ঢাকা ০১:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
এই মাত্র পাওয়াঃ
চাটমোহর মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ধোবাউড়ায় ১৩৮ বোতল ভারতীয় মদসহ প্রাইভেটকার জব্দ কমলগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর দোয়া ও ইফতার মাহফিল নতুন ফন্দি অভিযুক্ত বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা রতনের: সংবাদ সম্মেলন ডেকে লাপাত্তা তার পরিবার ২৯ বিজিবির বিশেষ অভিযানে মাদকদ্রব্য সহকারে আটক ১ কুলাউড়ায় ঝিমাই চা বাগানের স্টোর ক্লার্ক কর্মকর্তার একাধিকবার ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে দুই ট্রেনের সংঘর্ষ, ২ বগি লাইনচ্যুত রায়পুরে মন্দিরের প্রতিমা ভাংচুরের ঘটনায় যুবক কারাগারে পাইকগাছায় পূর্ব শত্রুতার জেরে বিএনপির নেতার হাতে যুবদল কর্মীকে মারপিটের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন: থানায় মামলা  নান্দাইলে নদীর তলদেশের জ্বালানি সংগ্রহের প্রতিযোগীতা গ্রামবাসীর কালুরঘাট থেকে নতুন আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে: মোস্তাক আহমদ খান বাজিতপুরে মৎস্যজীবী দলের ইফতার মাহফিলে হামলার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

নতুন ফন্দি অভিযুক্ত বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা রতনের: সংবাদ সম্মেলন ডেকে লাপাত্তা তার পরিবার

ধর্ষণ চেষ্টাকারী হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রতন হোসেন

স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম রতন (২৫) নিজেকে বাঁচাতে নতুন করে ফন্দি আঁটতে শুরু করেছেন। অন্য একজন মেয়ের সাথে তার মেসেজের স্ক্রিনশট ফেসবুকে শেয়ার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উল্টো ভুক্তভোগী মেয়েটির পরিবারকে দুষছেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রদল নেতার পরিবারের পাশে থেকে তাকে বাঁচাতে সহযোগিতা করছেন সিরাজুল ইসলাম নামের এক বিএনপি নেতা। অন্যদিকে, নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে লাপাত্তা অভিযুক্তের বাবা তোজাম্মেল হোসেন তজু।

অভিযুক্ত রতন পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সম্প্রতি তিনি বহিষ্কৃত হয়েছে। তিনি ওই ইউনিয়নের তেবাড়িয়া মোল্লাপাড়া গ্রামের তোজাম্মেল হোসেন তজুর ছেলে। তার সহযোগী একই গ্রামের মহসিন হোসেনের ছেলে মামুন হোসেন (১৮)। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।

মামলা থেকে জানা গেছে, পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামের নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাতায়াতের পথে রতন ও মামুনসহ বখাটেরা বিরক্ত করতো। রতন মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে নানাভাবে উত্যক্ত করতো। বাড়ির মোবাইল ফোন নাম্বার জোগাড় করে দিনে রাতে ফোন করে উত্যক্ত করতো। কিন্তু মেয়েটি রাজি না হওয়ায় গত ১১ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকজনকে নিয়ে স্কুলছাত্রীর বাড়িতে যায় বখাটে রতন ও মামুন। তারা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে স্কুলছাত্রীকে মুখ চেপে ধরে বাহিরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা উপস্থিত হলে অভিযুক্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় চাটমোহর থানায় গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা। এদিকে ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও অভিযুক্ত ২ জনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

অপরদিকে, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে চাটমোহরের অন্তত ১০ জন সাংবাদিককে ফোন করে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রতনের বাবা জানান, শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০ টায় তার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সবাইকে উপস্থিত হওয়ার আহবান জানান তিনি। কিন্তু ওইদিন তার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বাড়িতে তালা ঝুলছে। তজুর মোবাইলে কল দেওয়া হলে তার নাম্বারটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

অনেক সময় অপেক্ষার পর পাওয়া গেল রতনের মা বাছিরন বেগমকে। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকালে উঠেই ছাওয়ালের বাপ কোনে জিনি গ্যাছে। কয়া গেল আমি ঝামেলায় আছি, পরে সুম্বাদ সম্মেলন হবি। ভাইস্তে শুভক কইছিলেম সকালেই যে সুম্বাদিকগোরে মানা কইরে দে। এহন ও কি করছে জানি না। মেয়ের বাপের কাছে ছেলের জন্য বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু মেয়ের বাপ রাজি হয় নাই বলে জানান রতনের মা।

