অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে
নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় প্রতিটি পণ্যের দামই বাড়ছে। বাজার ক্রমেই অস্থির হয়ে উঠছে। অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর তেমন কোনো ভমিকাই চোখে পড়ে না। বিগত কয়েক বছরে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। পলাতক শেখ হাসিনা সরকারের আমলে পণ্যমূল্য কমাতে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নিতেও দেখা যায়নি। যার ফলে দেশের সাধারণ মানুষের জীবন ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছিলো।
বাজারের সেই দুঃসহ অবস্থা থেকে কীভাবে ক্রেতা- ভোক্তাকে স্বস্তি দেওয়া যায় তার উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নিতে যাচ্ছে একগুচ্ছ পদক্ষেপ। এরপরেও নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে সর্বস্তরের মানুষের হতাশা আর ক্ষোভের যেন অন্ত নেই।
অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারি দেওয়া হলেও বাজারে গত সপ্তাহেও চালের দাম বাড়তির দিকে ছিল। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের দাম দুই থেকে ছয় টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধিকে স্বাভাবিক বলা যায় না। চালের পাশাপাশি বেড়েছে ব্রয়লার মরগি ও ফার্মের ডিমের দামও। কিছুটা স্বস্তি আছে সবজির বাজারে। বন্যার ধকল কেটে যাওয়ার পর সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। চালের দাম বাড়লে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন গরিব ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর বড় বড় সংস্কারের আওয়াজ উঠেছে। এসব সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা কেউ অস্বীকার করছে না। কিন্তু নিত্যপণ্যের দাম সীমিত আয়ের মানুষের নাগালে না রাখতে পারলে কোনো সংস্কারই কাজে আসবে না।
দর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে বাজার নিয়ন্ত্রণে চোখে পড়ার মতো কোনো পদক্ষেপ সরকার নেয়নি। বাজার ব্যবস্থাপনা চলছে আগের মতোই, দুর্বল বাজার ব্যবস্থাপনা। ফলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিচ্ছিন্ন ও লোক দেখানো কর্মসূচি নয়, বাজার নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে কার্যকর ও টেকসই পদক্ষেপ। গরিব ও সীমিত আয়ের মানুষরা যেনো চাল, ডাল, আটা ও ভোজ্যতেলের মতো নিত্যপণ্যগুলো সাশ্রয়ী দামে কিনতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি বাজার সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কার্যক্রম বাড়াতে হবে। অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি রোধ করতে হবে।