এর মাধ্যম মোটা অংকের টাকা নিয়ে নীলীমার নাম ৫ নং ক্রমিকে অন্তর্ভুক্ত করে।
ডিপি ৮২২ নং খতিয়ানে হাল ২১৫৩ দাগটি কফিল উদ্দিনের পুত্র ছিফাত উল্লাহ গাজীর নিকট হতে ঘুষের টাকা নিয়ে অবৈধভাবে টেম্পারিং এর মাধ্যম তার নামীয় ডিপি খতিয়ান ০৮ শতক ভূমি রেকর্ড প্রস্তুত করে।
ডিপি ৮৫৬ নং খতিয়ানে জালাল আহমেদের পুত্র আশেক আহমদের নিকট হতে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে কোনো কেস ছাড়াই টেম্পারিং এর মাধ্যম ৮৫৬ নং ডিপিতে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে।
ডিপি ৮৫৯ নং খতিয়ানে হাল দাগ ৭১১৮টি আহম্মদ হোসেন পুত্র জাকির হোসেনের নিকট থেকে টাকার বিনিময়ে টেম্পারিং এর মাধ্যম ১১ শতক ভূমি তার নামীয় ডিপি খতিয়ানে রেকর্ড করিয়ে দেয়।
আব্দুর রশিদ ও সুজিত রায়ের এমন অপকর্মের মাধ্যমে অবৈধ পন্থায় হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা, গড়ছেন টাকার পাহাড়। যেন দেখার কেউ নেই!
আরো অধিকতর তথ্যানুসন্ধানে বের হয়ে আসবে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
ঐ মৌজার সাধারণ ভূমি মালিকগণকে এই খেলা দেখানোর সহযোগিতায় রয়েছে খুলনা জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের বড় বাবু সুজিত রায় পিওন আব্দুর রহিম
ঐ মৌজার সাধারণ ভূমি মালিকগণকে এই খেলা দেখানোর সহযোগিতায় রয়েছে খুলনা জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের বড় বাবু সুজিত রায় পিওন আব্দুর রহিম এবং অফিসার আব্দুর রশিদের ব্যক্তিগত বহিরাগত দালাল আব্দুস সামাদ।
উল্লেখ্য, কয়েক বছর আগে আব্দুর রশিদ শ্যামনগর উপজেলার সেটেলমেন্ট অফিসে “ড্রাসম্যান” হিসেবে চাকুরীকালিন সময়ে সে বিভিন্ন ভূমি মালিকদের দাম্ভিকতার সাথে বলতেন, “গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা তার নিকট আত্মীয়। তার বিষয় কোনো কিছু করেও লাভ নেই। অধিদপ্তরে তার নিজস্ব লোক আছে।”
ঐ অফিসের বড় বাবু খ্যাত সুজিত রায়ের বাড়ি সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় হওয়ায়, খুলনা ডুমুরিয়া উপজেলা নিবাসী সাবেক ভূমি মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ চন্দ্রকে নিজের নিকট আত্মীয় বলে পরিচয় দিতেন।
জানা যায়, কর্মকর্তা আব্দুর রশিদের ঘুষ দুর্নীতি ও টেম্পারিংয়ের বিষয়ে নানান অভিযোগ দুদকসহ একাধিক দপ্তরে তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এই খেলার শেষ কোথায়? সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করলে বের হয়ে আসবে থলের বিডালটি এমনটি দাবী মুন্সিগঞ্জ মৌজার ভূমি মালিকদের।
খুলনা জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস হতে দূরবর্তী সাধারণ ভূমি মালিকগণ একদিকে পথের দুরত্ব, অপরদিকে নানান হয়রানি ও টেম্পারিং নিয়ে আতঙ্কিত।
আগামী পর্বে প্রকাশিত হবে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। খুলনা জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসের আব্দুর রশিদ ও বড় বাবু সুজিত রায়ের অবৈধ সম্পদের অজানা অধ্যায় উঠে আসবে পরবর্তী প্রতিবেদনে। বিস্তারিত জানতে চোখ রাখুন পরবর্তী পর্বে!