প্রতিবেশি শুভর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে বলেছিল নিষেধ করতে। কিন্তু আমি ফোন করে সবাইকে নিষেধ করতে পারিনি।

পরে প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন বোন আর এক ভাই। অভিযুক্ত রতন সবার ছোট। রতন ছেলে হিসেবে ভালো নয়, খুবই বেয়ারা বলেই বেশিরভাগ মানুষ জানায়। মেয়েটিকে তুলে আনতে গেছিল এটা সত্য বলে জানায় স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, রতনের বাবা তজু মাদক বিক্রির সাথে জড়িত। এর আগে পুলিশ কয়েকবার তাকে ধরার জন্য তাড়িয়েছে। রতন নিজেও মাদকসেবী।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমার মেয়েকে উত্যক্ত করতো। মেয়ে ঘটনাটা আমাকে জানানোর পর আমি বিভিন্নজনকে দিয়ে ছেলেটিকে নিষেধ করাই এরকম না করার জন্য। রতনের চাচাতো ভাই হরিপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি প্রার্থী পিয়াস তাকে দিয়েও নিষেধ করাই যাতে মেয়েকে উত্যক্ত না করে। তারপর রতন হুমকি দিয়েছিল মেয়েকে যেন আটকে রাখি, মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে, আমাকে রাস্তাঘাটে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, গত জানুয়ারি মাসে ছেলের বাপ বিভিন্ন মাধ্যমে আমার কাছে মেয়ের সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। পরে আমি রতন নেশাগ্রস্থ হওয়ায় প্রস্তাব ফিরিয়ে দেই। মেয়েকে আরো লেখাপড়া করাতে চাই।

তিনি আরো বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা পিয়াসের মামা হলেন বিএনপি নেতা সিরাজ। তিনি তাদের পক্ষে মামলা ডিল করছেন। যে কারণে পুলিশ এখনো আসামি ধরছে না। এখন উল্টো আমাদের উপর হুমকি আসছে। নানারকম চাপ আসছে আপোষ করার। আর রতন যে মোবাইলের স্ক্রিনশট দেখাচ্ছে ওটা মিথ্যা। ওই মোবাইল নাম্বারও আমার কখনো ছিল না। সে বাঁচার জন্য আমার মেয়ের ঘাড়ে দোষ চাপানোর ফন্দি আঁটছে।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী জানায়, ‌‌’৩/৪ মাস আগে থেকে আমাদের বাড়ির মোবাইলে কল দিতো রতন। তার বন্ধু মামুন আমার ক্লাসমেট ছিল। মামুনের কাছে আমার নাম্বার ছিল। সেই নাম্বারটা তাকে দিয়েছিল। তারপর কল করতো। ফোনে প্রস্তাব দিতো। স্কুলে যাওযা আসার পথে প্রস্তাব দিতো। রাজি হইনি, কারণ আমার বান্ধবীরা বলেছিল ছেলেটা ভালো না, নেশা করে। আর আমারও ইচ্ছা লেখাপড়া করার। তারপর অতিরিক্ত জ্বালানোর পর আমি বাবা মাকে জানাই।’

মেয়েটি আরো জানায়, ‘রতন এখন যে মেসেজের স্ক্রিনশট দেখাচ্ছে সেরকম কখনোই তার সাথে আমার মেসেজ আদান প্রদান হয় নাই। আর যে নাম্বারে মেসেজ আদান প্রদান দেখাচ্ছে সেটা আমার সাথে নয়, ওই মোবাইল নাম্বারও আমাদের নয়। অন্য কোনো মেয়ের সাথে তার মেসেজ এখন আমার উপর চাপিয়ে নিজে বাঁচার চেষ্টা করছে।’

এ বিষয়ে হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা সম্পূর্ণ বাজে, বানোয়াট কথা। আমি বরং ছেলেকে স্যারেন্ডার করানোর জন্য তার বাপকে দুইবার বলেছি। ছেলের বাপ আবার মামলাবাজ লোক। তার বিরুদ্ধে এর আগে ৫টা মার্ডার মামলা ছিল। আমার কথা তিনি আমলে নিচ্ছেন না। আমি মামলার কোনো তদবির করছি না। যেদিন মামলা হয় সেদিনও ওসি সাহেবকে বলেছি আপনি যেকোনোভাবে ব্যবস্থা নেন। কারণ মেয়ের বাবা আওয়ামী লীগ করে, আমি করি বিএনপি। সে কি বললো না বললো তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘আসামি পলাতক রয়েছে। এলাকার বাইরে গা ঢাকা দিয়েছে। তার মোবাইল নাম্বারও বন্ধ। কতদিন পালিয়ে থাকবে? ধরা পড়তেই হবে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দুই আসামিকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। মামলার বিষয়ে পুলিশের উপর কারো কোনো চাপ নেই।’

