ময়মনসিংহের নান্দাইলে মুক্তিপণ দাবিতে শিশু তাসিনকে (৭) অপহরণ করে হত্যার পর টয়লেটের স্লাবে মরদেহ গুমের ঘটনায় শহীদ মিয়া (৩৪) নামে এক যুবককে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। এ ঘটনায় খালাস পেয়েছে অভিযুক্তের বাবা তাহের উদ্দিন ও মা তহুরা খাতুন নামের অপর দুই আসামি।
দন্ডপ্রাপ্ত শহীদ মিয়া জেলার নান্দাইল উপজেলার মুশুল্লী গ্রামের তাহের উদ্দিন ও তহুরা বেগম দম্পতির ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ময়মনসিংহের ৫ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আলী মনসুর আসামী শহীদ মিয়ার উপস্থিতে এই রায় ঘোষনা করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী রেজাউল করিম রাজীব আসামি শহিদ মিয়ার আমৃত্ব কারাদন্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জেলার নান্দাইলের মুল্লী গ্রামের মৃত আ. হামিদের ছেলে আব্দুল কাইয়ুমের ১১ বছরের কন্যা মোছা. মিতু আক্তার ও সাড়ে সাত বছরের তাসিন নামে এক ছেলে ছিল। মিতু পঞ্চম শ্রেণীতে এবং তাসিন প্রথম শ্রেণিতে পড়তো। ১১ বছর সৌদি আরবে প্রবাসী থাকাকালে কাইয়ুম দুই বছর পর পর বাড়িতে আসেন। বিবাদী শহীদ মিয়া ও তার পরিবারের সাথে বসত বাড়ির সীমানা ও গাছপালা নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১৬ সালের ১৫ আগস্ট প্রবাসীর শিশুপুত্র তাসিনকে অপহরণ করে। পরে মুক্তিপণ দাবি করে শহীদ। মুক্তিপণ না পেয়ে তাসিনকে শ্বাসরুদ্ধ করে ও ঘাড় ভেঙে হত্যা করে টয়লেটের স্লাবের ভিতরে মরদেহ গুম করে রাখে।
এ ঘটনায় শিশু তাসিনের মা পলিনা খাতুন বাদী হয়ে নান্দাইল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলায় র্দীঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ১ মার্চ চার্জ গঠন হলে মোট ১৪ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার এই রায় ঘোষনা করা হয়।
মামলার রায়ে অভিযুক্ত শহীদ মিয়াকে দন্ডবিধির ৩৬৪ ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড, ৩০২ ধারায় আমৃত্যু কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং ২০১ ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয়।