ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ ৪৭ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ মামলার বাকি আসামিদের মধ্যে ২৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলাম ও বিচারপতি হামিদুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি দাবি করেন, বিচারিক আদালতের রায় ছিল প্রতিহিংসাপরায়ণ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে খুশি করতে ২০১৯ সালে পাবনা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত এই রায় দিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, হাইকোর্টে শুনানি শেষে সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনযোগে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। ওই সময়ে বিএনপির নেতা জাকারিয়া পিন্টুসহ অন্যান্য আসামিরা ঈশ্বরদী স্টেশন এলাকায় শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ট্রেনে গুলি ও বোমাবর্ষণ করেন। এ ঘটনায় ঈশ্বরদী জিআরপি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে সিআইডি তদন্ত শুরু করে এবং ১৯৯৭ সালে ৫২ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ৩ জুলাই বিচারিক আদালত ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১৩ জনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে। এরপর মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে পাঠানো হয় এবং আসামিরা খালাস চেয়ে আপিল করেন। হাইকোর্টে আপিলের শুনানি ৩০ জানুয়ারি শেষ হয়ে ৫ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়।
আদালতের রায়ের পর, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, “এই রায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ ছিল, এবং এটি শেখ হাসিনাকে খুশি করতে আদালত দেওয়া হয়েছিল।”