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

চাটমোহর মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত

Verified by MonsterInsights

নতুন ফন্দি অভিযুক্ত বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা রতনের: সংবাদ সম্মেলন ডেকে লাপাত্তা তার পরিবার

আপডেট সময় ১০:২৭:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণচেষ্টা মামলার আসামি বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম রতন (২৫) নিজেকে বাঁচাতে নতুন করে ফন্দি আঁটতে শুরু করেছেন। অন্য একজন মেয়ের সাথে তার মেসেজের স্ক্রিনশট ফেসবুকে শেয়ার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে উল্টো ভুক্তভোগী মেয়েটির পরিবারকে দুষছেন তিনি।

অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রদল নেতার পরিবারের পাশে থেকে তাকে বাঁচাতে সহযোগিতা করছেন সিরাজুল ইসলাম নামের এক বিএনপি নেতা। অন্যদিকে, নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন ডেকে লাপাত্তা অভিযুক্তের বাবা তোজাম্মেল হোসেন তজু।

অভিযুক্ত রতন পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। সম্প্রতি তিনি বহিষ্কৃত হয়েছে। তিনি ওই ইউনিয়নের তেবাড়িয়া মোল্লাপাড়া গ্রামের তোজাম্মেল হোসেন তজুর ছেলে। তার সহযোগী একই গ্রামের মহসিন হোসেনের ছেলে মামুন হোসেন (১৮)। ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।

মামলা থেকে জানা গেছে, পাবনার চাটমোহর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের শ্রীধরপুর গ্রামের নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে দীর্ঘদিন ধরে স্কুলে যাতায়াতের পথে রতন ও মামুনসহ বখাটেরা বিরক্ত করতো। রতন মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে নানাভাবে উত্যক্ত করতো। বাড়ির মোবাইল ফোন নাম্বার জোগাড় করে দিনে রাতে ফোন করে উত্যক্ত করতো। কিন্তু মেয়েটি রাজি না হওয়ায় গত ১১ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে কয়েকজনকে নিয়ে স্কুলছাত্রীর বাড়িতে যায় বখাটে রতন ও মামুন। তারা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে স্কুলছাত্রীকে মুখ চেপে ধরে বাহিরে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ সময় তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা উপস্থিত হলে অভিযুক্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় চাটমোহর থানায় গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা। এদিকে ঘটনার ৪ দিন অতিবাহিত হলেও অভিযুক্ত ২ জনকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

অপরদিকে, গত বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে চাটমোহরের অন্তত ১০ জন সাংবাদিককে ফোন করে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা রতনের বাবা জানান, শুক্রবার (১৪ মার্চ) সকাল ১০ টায় তার বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সবাইকে উপস্থিত হওয়ার আহবান জানান তিনি। কিন্তু ওইদিন তার বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। বাড়িতে তালা ঝুলছে। তজুর মোবাইলে কল দেওয়া হলে তার নাম্বারটিও বন্ধ পাওয়া যায়।

অনেক সময় অপেক্ষার পর পাওয়া গেল রতনের মা বাছিরন বেগমকে। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সকালে উঠেই ছাওয়ালের বাপ কোনে জিনি গ্যাছে। কয়া গেল আমি ঝামেলায় আছি, পরে সুম্বাদ সম্মেলন হবি। ভাইস্তে শুভক কইছিলেম সকালেই যে সুম্বাদিকগোরে মানা কইরে দে। এহন ও কি করছে জানি না। মেয়ের বাপের কাছে ছেলের জন্য বিয়ের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু মেয়ের বাপ রাজি হয় নাই বলে জানান রতনের মা।

প্রতিবেশি শুভর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাকে বলেছিল নিষেধ করতে। কিন্তু আমি ফোন করে সবাইকে নিষেধ করতে পারিনি।

পরে প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন বোন আর এক ভাই। অভিযুক্ত রতন সবার ছোট। রতন ছেলে হিসেবে ভালো নয়, খুবই বেয়ারা বলেই বেশিরভাগ মানুষ জানায়। মেয়েটিকে তুলে আনতে গেছিল এটা সত্য বলে জানায় স্থানীয়রা। অভিযোগ রয়েছে, রতনের বাবা তজু মাদক বিক্রির সাথে জড়িত। এর আগে পুলিশ কয়েকবার তাকে ধরার জন্য তাড়িয়েছে। রতন নিজেও মাদকসেবী।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর বাবা বলেন, ৫ আগস্টের পর থেকে আমার মেয়েকে উত্যক্ত করতো। মেয়ে ঘটনাটা আমাকে জানানোর পর আমি বিভিন্নজনকে দিয়ে ছেলেটিকে নিষেধ করাই এরকম না করার জন্য। রতনের চাচাতো ভাই হরিপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি প্রার্থী পিয়াস তাকে দিয়েও নিষেধ করাই যাতে মেয়েকে উত্যক্ত না করে। তারপর রতন হুমকি দিয়েছিল মেয়েকে যেন আটকে রাখি, মেয়েকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে, আমাকে রাস্তাঘাটে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, গত জানুয়ারি মাসে ছেলের বাপ বিভিন্ন মাধ্যমে আমার কাছে মেয়ের সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। পরে আমি রতন নেশাগ্রস্থ হওয়ায় প্রস্তাব ফিরিয়ে দেই। মেয়েকে আরো লেখাপড়া করাতে চাই।

তিনি আরো বলেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা পিয়াসের মামা হলেন বিএনপি নেতা সিরাজ। তিনি তাদের পক্ষে মামলা ডিল করছেন। যে কারণে পুলিশ এখনো আসামি ধরছে না। এখন উল্টো আমাদের উপর হুমকি আসছে। নানারকম চাপ আসছে আপোষ করার। আর রতন যে মোবাইলের স্ক্রিনশট দেখাচ্ছে ওটা মিথ্যা। ওই মোবাইল নাম্বারও আমার কখনো ছিল না। সে বাঁচার জন্য আমার মেয়ের ঘাড়ে দোষ চাপানোর ফন্দি আঁটছে।

ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী জানায়, ‌‌’৩/৪ মাস আগে থেকে আমাদের বাড়ির মোবাইলে কল দিতো রতন। তার বন্ধু মামুন আমার ক্লাসমেট ছিল। মামুনের কাছে আমার নাম্বার ছিল। সেই নাম্বারটা তাকে দিয়েছিল। তারপর কল করতো। ফোনে প্রস্তাব দিতো। স্কুলে যাওযা আসার পথে প্রস্তাব দিতো। রাজি হইনি, কারণ আমার বান্ধবীরা বলেছিল ছেলেটা ভালো না, নেশা করে। আর আমারও ইচ্ছা লেখাপড়া করার। তারপর অতিরিক্ত জ্বালানোর পর আমি বাবা মাকে জানাই।’

মেয়েটি আরো জানায়, ‘রতন এখন যে মেসেজের স্ক্রিনশট দেখাচ্ছে সেরকম কখনোই তার সাথে আমার মেসেজ আদান প্রদান হয় নাই। আর যে নাম্বারে মেসেজ আদান প্রদান দেখাচ্ছে সেটা আমার সাথে নয়, ওই মোবাইল নাম্বারও আমাদের নয়। অন্য কোনো মেয়ের সাথে তার মেসেজ এখন আমার উপর চাপিয়ে নিজে বাঁচার চেষ্টা করছে।’

এ বিষয়ে হরিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা সম্পূর্ণ বাজে, বানোয়াট কথা। আমি বরং ছেলেকে স্যারেন্ডার করানোর জন্য তার বাপকে দুইবার বলেছি। ছেলের বাপ আবার মামলাবাজ লোক। তার বিরুদ্ধে এর আগে ৫টা মার্ডার মামলা ছিল। আমার কথা তিনি আমলে নিচ্ছেন না। আমি মামলার কোনো তদবির করছি না। যেদিন মামলা হয় সেদিনও ওসি সাহেবকে বলেছি আপনি যেকোনোভাবে ব্যবস্থা নেন। কারণ মেয়ের বাবা আওয়ামী লীগ করে, আমি করি বিএনপি। সে কি বললো না বললো তাতে আমার কিছু যায় আসে না।’

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘আসামি পলাতক রয়েছে। এলাকার বাইরে গা ঢাকা দিয়েছে। তার মোবাইল নাম্বারও বন্ধ। কতদিন পালিয়ে থাকবে? ধরা পড়তেই হবে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দুই আসামিকে ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। মামলার বিষয়ে পুলিশের উপর কারো কোনো চাপ নেই।’